পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S史8 প্রৰণসী ১638 নিৰ্ম্মল তাহার নিকটে আসিয়া তাঙ্গর একখানা হাত . ধরিয়া ] ভাই নরেন, তোমার দাদা এখন দেশে নাইবা ফিরে এলেন, তোমার আর এক দাদা যে দেশেই আছেন এ কথাটা যেন তুমি ভুলো না। আর সেই জোরেই আমি তোমাকে অনুরোধ করছি তুমি এসব ব্যাপার নিয়ে অনৰ্থক উদ্বিগ্ন হয়ে না । যাও, একটু বেড়িয়ে এস। [ নরেন চলিয় গেল ] ইন্দিরা । [ এতক্ষণ অবাক হইয়া চাহিয়া ছিল ] মনে হচ্ছে যেন স্বপ্ন দেখছি, এখনই ঘুম ভেঙে গেলে দেখব সমস্তই :স্বপ্ন, কিছুই সত্যি নয়। - নিৰ্ম্মল । নিশ্চয়ই তাই দেখবে ইন্দু। মানুষের জীবনে দুঃসময় আসে, কিন্তু তা কেটে গেলে স্বপ্নের মতই মনে হয় । কোনদিন ধে এমন সময় এসেছিল তা আর মনেও থাকে না । মোহিনী ঘরে ঢুকিলেন তাহার পরনে বৈধব্যের বেশ । মুখে ঘনীভূত বৈরাগ্যের ছায় । ] মোহিনী । বাবা নিৰ্ম্মল, এখন আমাদের আত্মীয়বন্ধু বলতে আর ত বেশী কেউ নেই, তোমাকেই এর একটা বিলিব্যবস্থা ক'রে দিতে হবে । [ হাতের কতকগুলি কাগজপত্র নিৰ্ম্মলকে প্রদান করিয়া ] এই তার ঋণের পরিমাণ ও সেই সংক্রান্ত কাগজপত্র। এ বাড়ীখানাও বাধা আছে । আমি বলছি তুমি একটু চেষ্টাচরিত্র করে বাড়ীটা বিক্রী করবার ব্যবস্থা ক'রে দাও। তার থেকেই ধারটা শোধ হয়ে যাক । আমরা ছোটখাট অল্প ভাড়ার একটা বাড়ীতে উঠে যাই । ২ - নিষ্ঠুগ । মা, আপনার এই মনের অবস্থায় যে এসব কথা নিয়ে আপনাকে মাথা ঘামাতে হচ্ছে, এ আমি সক্টতে পারি নে। ওসব কাগজপত্র আমাকে দিন, আমি যা-হয় একটা ব্যবস্থা করব । মোহিনী । মনের আবার কি অবস্থা বাবা, আমার ষ হবার তা হয়ে গেছে, এখন আর আমি বেশী দেরি করতে চাই নে। যত শীগগির পারা যায় বাড়ীটা বিক্ৰী ক'রে দাও। অনর্থক এমনি ষ্টাইলে আরও কিছুদিন থাকলে হয়ত শেষে ওঁকে ঋণমুক্ত করবার স্থযোগটুকুও হারাব। নিৰ্ম্মল। আরও অন্ত উপায় কিছু আছে কি না আমাকে ভাবতে সময় দিন । মোহিনী । [ ক্ষীণ হাসিয়া ] সে ভাবনার ফল কি হবে তাও আমার অজানা নেই বাবা, কিন্তু তোমার কাছেও হাত পেতে আমি কিছু নিতে পারব না । একথা শুনে দুঃখ ক’রে না বাপ অামার, কিন্তু আমি প্রডিঞ্জ করেছি একমাত্র ঈশ্বরের কাছে ছাড় আর কারও কাছে ঋণী शोंख्द न! ॥ নিৰ্ম্মল । এ প্রতিজ্ঞ যদি ক’রে থাকেন তাহলে আমি বলব এ প্রতিজ্ঞায় আপনার দম্ভ রয়েছে মা। শুধু টাকার ঋণ ছাড়া আর কোন রকম ঋণ কি কখনও আপনার চোখে পড়ে নি ?—যেখানে হৃদয়ের শ্রদ্ধায়, সেবার ব্যাকুলতায় এক জন আর এক জনকে দুশ্বেদা ঋণপাশে বাধছে ? মোহিনী । পড়েছে বইকি নিৰ্ম্মল, আর সেই জোরেই ত তোমার উপর এত জোর । কিন্তু আমি তোমাকে মিনতি করছি তুমি এ বাড়ীটা বিক্রীর একটা ব্যবস্থা ক’রে দাও । এ বাড়ী তিনি নিজে উপার্জনে করেছিলেন, এই দিয়েই র্তার ঋণ শোধ হোক। আর অন্ত কোন ব্যবস্থাতেই তিনি উপর থেকে তৃপ্তি পাবেন না এ আমি বেশ বুঝতে পারছি। নিৰ্ম্মল । বেশ তাই করব ম! । কি করবেন ? মোহিনী । পড়া ছেড়ে দিয়ে সে একট চাকরি-বাকরির চেষ্ট করুক। এখন থেকে তার উপরেই সব নির্ভর করবে। কিন্তু নরেনের ব্যবস্থা নিৰ্ম্মল। এ কথা কেমন ক’রে বলছেন বুঝতে পারছি নে । মোহিনী । অনেক ভেবেই বলেছি নিৰ্ম্মল । বেশী উচ্চাশা করবার ঝোক আর আমার নেই। রমেনকে ওঁর অনিচ্ছা সত্ত্বেও আমিই বেশী আশা ক'রে ওদেশে , পাঠিয়েছিলুম। তা ছাড়া আর একটা কথা কি জান বাব, আমাদের চাল এত বেড়ে গেছে যে যতই উপাজ্জন কর, শাস্তি নেই। ওঁর কথা একবার ভেবে দেখ দিকি, অত টাকা মাইনে পেতেন অথচ না না, আর আমার অতয় কাজ নেই, নরেন ছোটখাট যা চাকরি পাবে ষ্টাইল কমিয়ে দিয়ে তাতেই সংসার চালিয়ে নিতে হবে । আমি এখন যাই, সন্ধ্যে হয়ে এল, সন্ধ্যে দেখাতে হবে। তুমি রাত্রিতে অন্ধকারে নীচে ষেও না নিৰ্ম্মল। চাকরকে বলবে সিড়িতে আলোটা দেখাবে। ওখানকার ইলেকটিক আলোটা খারাপ হয়ে গেছে । মােহিনী চলিয়া গেলেন নিৰ্ম্মল । সমস্ত ক্রমেই জটিল হয়ে দাড়াচ্ছে ইন্দু। কিছুই ঠিক বুঝতে পারছি নে । তবে এইটুকু বুঝতে পারছি তোমাদের এই দুঃসময়ে আমি কোন কাজেই এলুম না । মা আজ স্পষ্টই এক রকম জানিয়ে গেলেন সে কথা । ইন্দির। আপনি অত ভাবছেন কেন, ছোটদা আছে, আমি আছি, সংসার এক রকম করে চলে যাবে। নির্বল। তুমি । তুমি কি করবে ? তুমিও কি চাকরি করবে নাকি ? ইন্দির । প্রয়োজন হ'লে করতে হবে বইকি ।