পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

بس8sb প্রবাসী SN98g নাই ? তাহার একটা কারণ দিনের আলোতে কুম্ভাকে ত দেখি নাই, যাহা দেখিয়াছি রাত্রে। ইজারাদারের লোকজনকে তৎক্ষণাং শাসাইয়া কুস্তাকে মুক্ত করিলাম। সে লজ্জায় মাটির সঙ্গে মিশিয়া ছেলেপূলেদের লইয়া বাড়ী চলিয়া গেল। যাইবার সময় কুলের ধামাটি ও অঁাকৃশিগাছটা সেখানেই ফেলিয়া গেল—বোধ হয় ভয়ে ও সঙ্কোচে । আমি উপস্থিত লোকগুলির মধ্যে এক জনকে সেগুলি কাছারিতে লইয়া যাইতে বলতে তাহারা খুব খুশী হইয়া ভাবিল ধামা ও স্বাকৃশি সরকারে নিশ্চয়ই বাজেয়াপ্ত হইবে। কাছারিতে আসিয়া পাটোয়ারীকে বলিলাম-তোমাদের দেশের লোক এত নিষ্ঠুর কেন বনোয়ারীলাল ? বনোয়ারী পাটোয়ারী খুব দুঃখিত হইল। বনোয়ারী লোকটা ভাল, এদেশের তুলনায় সত্যিই তার হৃদয়ে দয়ামায়া আছে। কুস্তার খাম ও স্বাকৃশি সে তখনই পাইক দিয়া লব টুলিয়াতে কুম্ভার वांख्नेौ श्रृंtठांझेम्नां निल । সেই রাত্রি হইতে কুস্তা বোধ হয় লজ্জায় আর কাছারিতেও ভাত লইতে আসে নাই। " শীত শেষ হইয়া বসন্ত পড়িয়াছে । আমাদের এ জঙ্গল-মহালের পূর্ব-দক্ষিণ সীমানা হইতে সাত-আট ক্রোশ দূরে অর্থাৎ সদর কাছারি হইতে প্রায় চৌদ্ধ পনর ক্রোশ দূরে ফাল্গুন মাসে হোলির সময় একটা প্রসিদ্ধ গ্রাম্য মেল বসে, এবার সেখানে যাইব বলিয়া ঠিক করিয়াছিলাম। বহু লোকের সমাগম অনেক দিন দেখি নাই, এদেশের মেলা কি রকম জানিবার একটা কৌতুহলও ছিল। কিন্তু কাছারির লোকে পুনঃপুনঃ নিষেধ করিল, পথ দুর্গম ও ও পাহাড়-জঙ্গলে ভৰ্ত্তি, উপরন্তু গোটা পথটার প্রায় সৰ্ব্বত্রই বাঘের ও বন্যমহিষের ভয়, মাঝে মাঝে বস্তি আছে বটে, কিন্তু সে বড় দূরে দূরে, বিপদে পড়িলে তাহারা বিশেষ কোন উপকারে আসিবে না ইত্যাদি । জীবনে কখনও এতটুকু সাহসের কাজ করিবার অবকাশ পাই নাই, এই সময়ে এই সব জায়গায় যত দিন আছি ধাহী করিয়া লইতে পারি, বাংলা দেশে ও কলিকাতায় ফিরিয়া গেলে কোথায় পাইব পাহাড় জঙ্গল, কোথায় পাইব বাঘ ও বস্তমহিষ । ভবিষ্যতের দিলে আমার মুখে গল্পশ্রবণনিরত পৌত্রপৌত্রীদের মুগ্ধ ও উংস্থক তরুণ দৃষ্টি কল্পনা করিয়া মুনেশ্বর মাহাতে পাটোয়ারী ও নবীনবাবু মুহুরীর সকল আপত্তি উড়াইয়া দিয়া মেলার দিন খুব সকালে ঘোড়া কসিন্ম রওনা হইলাম। আমাদের মহালের সীমানা ছাড়াইতেই ঘণ্টদুই লাগিয়া গেল, কারণ পূৰ্ব্ব-দক্ষিণ সীমানাতেই আমাদের মহালে জঙ্গল বেশী, পথ নাই বলিলেও চলে, ঘোড়া ভিন্ন অন্ত কোন যানবাহন সে পথে চলা অসম্ভব, যেখানে সেখানে ছোট বড় শিলাখণ্ড ছড়ানো, শাল-জঙ্গল, দীর্ঘ কাশ ও বনঝাউয়ের বন, সমস্ত পথট উচুনীচু, মাঝে মাঝে উচু বালিয়াড়ি, রাঙা মাটির ডাঙ্গা, ছোট পাহাড়, পাহাড়ের ওপর ঘন কাটা গাছের জঙ্গল। আমি যদৃচ্ছাক্রমে কখনও দ্রুত, কখনও ধীরে অশ্ব চালনা করিতেছি, ঘোড়াকে কদম চালে ঠিক চালানো সম্ভব হইতেছে না—খারাপ রাস্তা ও ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত শিলাখণ্ডের দরুন কিছু দূর অন্তর অন্তর ঘোড়ার চাল ভাঙিয়া যাইতেছে, কখনও গ্যালপ, কখনও ভুলকি, কখনও বা পায়চারি করিবার মত মৃদ্ধ গতিতে শুধু ইটিয়া যাইতেছে। আমি কিন্তু কাছারি ছাড়িয়া পৰ্য্যস্তই আনন্দে মগ্ন হইয়া আছি, এখানে চাকুরি লইয়া আসার দিনটি হইতে এদেশের এই ধৃ ধূ মুক্ত প্রাস্তর ও বনভূমি আমাকে ক্রমশ: দেশ জুলাইয়া দিতেছে, কলিকাতা শহর ভুলাইয়া দিতেছে, সভ্য জগতের শত প্রকারের আরামের উপকরণ ও অভ্যাসকে জুলাইয়া জিতেছে, বন্ধুবান্ধব পৰ্য্যন্ত ভুলাইবার যোগাড় করিয়া তুলিয়াছে। যাক না ঘোড়া আস্তে বা জোরে, শৈলসান্থতে যতক্ষণ প্রথম বসস্তে প্রস্ফুটিত রাঙা পলাশফুলের মেলা বসিয়াছে, পাহাড়ের নীচে, ওপরে, মাঠের সর্বত্র ঝুপসি গাছের ডাল ঝাড় ঝাড় ধাতুপ ফুলের ভারে অবনত, গোলগোলি ফুলের নিম্পত্র ভূখণ্ডত্র কাণ্ডে হলুদ রঙের বড় বড় স্বৰ্যমুখী ফুলের মত ফুল মধ্যাহের রৌদ্রকে মৃদ্ধ স্বগদ্ধে অলস করিয়া তুলিয়াছে—তখন কতটা পৰ চলিলাম, কে রাখে তাহার হিসাব ? কিন্তু হিসাব খানিকট ষে রাখিতেই হইবে, নতুবা দিকৃত্ৰান্ত ও পথভ্রান্ত হইবার সম্পূর্ণ সম্ভাবন, আমাদের জঙ্গলের সীমানা অতিক্রম করিবার পূৰ্ব্বেই এ সত্যটি ভাল করিম্বাই বুঝিলাম। কিছু দূর তখন অস্তমনস্ক ভাবে গিয়াছি, হঠাৎ দেখি সম্মুখে বহুদূরে একটা খুব বড় অরণ্যানীর ধূম্রনীল