পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহণরণ ফেরবার পথে দেখলাম অসংখ্য গাড়ীতে সাহেব-মেমেরা সেই দিকে চলেছে । বোধ হয় তার স্কুল-কলেজে যাচ্ছে । পায়ে হেঁটে ইউরোপীয় পোষাক-পরা মেয়ের পাল যাচ্ছিল স্কুলে। পথের ধারে দুই-একটা স্কুল দেখতেও পেলাম । পোষাক সাহেবী হলেও মেয়েদের মধ্যে কালা আদমি অনেক ছিল ! সকাল বেলা ৯০টাতেই জাহাজ ছেড়ে দেবে, কাজেই ডাঙার মেয়াদ আমাদের অরক্ষণ। গাড়ী থেকে নেমে বেড়ানো চলে না, তবু মাউণ্ট লাভানিয়াতে একবার নামূলাম। একবারে সমূত্রের ধারে ছোট ছোট পাহাড়ের মত কালো পাথর পড়ে রয়েছে, উচু উচু গোল ধরণের পাথরগুলি বেশ ছবির মত দেখতে । দুই-একটা ডোঙ্গার মত নৌকাও বালির উপর পড়ে আছে। কালে পাথরের উপর সমুদ্রের ঢেউ গর্জন করে আছড়ে পড়ে সাদা ফেনার ফুল ফুটিয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে । তারই কাছ দিয়ে আঁকাবঁকে পথ বেধে চলে যেতে হয় অনেক উচুতে মস্ত বড় একট। হোটেলের চুড়ায় । সমুদ্রের বুকে কত দিন ভেসেছি, কিন্তু মাটির পায়ে যেখানে মহাসিন্ধু এসে মাথা খুড়ছে তার মত সুন্দর মাঝ সমুদ্রকে কোনদিন মনে হয় নি। সমুদ্রের ধারেই ছোট একটা বাড়ীতে যাকোয়েরিয়াম্ { aquarium )। তাতে সামুদ্রিক মৎস্যদের অনেক নমুনা দেখতে পাওয়া যায়। আমার মেয়েটির রংবেরঙের মাছ দেখে ফুৰ্ত্তি হবে মনে করেই বোধ হয় শিরিবর্দ্ধন মহাশয় টিকিট কেটে আমাদের সেখানে ঢোকালেন। মাছগুলির গায়ে ময়ুর ও প্রজাপতির মত কত বিচিত্র রং ! Rise confä, Butterfly fish, Surgeon-Major, Emperor, আরও গাল ভারি ভারি অনেক নাম । তাদের চিত্রবিচিত্র রং, নানা গড়নের চেহার এবং নামের রকমারি দেখে আমার কষ্ট ত মহাখুশী । কিন্তু আমাদের জাহাজে ফেরা চাই ঠিক সময়ে, কাজেই মৎস্তকগু ও মৎস্তরাজদের রূপ দেখে বেশীক্ষণ কাটাতে পারলাম না। ফিরবার পথে মিউজিয়ুম দেখবার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু তখনও দরজা খোলবার সময় হয় নি বলে রুদ্ধ কৰাট দেখেই ফিরতে হল। দূর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়ী দেখে পোষ্ট আপিল চিঠিপত্র দিয়ে আমরা কিরলাম। দেখলাম" ঘাটে و ھ سی-دِ ما জাপান ভমণ ২৪১ স্বন্দর স্বন্দর পোষাক ও গহনা পরে কয়েকটি সিংহলবাসিনী দাড়িয়ে রয়েছে । পোষাকের মত তাদের হাসি জার চোখের চাউনিও খুব উজ্জ্বল। কাকে যেন ঘাটে অভ্যর্থনা করতে এসেছে । তিনটি মেয়ের পরনে শাড়ী। গাছের গায়ে লতা যেমন জড়িয়ে জড়িয়ে উপরে ওঠে, শাড়ীও তেমনি পfকে পাকে উপরে উঠেছে, আঁচলের দোলন কোথাও নেই। সিংহল মণি-মাণিক্যের দেশ, তাই এদের গায়ের গহনায়ু নীলকান্ত মণির খুব ছড়াছড়ি । জাহাজ থেকে নেমে সহষাত্রীরা নানাদিকে ছড়িয়ে গিয়েছিলেন - ষ্টীম লঞ্চে আবার সকলের সঙ্গে দেখা হল। এক মায়ের ছেলেমেয়ের মত সব এক তরণীর আশ্রয়ে চলেছে । নৌকা যখন ছাড়ে ছাড়ে, দড়ি খুলে দিয়েছে, তখনও দেখি বৃদ্ধ ডেন-মহিলা এসে পড়েন নি। তার জন্তে সকলেই উদ্বিগ্ন। আমাদের সহৃদয় বন্ধুটি অজানা মানুষের জন্যেও ছুটাছুটি করে অনেক কষ্টে তাকে খুঁজে পেতে আনলেন । কিন্তু বুড়ে মাছুষ ভারী শরীর আর দুর্বল পা নিয়ে কিছুতেই খোলা নৌকায় উঠতে পারেন না । এশেষে নৌকা আবার বেঁধে পিছন থেকে ঠেলে আর সামনে থেকে টেনে তঁাকে তুলে নেওয়া হল । মনে হল মস্ত একটা বিপদ থেকে উদ্ধার পেলাম । পাচ দিনের মাত্র পরিচয়, ডাঙায় পরিচয় হলে পাশের বাড়ীর লোকের এই জাতীয় বিপদে আমরা কিছুমাত্র উদ্বিগ্ন হই না, কিন্তু জলে মনে হয় এ আমাদেরই একজন। আমাদের পুথিবী তখন ঐ জাহাজটুকু ৷ জাহাজে ফিরে দেখি ব্যাপারীরা ডিঙি নৌকা বোঝাই করে করে নানা জিনিষ বেচতে এসেছে। লুঙ্গির উপর মাথায় হ্যাট চাপ দিয়ে মসনিন্দিতবর্ণ ব্যাপারীর নৌকা বেয়ে বেয়ে এসে জাহাজ ঘিরে ফেলেছে । মাছর চাপ । দেওয়া অনেক খেলনা তাদের নৌকায় । বেশীর ভাগ কালো কাঠের হাতী, কিছু সাদাটে কাঠের হাতী, কিছু সজারুর কাটার ও কাঠের বাঙ্গ, কোঁটা, কিছু খেলনার নৌকা ইত্যাদিও আছে। ডেকের রেলিং ধরে যাত্রীরা সব বুকে পড়েছে আর নীচ থেকে বিক্রেতার প্রাণপণে টেচাচ্ছে, “હાફે, હાફે, lady, டிங், how much f Rs. 20 pair, Rs. 10 pair, take, takse.”