পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ মুসলমান করিয়া কালক্রমে ভারতবর্ষে মুসলমানের সংখ্যা হিন্দুর সমান এবং তদনন্তর হিন্দু অপেক্ষ অধিক করিবার অধিকার মুসলমানদের থাকিবে। হিন্দুদের সংখ্যাসাম্যরক্ষার বা সংখ্যাবৃদ্ধির অধিকার সম্বন্ধে হিন্দু-মুসলমান-মিলনচুক্তি নীরব থাকিবে। বলা বাহুল্য, এই প্রকার “সামো” হিন্দুর রাজী হইবে না। কারণ, হিন্দুরা ভারতীয়দের মধ্যে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ, মুসলমানেরা সিকিরও কম । কংগ্রেস রাজী হইলে কংগ্রেস এইরূপ চুক্তি অনুসারে কাজ করিতে পারিবে না। জৱাহরলাল-জিন্না সংবাদ কংগ্রেসের সভাপতি পণ্ডিত জৱাহরলাল নেহরু খবরের কাগজে এই মৰ্ম্মে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন যাহাতে লেখা ছিল, যে, বাবু রাজেন্দ্রপ্রসাদ ও মিঃ জিন্নার মধ্যে যে-যে সৰ্বে হিন্দু-মুসলমানের চুক্তি হইবার কথা ছিল, তাহ সংশোধন পরিবর্দ্ধনাদি করিবার জন্য মিঃ জিন্নার সহিত আলোচনা করিতে কংগ্রেস প্রস্তুত। মিঃ জিন্না এই বিবৃতির উত্তর দিয়াছেন। উত্তরটির বিস্তারিত আলোচনা অনাবশুক । তাহাতে বক্রোজি, শ্লেষ, অপ্রকৃত উক্তি অনেক আছে । মিঃ জিন্না ইহাতে বলিয়াছেন, কংগ্রেস কি কি সৰ্ত্তে মস্লেম লীগের সহিত মিলন চান তাহা যদি মি: জিন্নাকে জানান, তাহা হইলে তিনি তাহা বিবেচনা কবিবেন । মিঃ জিয়ার মতে সৰ্বগুলি মহাত্মা গান্ধী লিপিবদ্ধ করিয়া স্বয়ং তদ্বিধয়ে মিঃ জিন্নার সহিত আলোচনা করিলে ভাল হয়। অর্থাৎ মিঃ জিন্নার ভঙ্গীট এইরূপ যেন তিনি ভারতের রাষ্ট্রীয়ভাগ্যবিধাতা, কংগ্রেসকে উাহার নিকট আবেদন পাঠাইতে হইবে ; তিনি তাহা মধুর করিতে পারেন, না-করিতেও পারেন। আমরা যত দূর জানি বুঝি, তাহাতে রাষ্ট্রনীতিক্ষেত্রে তাহার পদমর্ধ্যাদা ও শক্তি এরূপ নহে। তিনি সমগ্র ভারতীয় *সলমান সমাজেরও অপ্রতিদ্বন্দ্বী বা একমাত্র নেতা নহেন । তিনি যদি বলিতেন, “আমি বা আমরা মুসলমানরা এই এই সপ্ত চাই,” তাহা হইলে কংগ্রেসের সহিত আলোচনা সহজ হইত। মস্লেম লীগকে দরখাস্তকারী সাজাইবার অভিপ্ৰায়ে আমরা ইহা বলিতেছি না। মহাত্মা গান্ধী বিবিধ প্রসঙ্গ—জবাহরলাল-জিন্ন সংবাদ ●*& ভারতীয় ব্রিটিশ গবন্মেটিকে শয়তানী শাসন বলিয়াছিলেন, কিন্তু আবার দেশের হিতার্থ সেই শাসনেরই প্রতিনিধি গবর্ণর জেনার্যাল ও গবর্ণরদের সঙ্গে উপযাচক হইয়া দেখাসাক্ষাৎ ও করিয়াছেন । তাহাতে র্তাহার কোন অপমান বা লাঘব হয় নাই। মিঃ জিন্নার সঙ্গে তিনি আলোচনা করিতে গেলেও তিনি ছোট হইয়া যাইবেন না । বিদেশী ও দেশীদের মধ্যে কে বড় ও কে ছোট, সবাই জানে । আমরা মিঃ জিন্নাকেই তাহার সর্বগুলি নির্দেশ করিতে বলিতেছি অন্ত কারণে, তিনি মস্লেম লীগের সভাপতি। মস্লেম লীগের সভ্যেরা সকলেই মুসলমান, অমুসলমান কেহ ইহার সভ্য নহেন। মস্লেম লীগ সাম্প্রদায়িক সংঘ। সুতরাং মুসলমান সম্প্রদায় কি পাইলে সন্তুষ্ট হইবে, ঐ লীগ তাহ হয়ত বলিতে পরিবে । অন্ত দিকে, কংগ্রেস অসাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান। ইহার সভ্যদের মধ্যে হিন্দু মুসলমান শিখ খ্ৰীষ্টিয়ান বৌদ্ধ পারসী প্রভৃতি অনেক আছেন । মুসলমানরা কি পাইলে সন্তুষ্ট হইবেন, তাহা কংগ্রেসের মত অসাম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অনুমান করা ও বলা সহজ নহে। আরও একটি বাধা আছে । এ পর্ষ্যস্ত মুসলমানের ব্রিটিশ গবষ্মে স্টের স্বার্থপরতাপ্রস্থত পক্ষপাত ও চালবাজিতে যাহা পাইয়াছেন ও আরও যাহা চান, তদ্বারা হিন্দুদের এবং মুসলমান ব্যতীত অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থহানি হইয়াছে ও অধিকার হ্রাস পাইয়াছে। গণতান্ত্রিকতা ত সাংঘাতিক আঘাতই পাইয়াছে। এখন কংগ্রেস যদি গবন্মে ন্টের পক্ষপাতপূর্ণ ব্যবস্থাপক সভার ও চাকরির সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারাতে সার দেন, তাহা হইলে কংগ্রেস আত্মহত্যা কfরবেন ; যদি উক্ত বঁাটোয়ারার অতিরিক্ত আরও কিছু মুসলমানদিগকে দিতে চান, তাহ হইলে আত্মহত্যার বেশী কিছু কfরবেন। কংগ্রেস সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, কিন্তু সকল সম্প্রদায়ের সব মানুষের প্রতিনিধি নহেন । যদি এক সম্প্রদায়ের কোন দাবীর বিচার কংগ্রেসকে করিতে হয়, তাহা হইলৈ অন্য সম্প্রদায়গুলির লোকদের কি বলিবার আছে, তাহাও কংগ্রেসকে শুনিতে হইবে। কংগ্রেস একটা সিদ্ধান্ত করিয়া মস্লেম লীগকে বলিতে