পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

33 ওপর রামদাস আমার প্রজ, আশ্রিতকে রক্ষা না করলে ধৰ্ম্মে পতিত হ’তে হবে মা! . মা একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ; ঘরের ভিতর হইতে স্ত্রী লিয়া উঠিল—আপনি গুতে ঠাই পায় না, শঙ্করাকে ডাকে, সে বৃত্তান্ত ! এইবার নিজেকে কে রক্ষে ক'রে খুজে দেপ । বিশ্বনাথ ডাকিল-বাণী মা, রাণী ম৷ কষ্ট গে ? এবার কঠোরতর স্বরে ঘরের ভিতর হইতে মন্তব্য হইল—ঘোষ-বাবুদের কাছে যে নিজের এই এতগুলি দেন আচে, সেগুলির জন্য হরিশ্চন্দ্রের মত স্ত্রী-পুত্র বেচতে হবে ! পকেট হইতে একটা বিড়ি বাহির করিয়া ধরাইয়া বিশ্বনাথ পলিল-– এক কাপ চ ক’রে দিতে পার মা ! মা বলিলেম—বেীমা কথাটা মিথ্যে বলে নি, বাব বিশু ' ' সম্মুখেই ভাঙা উঠানটার এক কোণে একটা বিড়াল বসিয়া বেশ আরামে বিশ্রাম-সুপ উপভোগ করিড়েছিল । সেটাকে লক্ষ্য করিয়াই বিশ্বনাথ এধার বিড়াল ডাকিতে আরম্ভ করিল—এf-ও-এ্যা-ওঁ--! যেন কোন বিড়াল প্রতিদ্বন্দ্বী দেখিয়া যুদ্ধে আহবান করিতেছে।. একেবারে নিখুঁত বিড়ালের ডাক । বিশ্রামরত বিড়ালট্য চকিত হইয়! চারি পাশ দেখিতে দেখিতে সৰ্ব্বাঙ্গের লোম ফুলাইয়া ডাকিয়া উঠিল—এ্যা-৪— - ম। আর একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া উঠিয়া গেলেন। স্ত্রী আসিয়া তেলের বাটি মামাইয়া দিয়া বলিল—বেরাল ডাকলে ঘোষবাবুরা ভুলবে না ! বিশ্বনাথ উত্তর দিল—চায়ের জন্তে বললাম যে একটু! - কোন উত্তর না দিয়া স্ত্রী চলিয় গেল, বিশ্বনাথ তেলের বাটিটা লইয়া বসিল । -> —বাবা! এই যে বাব! বলিয়া বাণী বহিৰারে । প্রবেশ করিয়াই ছুটিয়া আসিল । * —তোমার চিঠি আছে বাবা ! মা ফেলে দিয়েছিল, আমি কুড়িয়ে রেখেছি ! 密 鲇 t; —চিঠি ? কই মা, আন ত দেখি! " বাণী একখানা ধূলি-মলিন পোঃঞ্চার্ড আনিয়া বিশ্বনাথের প্রবাসী হাতে দিল, সত্যই চিঠিখান ফেলিয়া দেওয়া হইয়াছিল । ১৩৪৪ বড় সাহেব-কোম্পানীর নাম-ছাপান সাদা পোষ্টকার্ডের চিঠি, দুধের মত সাদা রঙের উপর ধুলার দাগ লাগিয়াছে। হাত দিয়া ঝাড়িতেই সদ্যলাগা ধুল অনেক ঝরিয়া গেল । বিশ্বনাথ দেখিল চিঠিখান তাহার এক দূরসম্পৰ্কীয় ভগ্নীপতি অমূল্য লিথিয়াছে। অমূল্য এক বড় সাহেবকোম্পানীর কয়লাকুঠার হেড ক্লার্ক। কয়লাকুঠতে থিয়েটার হইবে, তাই অমূল্য তাহাকে যাইতে নিমন্ত্ৰণ করিয়াছে। লিথিয়াছে—“আমাদের দল একেবারে নূতন, বহু কষ্টে এবার সাহেবের কাছে টাকা মধুর করাইয়াছি। প্লে ভাল না হইলে ভবিষ্যতে আর বোধ হয় টাকা পাওয়া যাইবে না । আপনার আসা চাই-ই, আমরা কেহ কিছুই জানি না, এ বিষয়ে কোন ওজর আপনার শুনিব না।” চিঠিখান মায়ের দিকে অগ্রসর করিয়া দিয়া বিশ্বনাথ বলিল-অমূল্য চিঠি দিয়েছে দেখেছ মা ? স্নান হাসি হাসিয়া মা বলিলেন—দেখেছি । —না গেলে অমূল্য রাগ করবে। ম। আবার একটু হাসিলেন । তার পর বলিলেন— বেীমা আসন্নপ্রসব হয়ে রয়েছেন— এ সময় বাইরে গেলে আমি এক কি করব, বল ? অমূল্য শুধু পত্র লিথিয়াই ক্ষান্ত হয় নাই, কল্পটি টাকাও সে পাঠাইয়াছিল। পরদিনই দশ টাকার একখানি মনিঅর্ডার আসিয়া হাজির হইল। কুপনে লেখা ছিল---আজই অথবা কালই আপনি রওনা হইবেন। বিশ্বনাথ সঙ্গে সঙ্গে ছুটিল ডাকবাংলোয় সাহেবের নিকট, রামদাসের বাপের বুকের কাঠ এখন তাহার মাথার উপর চাপিয়াছে। ভাগ্য তাহার ভালই বলিতে হইবে, সাহেব তাহাকে দেখিবামাত্র বলিলেন—এই যে, এইমাত্র আপনাকে ডাকতে পাঠাচ্ছিলাম । বিশ্বনাথ নীরবেই সাহেবের বক্তব্যের প্রতীক্ষায় বসিয়া রহিল । সাহেব বলিলেন—দেখুন, আজ আমার কাছে পাশ্ববৰ্ত্তী জমিদারদের ক'জন এসেছিলেন। তাদের অনুরোধ, যাতে ব্যাপারটা আপোষে মিটে যায়। আপনার মতের জন্ম আমি” অপেক্ষা করছি। কি মত আপনার ? বিশ্বনাথ অত্যন্ত খুণী হইয়া উঠিল, সে বলিল—সে খুব