পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহায়ণ অনুভূতি Sb〜● ওপর্তী একটুখানি হাসিয়া কহিল, হতভাগী যে কথাগুলি তপতী নীরবে শুনিয়াছে, কিন্তু স্থবিমলকে কোন মেয়ে-জাত, এত সহজেই কি ও সব ভুলতে পারবে ! তাহ’লে আর ভাবনা ছিল কি ! স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গে হাসিতে লাগিল । পরদিন দেখা গেল বানরটি যায় নাই, পুনরায় ফিরিয়া আসিয়াছে কিছু আহার্ষ্য লইয়া । তপতী সুবিমলকে ভাকিয়া বলে, চেয়ে দেখ। মুক্ত বানরটি খাচার চারি পাশে ঘুরিয়া ঘুরিয়া করুণ রবে ডাকিতে থাকে, কিন্তু বন্দী সাড়া দেয় না—মুখ গোজ করিয়া বসিয়া থাকে । বাহিরে সঙ্গীর ব্যথিত কণ্ঠ পুনরায় ধ্বনিয়া ওঠে । বন্দী করুণ চোখে তাকায়, ধীরে ধীরে উঠয়। আসিয়া গরাদের ফাকে আহার্ষ্য গ্রহণ করে । বানরটি আরও কিছু সময় অপলক চোখে চাহিয়া থাকে, তার পরে কোথায় চলিয়া যায় । তপতী চাহিয়া দেখে । এই একটি দিনের মধ্যেই বানর-দম্পতির জন্য তার মনে এক করুণ সহানুভূতি জাগিয়া উঠিয়াছে । হয়ত নির্দোষী সাজা পাইতেছে। কিন্তু মানুষের বিধানে ষে সব সময় দোষীই সাজা পায় না একথা তপতী একবারও ভাবিল না। কিন্তু একটা বানরের হইয়া ওকালতী করিতে সে কুষ্ঠিত হইয়া পড়িয়াছিল । অথচ ঠানদির কথাকয়টিও তাঁহাকে কম ভাবাইয়া তোলে নাই । ইতিমধ্যে তপতী একবার খাচার নিকট হইতে ঘুরিয়া আসিল । যদি কোন স্বষোগে স্বামীর অলক্ষ্যে বন্দীর মুক্তি ঘটাইতে পারে। দেখিল, খাচার দরজায় প্রকাও এক তালা ঝুলিতেছে, বন্দী নীরবে বসিয়া আছে, কোনও চাঞ্চল্য নাই । তপতী আরও একটু অগ্রসর হইল। বন্দী কাতর চোখে চাহিল । তপতী অার দাড়াইল না—কে যেন তাহাকে চাৰুক মারিল । ও-বাড়ীর ঠানদির কথাকয়টি ঘুরিয়া-ফিরিয়া তাহার মনে পড়িতে লাগিল, কথাগুলি ভাবিতে গিয়াও তপতী লজ্জায় ও আনন্দে চুইয়া পড়ে। ঠানদি বলেন, এ-সময় কাউকে দুঃখ দিতে নেই। শাপমন্তি তোমরা শহরের মেয়ের না মানতে ‘ পার কিন্তু গায়ের কি-বেীর তাদের দিদিম-ঠাকুরমাদের কথা অগ্রাহি করে না । বুড়োর বলেন, বানর মারলে,বংশ Nাকে না । বিমলকে ব’লে কয়ে ওটাকে ছেড়ে দিও। في سسسسجياة কথা বলিতে পারে নাই। কেমন একটা অনাবগুক লজ ও কুষ্ঠা আসিয়া তার কণ্ঠ রোধ করিয়া ধরে। অথচ দুশ্চিস্তার তার অবধি নাই । পেটে তার সস্তান । আর সামান্ত কয়েকটা মাসের ব্যবধানে সম্ভাবনা সত্যরূপ ধরিয়া তার কোলে আসিবে । গোল গোল কচি দুখানি নরম হাতে তার চুলের মুঠি ধরিয়া আকর্ষণ করিবে, বড় বড় ভাসা দুটি চোখ মেলিয়া তার মুখের দিকে চহিয়া হাসিয়া হাত-পা ছুড়িবে—অসচারিত ভাষায় কত কথা কহিবে . ভাবিতে গিয়াও তপতীর বুকটা এক অনাস্বাদিত পুলকে দুর দ্বর করিয়া উঠিল, চোখের পাতা ধীরে ধীরে বুজিয়া আসিল । 後 দিন দিন তপতী কেমন অঙ্কমনস্ক হইয়া পড়িতেছে । পূৰ্ব্বের ন্তায় সদা প্রফুল্প ভাব আর তার মধ্যে দেখা যায় না, সব সময় কি ভাবে । স্ববিমলের দৃষ্টিতে তাহ এড়াইল না । জিজ্ঞাসা করিল,—তোমার শরীর খারাপ যাচ্ছে না ত গুপু ? তপতী সংক্ষেপে, জানাইল, না । পরমুহুর্তেই প্রশ্ন করিল,—আচ্ছা বানরটাকে এখন ছেড়ে দিলে হয় না ? স্থবিমল হাসিয়া উঠিল-পাগল. কথাটা যেন এমনি অবহেলার । তপতী বিরক্ত মুখে পা বাড়াইল । সুবিমল ডাকিল-ব্যাপার কি বল ত ? তপতী দাড়াইল, কহিল-ব্যাপার কিছুই নয়। মোটের উপর বঁাদরটাকে তোমায়ু ছেড়ে দিতেই হবে । স্থবিমল হাসিয়া আবহাওয়াটাকে হাঙ্কা করিয়া লইতে .চেষ্টা করিল, কহিল—বুঝতে পেরেছি তোমার ব্যাধি কোথায় । কিন্তু একটা বঁiদর নিয়ে তুমি যে ভাবে মাতামাতি জুড়ে দিয়েছ তা সত্যই হান্সকর । তাছাড়া তুমি নিজেও ত দেখতে পাচ্ছ ঐ একটি মাত্ৰ বঁদেরকে আটকে রেখে কত নিঝঞ্ঝাটে কাজ হচ্ছে । তপত যেন কোন যুক্তিই শুনিতে চাহে না এমনি ভাবে মুখ ধুৱাইল। . @ স্ববিমল একটু বিমর্ষ কণ্ঠে কহিল—তা হ’লে কি আমায় এই কথাটাই বুঝতে হবে: যে, তোমার ইচ্ছে নয় আমি