পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

J9 సెరి প্রবাসী ১৩৪৪ R কাহারে হাতে দেন নাই—তোমাকেই সেই মহাশক্তি v. দিয়াছেন। যেদিন স্নিগ্ধ পবিত্র প্রভাতে প্রাতঃস্নান 3 করিয়া কাষায় বসন পরিয়া তোমার যন্ত্রতন্ত্র লইয়া বন্ধু বিপুলচ্ছায়া বটবৃক্ষের তলে তুমি আসিয়া বসিবে—সেদিন তোমাকে চিঠি লিথিতে পারি নাই কিন্তু কত দিন যে তোমাকে লইয়া কাটাইয়াছি, হৃদয়ের অন্তরঙ্গ প্রদেশে তোমাকে অনুভব করিয়াছি তাহা বলিতে পারি না। আজ তোমার জয়সংবাদ পাইয়। নবমেঘগর্জনপুলকিত ময়ূরের মত আমার হৃদয় নৃত্য করিতেছে। মাতাল মদের বোতলের শেষ বিন্দুটি পর্য্যন্ত যেমন পান করে তোমার চিঠির ভিতর হইতে আমি সমস্ত মত্ততাটুকু একেবারে উপুড় করিয়া ধরিয়া চাখিবার চেষ্টা করিতেছি। বহু বিলম্বে তোমার জয় হইলেও আমি হতাশ্বাস হইতাম না—তবু নগদ পাওনার প্রবল আনন্দ । গত কাল প্যারিসে তোমার বলিবার কথা ছিল— নিশ্চয় সেখানে তোমার জয় হইয়াছে—তোমার সেই বক্তৃতাসভায় আমাদের হৃদয় উপস্থিত ছিল । যুরোপের মাঝখানে ভারতবর্ষের জয়ধ্বজা পুতিয়া তবে তুমি ফিরিয়ো—তাহার আগে তুমি কিছুতেই ফিরিয়ো না । গারিবাল্ডি যেমন জয়ী হইয়া রণক্ষেত্র হইতে কৃষিক্ষেত্রে আসিয়া বাস করিয়াছিলেন তেমনি তোমাকেও অভ্ৰভেদী জয়তোরণের ভিতর দিয়া ভারতবর্ষের গভীর নির্জনতার মধ্যে দারিদ্র্যের মধ্যে আসিয়া আশ্রয় লইতে হইবে—তখন তোমাকে সকলে খুজিয়া লইবে তুমি কাহাকেও খুজিবে না—তখন তোমার কাছে আসিতে ভারতবর্ষের কাছে সকলে মাথা নত করিবে—বিদেশী ছাত্রকে ডাকিবার জন্য বিদেশের প্ল্যানে প্রাসাদ রচনা করিলে চলিবে না— মাঠের মধ্যে কুটীরের মধ্যে মুগচৰ্ম্মে যে বসিবে সেই তোমাকে পাইবে । ভারতবর্ষের দারিদ্র্যকে এমন প্রবল তেজে জয়ী করিবার ক্ষমতা বিধাতা আমাদের আর ভারতবর্ষের প্রাচীন ঋষিগণ তোমার জয়শব্দ উচ্চারণ করিবার জন্য সেদিনকার পুণ্য সমীরণে এবং নিৰ্ম্মল সূৰ্য্যালোকের মধ্যে আবিভূত হইবেন । ভারতবর্ষের সমস্ত শূন্ত প্রান্তর এবং উদার আকাশ তৃষিত পক্ষের ন্যায় ব্যাকুল প্রসারিত বাহুর ন্যায় সেই দিনের জন্ত অপেক্ষ করিয়া আছে। আমাদের ক্ষুদ্র শক্তি অনুসারে আমরাও সেই দিনের জন্য তপস্যা করিতে আরম্ভ করিয়াছি । আমাদের রাজা যে কেহ হউক, আমাদের আকাশ, আমাদের দিগন্তবিস্তীর্ণ মাঠ কে কাড়িয়া লইবে ? আমাদের জ্ঞানের অবকাশ, আমাদের ধ্যানের অবকাশ, আমাদের দারিদ্র্যের অবকাশ হইতে আমাদিগকে কে বঞ্চিত করিতে পারিবে ? আমাদের দেশে যে পরম মুক্তির অচলপ্রতিষ্ঠা হইয়াছে—তাহা স্তব্ধ, তাহা নিৰ্ব্বাক্, তাহা দীন, তাহা দিগম্বর, তাহা শাশ্বত— তাহাকে বলীর বাহু ও ক্ষমতাশালীর পদ্ধ স্পর্শ করিতে পারে না—ইহাই চিত্তের মধ্যে স্থিরনিশ্চয়রূপে জানিয়। শান্তমনে সন্তোষের সহিত প্রসন্ন মুখে ইহারই বিরলভূষণ বিশালতার মধ্যে সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করিতে হইবে । বিদেশীর কটাক্ষে আর ভ্রক্ষেপ করিব ন!—তাহার ধিক্কারে আর কর্ণপাত করিব ন!—তাহার কাছ হইতে যে বর্বর রংচং বসনভূষণ সংগ্ৰহ করিয়া লইয়াছিলাম তাহা তপোবনের দ্বারে আবর্জনার মত ফেলিয়া দিয়া প্রবেশ করিব । পত্রের মধ্যে আমাদের আশ্রম বৃক্ষ হইতে কালিদাসের শিরীষ পুষ্প তোমাকে পাঠাইলাম। তোমার রবি