পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৬৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাস্তুন অণরগ্যক USNడి লকট্রলিয়া—চার মাইল দূরে। মেয়েমানুষই বা কোথা বলিতাম না। কারণ ভয় পাইয়া সে ভাগিয়া গেলে হইতে আসিতে পারে অত গভীর রাত্রে ? বিশেষ জমিদারের লোকসান। স্থানীয় লোকেরা কেহই ও যখন এই সব নির্জন বনপ্রাস্তরে বাঘ ও বুনোগুয়োরের ভয়ে সন্ধ্যার পরে আর লোকে পথ চলে না। যদি আসরফি টিণ্ডেলের কথা সত্য বলিয়া ধরিয়া লই, তবে ব্যাপারটা খুব রহস্যময়। অথবা এই পাণ্ডববর্জিত দেশে, এই জনহীন বনজঙ্গল ও ধৃ ধূ প্রাস্তরের মধ্যে বিংশ শতাব্দী তো প্রবেশের পথ খুজিয়া পায়ই নাই –উনবিংশ শতাব্দীও পাইয়াছে বলিয়া মনে হয় না। অতীত যুগের রহস্যময় অন্ধকারে এখনও এসব অঞ্চল আচ্ছন্ন—এখানে সবই সম্ভব । সেখানকার তাবু উঠাইয়া রামচন্দ্র আমীন ও আসরফি টিণ্ডেলকে সদর কাছারিতে লইয়া আসিলাম । রামচন্দ্রের অবস্থা দিন দিন খারাপ হইতেই লাগিল, ক্রমশঃ সে ঘোর উন্মাদ হইয়া উঠিল । সারারাত্রি চীংকার করে, বকে, গান গায় । ডাক্তার আনিয়া দেখাইলাম, কিছুতেই কিছু হইল না, অবশেষে তাহার এক দাদা আসিয় তাহাকে লইয়া গেল । এই ঘটনার একটা উপসংহার আছে, যদিও তাহণ ধটিয়াছিল বর্তমান ঘটনার সাত-আট মাস পরে, তবুও এখানেই তাহ বলিয়া রাখি । এই ঘটনার ছ-মাস পরে চৈত্র মাসের দিকে দুটি লোক কাছারিতে আমার সঙ্গে দেখা করিল। এক জন বৃদ্ধ বয়স যাট-পয়ষটির কম নয় ; অন্তটি তার ছেলে, বয়স কুড়ি-বাইশ । তাদের বাড়ী বালিয়া জেলায়, আমাদের এখানে আসিয়াছে চরি-মহাল ইজারা লইতে, অর্থাৎ আমাদের জঙ্গলে খাজনা দিয় তাহারা গরুমহিষ চরাইবে । অন্য সব চরি-মহাল তখন বিলি হইয়া গিয়াছে, বোমাইবুরুর জঙ্গলটা তখনও খালি পড়িয়া ছিল, সেটাই বন্দোবস্ত করিয়া দিলাম। বৃদ্ধ ছেলেকে সঙ্গে লইয়া একদিন মহাল দেখিয়াও আসিল, খুব খুশী বলিল— খুব বড় বড় ঘাস হুজুর, বহুৎ আচ্ছা জঙ্গল। হুজুরের মেহেরবাণী ন হ’লে অমন জঙ্গল মিলত না । রামচন্দ্র ও আসরফি টিণ্ডেলের কথা তখন আমার মনে ছিল না, থাকিলেও বৃদ্ধের নিকট তাহা হয়ত জঙ্গল ইজারা লইতে ঘেষে না রামচন্দ্র আমীনের সেই ব্যাপারের পরে । মাসখানেক পরে বৈশাখের গোড়ায় এক দিন বুদ্ধ লোকটি কাছারিতে আসিয়া হাজির, মহা রাগত ভাব, পিছনে সেই ছেলেটি কাচুমাচু ভাবে দাড়াইয়া । বলিলাম—কি ব্যাপার ? বুদ্ধ রাগে শক্তি কাপিতে বলিল—এই বঁদেরটাকে নিয়ে এলাম হুজুরের কাছে দরবার করতে । ওকে আপনি পা থেকে খুলে পচিশ জুতো মারুন, ও জন্ম হয়ে যাক্ । —কি হয়েছে কি ? - —হুজুরের কাছে বলতে লজ্জা করে । এই বঁাদর, এখানে এসে পৰ্য্যন্ত বিগড়ে যাচ্ছে । আমি সাত-আট দিন আজ প্রায়ই লক্ষ্য করছি, লজ্জা করে বলতে হুজুর —প্রায়ই মেয়েমানুষ ঘর থেকে বার হয়ে যায়। একটা মাত্র খুবরি, হাত অষ্টেক লম্বা, ঘাসে ছাওয়া । ও আর আমি দু-জনে শুই । আমার চোখে ধুলো দিতে পারাও সোজা কথা নয়। দু-দিন যখন দেখলাম, তখন ওকে জিগ্যেস করলাম, ও একেবারে গাছ থেকে পড়ল হুজুর। বলে—কই, আমি ত কিছুই জানি নে ? অারও দু-দিন যখন দেখলাম, তখন এক দিন দিলাম আচ্ছা ক'রে ওকে মার । আমার চোখের সামনে বিগড়ে যাবে ছেলে ? কিন্তু তার পরেও যখন দেখলাম এই পরশু রাত্রেই হুজুর-তখন ওকে আমি হুজুরের দরবারে নিয়ে এসেছি, হুজুর শাসন ক’রে দিন । হঠাৎ রামচন্দ্র আমীনের ব্যাপার মনে পড়িয়া গেল । জিজ্ঞাসা করিলাম—কত রাত্রে দেখেছ ? —প্রায়ই শেষরাত্রের দিকে হুজুর । এই রাতের দু-এক ঘড়ি বাকী থাকতে । –ঠিক দেখেছ, মেয়েমানুষ ? 藝 —হুজুর, আমার চোখের তেজ এখনও অত কম হয় নি। জরুর মেয়েমানুষ বয়েলও কম, কোনো দিন পরনে সাদা ধোয়া শাড়ী, কোনো দিন বা লাল, কোনো