পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক ইন্দির । হ্যা, আমাদের সঙ্গে আজকাল অনেক দিন পরে প্রথম দেখায় মন্তবড় একট। কিন্তু এসে পথ রোধ করে । দাড়ায় বটে। সবাই ভাবে হঠাৎ এ কি ? কিন্তু দুনিয়াতে কোন জিনিষটাই বা চিরস্থায়ী, বলুন। নিৰ্ম্মলবাবুর কাছে সব শুনেছেন বোধ হয় | নন্দী। [ তখনও অভিভূতের মত দাড়াইয়া ছিল । চকিত হইয়া ] ই্যা, শুনেছি। ওঁর সঙ্গেই যে এলুম। নইলে হয়ত আপনাদের এ বাড়ীর ঠিকানা পেতুম না । ইন্দিরা। উনিও এসেছেন বুঝি ? নন্দী ৷ ই্য, আপনার মায়ের কাছে কি দরকারী কথাবার্তা বলছেন । ইন্দিরা । [ একটু হাসিয়া ] এখন ত আর আমাদের বয় কিংবা খানসাম নেই, মিঃ নন্দী। তবে আপনি যদি অমুমতি করেন তাহ'লে হাতের এই কাজ কয়েকটা সেরে আপনাদের জন্যে একটু চ'-টা তৈরি করি । ততক্ষণ বসবার ঐ ঘরটায় যদি একটু অপেক্ষ করেন। ননী৭ [ বিচলিত স্বরে । অপেক্ষ আপনি যতক্ষণ বলবেন করতে পারি। কিন্তু এই চায়ের ব্যাপার নিয়ে বাস্ত হবেন না । জীবনে অনেক অনবগুক এবং অযথা চ পেয়েছি ভদ্রতার খাতিরে, লৌকিকতার অজুহাতে। কিন্তু আজও সেই কারণে আপনাকে হাতের কাজ ফেলে চাধের জন্তে বিন্দুমাত্র আয়োজন করতে হবে না। আমি কিন্তু এসেছিলুম আপনাকে নিমন্ত্রণ করতে। আসছে সোমবারে ফুল্লরা দেবীর সঙ্গে আমার বিবাহ হবে। এই নিম নিমন্ত্রণ-চিঠি । ইন্দিরা। তাই নাকি ? খুব চমৎকার খবর ত । কিন্তু আপনি আমার জন্মদিনে যেমন দামী উপহার দিয়েছিলেন আমি ত আপনার বিয়েতে তেমন কিছু দিতে পারব না । নদী। উপহার আপনার যা খুশী দেবেন কিন্তু যত অল্পক্ষণের জন্যই হোক সে দিনটায় যাবেন একবার। দেখুন আজ অল্প কয়েক মিনিটের মধ্যে আমার জীবনে খুব বড় একটা পরিবর্তন হয়ে গেছে। সমস্তই যেন ওলটপালট হয়ে গেল, দেখছি সময়ের হিসাবট কিছুই নয়, অমুভবের তীব্রতায় মামুষের একটা নিমেষও হয়ত তার জীবনের অনেকগুলো বছরকে ডিঙিয়ে যায়। কিন্তু যাক ওসব কথা--"আচ্ছা আপনার দাদার বিলেতের ঠিকানাট কি আমাকে বলতে পারেন ? ইন্দির । কেন ? নদী। সামনের আগষ্ট মাসে আমরা সন্ত্রীক বিলেত বাব, ভাবছি আপনার দাদার সঙ্গে দেখা করে তখন তাকে একটি কথা বলব। স্বরের উৎস ১২৭ ইন্দির । [ শুস্কভাবে ] নিৰ্ম্মল বাৰু ঠিকান জানেন_ প্রয়োজন হয় তাকে জিজ্ঞেস করবেন। কিন্তু আর যাই কেন না সহ করি, অধাচিত করুণা আমরা কিছুতেই সহ্য করতে পারি নে, মিঃ ননী । নন্দী। আপনি একটু ভুল করছেন, সংসারে করুণার প্রয়োজন যে কার বেশী কেবল সেই কথাটি জানতে আপনার আজও বাকী রয়েছে । কিন্তু হয়ত আপনার কত সময়ই না নষ্ট করলুম, এখনও কত কাজই না আপনার বাকী। আজকের মত আসি নমস্কার । চতুর্থ দৃপ্ত রন্ধনগৃহের প্রাঙ্গণে ইঙ্গির তরকারি কুটিতেছিল। সামনে ছোট একটি তোলা উমুনে ভাত ফুটিতেছে । নিকটে জলচৌকির উপর মোহিনী বসিয়া আছেন । ] ইন্দিরা । মা, ছোটদা যে পচভৈরটি টাকা মাইনে পায় তাতে কোন মাসেই তোমার পুরোপুরি সংসারখরচ চলে না। প্রত্যেক মাসে খাতা থেকে কিছু কিছু বার করতে হচ্ছে। সামান্ত দু-তিন হাজার টাকা, এমন ভাবে চললে আর ক'দিন ? মোহিনী । [ হাত ডুবাইয় ভাত হইয়াছে কিনা পরীক্ষা করিয়া দেখিতে দেখিতে ] আর কি উপায় আছে তাও ত দেখতে পাচ্ছি নে। বাজে খরচ কিছুই করি নে, রাধুনি রাখি নি, একটা ঠিকে-ঝি ছিল তাও তুই ছাড়িয়ে দিয়েছিস । তবু বাসা ভাড়া লাগে, ইলেকটিকের চার্জ আছে । জাম-কাপড় ধোপা, গোয়ালা, সব নিয়েTঐকটা" সংসারের খরচ অনেক । ইন্দির । তাই ত বলছি ঝি-চাকর ছাড়িয়ে সামান্য খরচ কমিয়ে কিছুই হবে না । মা, তুমি যদি বল তাহলে আমিও চাকরি করি । ধর অনেক লোকের বাড়ীতে মেয়েদের কিছুক্ষণ গান-বাজনা সেলাই বা লেখাপড়া শিখিয়ে আমি অনায়াসে উপাজ্জন করতে পারি। সেদিন কাগজে

  • বিজ্ঞাপন দেখছিলুম মি: ভাদুড়ির বাড়ীতে তার ছোট

মেয়েকে কিছুক্ষণ ক'রে ইংরেজী পড়াতে আর এস্রাজ শেখাতে .এক জন লোক খুঁজছেন। আমাদের স্বধীরকে দিয়ে আমি খোজ নিয়েছিলুম, তারা এখনই রাজী। এখন তোমার মত নিয়ে কথা । মোহিনী। এমন কথায় আমি কেমন ক’রে মত দিই বাছা । আর নিৰ্ম্মলই বা কি মনে করবে ? ..এখন তুমি তার অমুতে কিছুই করতে পার না । তোমার বাবা মারা গেছেন, মহাগুরুনিপাতের বছর, এ বছর শুভ কাজ হ’তে পারে না বলেই হয় নি। নইলে তুমি ত জান তার মত