পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कांड्छब्र সমস্ত সকালটা ত তাহার কাটিয়া গেল পরোপকার করিতে । এক মাসের মধ্যে তাহার টেষ্ট পরীক্ষা । কলেজেও হাজিরা দিতে হয়, না হইলে তাহার পাসেন্টেজ থাকে না। স্নানাহার করিয়া কলেজ-যাত্রী ট্রামে সে উঠিয়৷ বসিল । বিগত আটচল্লিশ ঘণ্টার নানা ছবি বার বার তাহার মনে উকি দিয়া যাইতে লাগিল । কলেজ হইতে ফিরিয়া আসিয়া চা খাইয়া সে পড়িতে বসিল । কিন্তু একটানা বেশীক্ষণ পড়া তাহার অদৃষ্টে ছিল না। বিকাল একটু গড়াইতে-না-গড়াইতে আবার ডাক আসিয়া পৌছিল । বৃদ্ধ পরশু ব্রাহ্মণভোজন করাইবেন, আজ হইতে যোগাড় না করিলে কি করিয়া হইবে ? সব তার বোনঝির উপর ছাড়িয়া দিলে সে কি মনে করিবে ? তাহাদেরও যথাসাধ্য করা উচিত । বিমল প্রথমে একটু বিরক্ত হইল। এই রকম কাজেঅকাজে তাহাকে ডাকিয়া পাঠাইলে তাহার পড়াশুনা হইবে কি প্রকারে ? তাহার পর আবার কি মনে করিয়া চিঠি লিথিয়া জানাইল যে সে রাত্রে গিয়া দেখা করিবে । কয়েকজন ব্রাহ্মণ এবং বাড়ীর গোটাবারো-তেরো লোক খাওয়াইবার জন্য একদিনের আয়োজনই যথেষ্ট, তাহার বেশী সময়ের দরকার নাই । S 8 বীরেনবাবুর মা বোনঝির বাড়ী আসিয়া খানিকটা নিশ্চিন্ত হইলেন বটে, কিন্তু এখানেও তাহার মনে পুরাপুরি স্বস্তি আসিল না। শহরে বাস করিয়া ইহারাও যেন কি রকম হইয়া গিয়াছে। বোনঝি সুরবালা ততটা কিছু বদলাইয়া যান নাই, কিন্তু জামাই, ছেলেমেয়ে সবাই যেন একটু কেমন কেমন। সকালে টেবিলে বসিয়া সবাই চা খায়। রান্নাঘরে পৈতাপর ঠাকুর আছে বটে, কিন্তু যে চাকরটা গরম জল প্রভৃতি লইয়া আসে, সে নিশ্চয়ই ব্রাহ্মণ নয়। টেবিলও ত অশুদ্ধ, শুধু জল দিয়া মুছিলেই কি আর পরিষ্কার হয় ? ছোট মেয়ে দুইটা ত সারাদিন জুতা পায়ে দিয়া হট হটু করিয়া বেড়ায়, গাড়ী চড়িয়া স্কুলে যায়, আর হি হি করিয়া হাসে । মোটের উপর বৃদ্ধার এ পরিবারটাকে বিশেষ পছন্দ হইল না। মাটির বাস। శ్రీNరిషా) তবে যাহা করিতে আসিয়াছেন তাহা ত করিয়া যাইতে হইবে । সন্ধ্যার পর বিমল আসিতেই তিনি তাহাকে ধরিয়া পড়িলেন । কাল বাজার করিয়া দিতে হইবে এবং মৃণালকে আনিয়া দিতে হইবে । মৃণালের সাহায্য পাইলে রান্না তিনিই সব করিতে পারিবেন, ক’জনই বা মানুষের ব্যাপার ? ইহার জন্য আবার ঠাকুর কেন ? দেশে কত বড় বড় ব্যাপারে তাহারা দুই জায়ে রাধিয়া দিয়াছেন তাহ অনেকগুলি ইতিহাস তিনি বিমলকে শুনাইয়া দিলেন । স্বরবালাও কিছু সাহায্য অবশ্যই করিবেন, তবে তাহার শরীর ভাল নয়, তাই মাসীম তাহার উপর বেশী চাপ দিতে চান না। পরিবেষণের তার যদি পঞ্চানন আর বিমল নেয় তাহা হইলে ব্যাপারটা সৰ্ব্বাঙ্গসম্পূর্ণ হয়। . বিমলের এমন ভাবে দুইটা দিন আগাগোড়া মাটি করার অবস্থা নয়, অথচ ইহাকে তাহা বুঝানোও ত যায় না ? পরীক্ষা যে কি পদার্থ, তাহার জন্য কতখানি আদাজল থাইয়া পরিশ্রম করিতে হয়, কিছুই ত ইহার জানা নাই ? সে অসম্মতি জানাইলে তিনি ধরিয়া লইবেন যে কাজ করিতেই ছেলেটার আপত্তি। অগত্যা তাহাকে রাজী হইতেই হইল । বীরেনবাবু বলিলেন, “আমনি যাবার মুখে আমাদের পঞ্চুকেও খবর দিয়ে যেও, সেও যেন কাল একবার আসে।” বিমল মুখে বলিল, “আচ্ছা।” মনে মনে বলিল, “সে ত অমনি এল ব'লে। তোমাদের জন্যে ত তার ঘুম হচ্ছে না। তবে বোর্ডিঙের দূতের কাজটা তাকে দিলে এলেও আসতে পারে ।” ফিরিবার পথে সে পঞ্চাননকে ডাক দিয়া গেল, কিন্তু তাহার দেখা পাইল না। অগত্য একটা চিঠি রাখিয়া দিয়া গেল যে সে যেন কাল গিয়া বীরেনবাবুর সঙ্গে দেখা করে। কি প্রয়োজন সেটার আর কিছু উল্লেখ করিল না। ". পরদিন সকালে চা খাইয়া সে সোজাস্বন্ধি মুকিয়া ষ্ট্রীটে উপস্থিত হইল। বীরেনবাবুবাহির হইয়া আসিতেই জিজ্ঞাসা করিল, “পঞ্চমামা আসে নি ?”