পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●88 প্রবাসী SN988 একটু অপ্রস্তুত হয়ে আধ্য বলল, “ন না, মানে, তোরই অস্থবিধে হবে ভেবে তোকে এখানে থাকতে বলতে সাহসী ठ्हें नि * “তোর সাহস যে আগের চেয়ে বেড়েছে তা ভাই কিছুতেই স্বীকার করতে পারলুম না । মনে পড়ে কি জাগে - মানে আঠার-উনিশ বছর আগে কত রাতে তুই জামাকে ভেকে নিয়ে ধেতিস, কত রাত তোজের বাড়ীর ছাতে ন-খুমিয়ে গল্প ক’রে কাটিয়ে দিয়েছি । তখন যে শোবার খুব স্থবিধে হ’ত তা ত ভাই মনে হয় না । বিছানার মধ্যে থাকত একটি মাত্র চাদর ও একটি মাত্র ছোট মাথার বালিশ। কিন্তু অস্থবিধের কথা ত তখন কারুরই মাথায় আসত না !” "...না না, তা বলছি না। তবে তুই এখন বড় হয়ে গিয়েছিস কি না ! হয়ত কোনও অনিচ্ছাকৃত ক্রটি হয়ে शृॉtद•००*

  • তাই এই ইচ্ছাকৃত দুর্ভাবনা ’ বাধা দিয়ে স্বত্রত ব’লে উঠল । “দেখ আৰ্য্য, অসুবিধে আর কষ্ট বেশীর ভাগই মানসিক | তখন কি আর আমাদের অনুবিধে হ’ত ন,—নিশ্চয়ই হ’ত । কিন্তু সে-কথা মোটেই আমরা ভাবতাম ন৷ অতএব অস্থবিধের কথা তুই ভুলে যা।”

আধ্যও উৎসাহিত হয়ে উঠল। খাওয়া শেষ ক'রে পানের ডিবে নিয়ে স্বরম ঘরে এল । কোন ভূমিকা না করেই সে বলল, “বাইরে যা দুৰ্যোগ, আজ রাতটা এখানে থেকে যান না ঠাকুরপো ।” “দেখলি ত জাৰ্য্য, বৌদির বুদ্ধি তোর চেয়ে কত বেশ •••হ্য বৌদ্ধি, এখানে আজ থাকার কথাই আমি বলছিলাম, কিন্তু আধ্য কিছুতেই রাজী হচ্ছিল না ।” আৰ্য শুধু একটু ফিকে হেসে চুপ করে রইল । দোতলার বসবার ঘরে দুই বন্ধুতে শোবে ঠিক হ’ল । স্বত্রভই দুটো সোফা টেনে এনে, সুরমার কাছ থেকে ছুটে মাথার বালিশ চেয়ে নিয়ে শোবার বন্দোবস্ত এক নিমেষে ক'রে ফেলল। স্বরম গুতে চলে গেল। ঘরের সব ক’টা জানলা খুলে দিয়ে, আলোটা নিবিয়ে অন্ধকারে ছুটে সিগারেট জালিয়ে তারা ভূ-জনে গল্প ক’রে চলল । * * স্বত্রত হঠাৎ বলল, ”আচ্ছা আৰ্য, মীরার খবর কি রে } প্রশ্নটা ছোট। কিন্তু তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে এক স্বদীর্ঘ ইতিহাস । মীরা অঙ্কের প্রফেসারের মেয়ে। স্বত্রত যেত সেখানে পড়তে, তখনই তার মীরার সঙ্গে আলাপ হয় । আঠার বছর আগে এই রকম কত বর্ষামুখর রাত্রে স্বত্রত ব'লে চলেছে মীরার কথা, আর্যাকে । তার তরুণ জীবনের কত আশা, কত স্বপ্ন গড়ে উঠেছিল শুধু এই তরুণীকে কেন্দ্র করে। কিন্তু হঠাৎ যেন একটা দমকা বাতাস এসে সমস্ত ওলটপালট করে দিল ; ফরেষ্ট ডিপার্টমেন্টে চাকরি পেয়ে স্বত্রত চলে গেল দূর দেশে। তার পর থেকে আজ পর্ষ্যস্ত সে মীরার কোন খবরই পায় নি। আধ্য উত্তর দিল, “ওঃ, সেই মীরা ? মানে মৃগাঙ্কবাবুর মেয়ে ? তার ত অনেক দিন বিয়ে হয়ে গেছে শেখরের সঙ্গে । শেখরকে মনে আছে ত ; সেই ষে আমাদের ক্লাসের রোগ চেহারার ভাল ছেলেটি ! সে আই-সি-এস্ হয়ে আসার পরেই বিয়ে হয়েছে ।* নিতান্ত সাধারণ ভাবে "ও" বলে স্বত্রত শুধু আর একটা সিগারেট ধরাল । তার পর চলল আরও কতকগুলো মামুলি কথাবাৰ্ত্তা, কিন্তু গল্প আর জমল না ; কোথাকার কোন এক অদৃশু স্বল্প তার যেন কেটে গিয়েছে, গল্পের স্বর তাই যেন মাঝে মাঝে খাপছাড়া ভাবে কেটে যাচ্ছে । আৰ্য্য ক্রমশঃ ঘুমিয়ে পড়ল ; কিন্তু স্বত্রতর চোখে আঙ্গ ঘুম নেই! কত এলোমেলো কথা তার মনে আসছে আজ, মনে আসছে ধূসর অতীতের কত নিম্প্রয়োজন ঘটনা, তুচ্ছ হাসি-কান্নার কথা ! সমস্ত মিলে মনটা তার এক অদ্ভুত স্বরে বারে বারে বেজে উঠতে চাইছে যেন ; কিন্তু প্রকাশের ভাষ৷ সে যেন হারিয়ে ফেলেছে, সে যেন মৃত অতীতেরই মত আজ বোবা হয়ে গেছে ! রাত্রি অনেকটা হ’ল । কোথাকার একটা পেট-ঘড়িতে ঢং ঢং করে ছুটে বেজে গেল । বৃষ্টিটা থেমে এসেছে ; ভিজে হাওয়ায় ঘরের লঘূ অন্ধকার বারে বারে কেঁপে উঠছে, হাওয়ায়-কাপা স্থদুর অতীতের কার পাতলা চুলের মত । বিছানা ছেড়ে ধীরে ধীরে উঠে জানালার গরা ধরে স্বত্রত দাড়িয়ে রইল। আকাশের উন্মত্ত মেঘের আবরণ