পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহাত্মা গান্ধী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভারতবর্ষের একটি সম্পূর্ণ ভৌগোলিক স্মৃতি আছে। এর পূর্বপ্রাপ্ত থেকে পশ্চিম প্রাস্ত এবং উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিণে কঙ্কাকুমারিকা পৰ্য্যস্ত যে একটি সম্পূর্ণতা ৰিদ্যমান, প্রাচীন কালে তার ছবি অস্তরে গ্রহণ করার ইচ্ছে দেশে ছিল, দেখতে পাই । এক সময় দেশের মনে নানা কালে নানা স্থানে যা বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল, তা সংগ্রহ ক’রে, এক ক’রে দেখবার চেষ্টা মহাভারতে খুব স্থম্পষ্টভাবে জাগ্রত দেখি । তেমনি ভারতবর্ষের ভৌগোলিক স্বরূপকে অস্তরে উপলব্ধি করবার একটি জহুষ্ঠান ছিল, সে তীর্থভ্রমণ। দেশের পূর্বতম অঞ্চল থেকে পশ্চিমত্তম অঞ্চল এবং হিমালয় থেকে সমূদ্র পর্যন্ত সর্বত্র এর পবিত্র পীঠস্থান রয়েছে, সেখানে তীর্থ স্থাপিত হয়ে একটি ভক্তির ঐক্যজালে সমস্ত ভারতবর্ধকে মনের ভিতরে আনবার সহজ উপাম স্বষ্টি করেছে। - ভারতবর্ষ একটি বৃহৎ দেশ। একে সম্পূর্ণভাবে মনের ভিতর গ্রহণ করা প্রাচীনকালে সম্ভবপর ছিল না। আজ সার্ডে ক'রে, মানচিত্র একে ভূগোল বিবরণ গ্রথিত ক'রে ভারতবর্ষের যে ধারণা মনে আনা সহজ হয়েছে, প্রাচীনকালে তা ছিল না। এক হিসাবে সেটা ভালই ছিল। সহজভাবে যা পাওয়া যায় মনের ভিতরে তা গভীরভাবে মুত্রিত হয় না। সেই জন্ত কৃচ্ছসাধন ক'রে ভারত-পরিক্রমা দ্বারা ষে অভিজ্ঞতা লাভ হোত, তা স্থগভীর এবং মন থেকে । সহজে দূর হোত না । , - মহাভারতের মাঝখানে গীত প্রাচীনের সেই সমম্বয়তত্ত্বকে উজ্জল করে । কুরুক্ষেত্রের কেন্দ্রস্থলে এই যে খানিকটা দার্শনিকভাবে আলোচনা এটাকে কাব্যের দিক থেকে অসংগত বলা যেতে পারে, এমনও বলা যেতে পারে ধে মূল মহাভারতে এটা ছিল না। পরে ধিনি রসিয়েছেন তিনি জানতেন যে উদার কাব্যপরিধির মধ্যে, ভারতের চিত্তভূমির মাৰখানে এই তত্ত্বকথার অবতারণা করার প্রয়োজন ছিল । সমস্ত ভারতবর্ধকে অস্তরে বাহিরে উপলব্ধি করবার প্রয়াস ছিল ধমানুষ্ঠানেরই অন্তর্গত। মহাভারত-পাঠ যে আমাদের দেশে ধমকমের মধ্যে গণ্য হয়েছিল তা কেবল তত্ত্বের দিক থেকে নয়, দেশকে উপলব্ধি করার জন্যও এর কতব্যতা আছে । আর তীর্থযাত্রীরাও ক্রমাগত ঘুরে ঘুরে দেশকে স্পর্শ করতে করতে অভ্যস্ত অন্তরঙ্গভাবে ক্রমশ এর ঐক্যরূপ মনের ভিতরে গ্রহণ করবার চেষ্টা করেছেন। এ হোলো পুরাতন কালের কথা । - পুরাতন কালের পরিবতন হয়েছে। আজকাল দেশের মানুষ আপনার প্রাদেশিক কোণের ভিতর সংকীর্ণতার মধ্যে আবদ্ধ হয়ে থাকে । সংস্কার ও লোকাচারের জালে আমর জড়িত, কিন্তু মহাভারতের প্রশস্ত ক্ষেত্রে একটা মুক্তির হাওয়া আছে। এই মহাকাব্যের বিরাট প্রাঙ্গণে মনস্তত্ত্বের কত পরীক্ষা । যাকে আমরা সাধারণত নিন্দনীয় বলি, সেও এখানে স্থান পেয়েছে । যদি আমাদের মন প্রস্তুত থাকে, তবে অপরাধ দোষ সমস্ত অতিক্রম করে মহাভারতের বাণী উপলব্ধি করতে পারা যেতে পারে। মহাভারতে একটা উদাত্ত শিক্ষা আছে, সেট নঙৰ্থক নম্ন, সদর্থক, অর্থাৎ তার মধ্যে একটা ই আছে। বড়ো বড়ে সব বীর পুরুষ আপন মাহাঝের গৌরবে উন্নত শির, তাদেরও দোষ-কটি রয়েছে, কিন্তু সেই সমস্ত দোষ-ত্রুটিকে আত্মসাৎ করেই তারা বড়ো হয়ে উঠেছেন। মামুবকে যথার্থভাবে বিচার করবার এই প্রকাগু শিক্ষা আমরা মহাভারত থেকে পাই । পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সঙ্গে আমাদের যোগ হবার পর থেকে আরো কিছু চিন্তনীয় বিষয় এসে পড়েছে যেটা আগে ছিল না। পুরাকালের ভারতে দেখি স্বভাবত বা কার্বত ধারা পৃথক তাদের আলাদা শ্রেণীতে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তবু