পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্যারিসে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী শ্ৰীমণীন্দ্রমোহন মৌলিক, ডি-এসসি সত্তর বছর আগে পৃথিবীর প্রথম আন্তজাতিক শিল্প-প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্যারিসের বিখ্যাত ত্রোকাদেরো প্রাসাদে । শহরের উত্তর প্রাস্তে খান নদী আর প্যারিসের প্রমোদউষ্ঠান বোয় দ্য বোলোনের মাঝখানে অবস্থিত ছিল ত্রোকাদেরো। ১৮৬৭ সন থেকে আজ পর্যন্ত এই বিখ্যাত প্রাসাদে অনেকগুলি প্রদর্শনীই হয়ে গেছে। কিন্তু এ-বছরের আন্তজাতিক শিল্প-প্রদর্শনীর জন্য জোকাদেরোকে সংস্কার করার পর ওর চেহারা একেবারে বদলে গেছে । ঈফেল টাওয়ার আর ত্রোকাদেরোর মধ্যে খান-এর উপরে তৈরি হয়েছে এক নূতন পুল, আর তাকেই কেন্দ্র করে, নদীর দ্ব-পার ধরে চলে গেছে প্রদর্শনীর বিভিন্ন আকৃতির এবং বিভিন্ন রঙের জীকাল বাড়ীগুলি। ১৮৬৭ থেকে ১৯৩৭ এই সত্তর বছরের মধ্যে ফ্রান্সের ৰুত পরিবর্তন হয়ে গেছে—সামাজিক, রাষ্ট্রক এবং আর্থিক। তবুও ফরাসী ইতিহাসের ভিতর দিয়ে প্যারিসের ষে চিরন্তন মূৰ্ত্তি উজ্জল হয়ে উঠেছে শতাব্দীর ব্যবধানেও তার কোন পরিবর্তন লক্ষিত হ'ল না। প্যারিস সেদিন ষে বিপ্লবী ছিল আজও তাই আছে ; তার শিল্প-প্রতিভার দীপ্তি এক বিন্দুও আজ মলিন হয় নি; তার পথঘাটের অনাবশুক খামখেয়ালগুলি আজও বিদেশী পখিকের মন ভোলায়। ১৮৪৮ সনে লুই ফিলিপসের রাজত্ব, বার বছর আগে যেমন প্যারিসের একটা বিপ্লবী শোভাযাত্রার মধ্যে" জন্মগ্রহণ করেছিল, তেমনি আর একটা শোভাযাত্রায় শেষ হয়ে গেল। লুই বোনাপাট প্রবাসের কৃচ্ছের মধ্যেও একটা zitattar* w: crwfgy azt st? Idees Napoleoniennes-এর মধ্য দিয়ে একটা গণতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদের প্রচার চালাচ্ছিল। কিন্তু সব চেয়ে প্রবল জনমত ছিল বিদ্রোহী সাম্যবাদের পক্ষপাতী। জন্য দিকে বিদমার্কের জর্শন ঐক্য-প্রতিষ্ঠার সঙ্কল্পের আঘাতে ভেষ্টফালিয়া-সদ্ধির ভিত্তি উঠেছিল কেঁপে। ১৮৭১ সনে বিসমার্কের সাম্রাজ্যপরিকল্পনার গোড়াপত্তন হল ভেসাইয়ের সন্ধিতে । পঞ্চাশ বছর পরে ফরাসীর এই অপমানের এবং লাঞ্ছনার জবাব দিয়েছিল ১৯১৯ সনে, গত মহাযুদ্ধের অবসানে ; ভেলাইয়ের যে-ঘরে বসে জর্শন সাম্রাজ্য-প্রতিষ্ঠার ঘোষণা হয়েছিল সেই ঘরেই জাৰ্ম্মেনীকে নিরস্ত্র করবার চুক্তিপত্র সই করিয়ে নিয়েছিল অভিমানী ফরাসী । ধা হোক, ফ্রান্সে থার্ড রিপারিক প্রতিষ্ঠা হবার আগের কয়েকটা বছরের উচ্ছ,খলতার কথা কল্পনা করা মোটেই শক্ত নয়। আজও কি ফ্রান্সে সেই উচ্ছ,স্বলতা নেই ? আজ বিসমার্ক নেই, কিন্তু আছেন তার চেয়েও দুঃসাহসী এক জর্শন নেতা—হিটলার । ভেক্টফালিয়ার কথা অনেকেই ভুলে গেছে, কিন্তু ভেলাইয়ের সন্ধির ধে লাঞ্ছনা জাৰ্ম্মেনী ভোগ করেছে তার পিছনে যে কত বড় একটা জিঘাংসার সঙ্কল্প আছে তার উপলব্ধিই বর্তমান ফরাসী রাষ্ট্ৰীয় জীবনে এনেছে একটা উচ্ছম্বল নৈরাপ্তবাদ। শুধু তাই নয়, ফরাসী জনমত আজ শতধ বিভক্ত, জাতীয় নেতৃত্বে আজ তুমুল বিপ্লব। অন্ত দিকে ফরাসী মজুর ও মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ে যে কমুনিষ্ট-প্রীতি দেখেছি তাতে মনে হয় যে ফ্রান্সে একটা ফোর্থ রিপাব্লিকের বিশেষ দেরি নেই। প্যারিস-প্রদর্শনীর কথা লিখতে গিয়ে যে এই ঐতিহাসিক স্বত্রের অবতারণা করলাম তা লঘু বিষয়ের পণ্ডিতী মুখপত্র হিসাবে নয়। এর উদ্দেগু হ'ল এই যে এবারকার প্রদর্শনীর অস্তরে জীবনের যে স্রোত চলেছে তাও ষে চিরন্তন প্যারিসের একটি প্রতিবিম্ব ছাড়া আর কিছুই নয়—বিপ্লবী, বিশ্লোহী, আত্মাভিমানী, শিল্পী প্যারিসের। ফরাসী মেজাজে এমন একটা মঙ্গাগত বিপ্লববাদ প্রচ্ছন্ন আছে যা ফ্রান্সের ইতিহাসকে দিয়েছে এক অদ্ভুত রূপ আর প্যারিসকে করেছে ঘরের এবং বাইরের সমস্ত বিপ্লবের কেন্দ্র। ঐতিহাসিকর