পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

gNe ছেলেদের নিখুঁত ভাবে সাওতাল রমণী সাজাইয়া দিয়া সে নিজে সাজিল সাওতাল। মাথায় চূড়াবাধা পরচুলায় পালক গুজিল-বুকে, গুলা, হাতে পরিল কড়ির গহন, কপালে কালি দিয়া উৰি বিল, তার পর মালটা গলায় ঝুলাইয়া দলবলসমেত সে ষ্টেজের উপর বাহির হইয়া পড়িল । সাহেব মেমের দল হাসিয়া সারা হইয়া গেল। মাদল বাজাইতে বাজাইতে বিশ্বনাথের অঙ্গভঙ্গী, তাহার মৃত্য একেবারে নিখুত । মধ্যে মধ্যে তালের মাথায় যে, --উর-র-র--একটা শব্দ করিয়া লাফ দিয়া উঠিতেছিল। গানও সে নিজেই গাহিতেছিল। নাচগান শেষ করিয়া সে সাজঘরে পোষাক খুলিতেছিল, তাড়াতাড়ি এক জন ভক্ত শিষ্য তাঙ্গকে বাতাস দিতে আরম্ভ করিল, সত্যই সে ঘামিয় যেন স্বান করিয়া উঠিয়াছে। অমূল্য হাসিতে হাসিতে আসিয়া বলিল—এস ! সাহেবরা ডাকছে তোমাকে ! হাসিয়া বিশ্বনাথ বলিল—দাড়াও পোষাকটা খুলি। • —আরে ঐ পোষাকেই এস, খুব খুশী হবে। যাকে বলে একেবারে ড্যাম গ্ল্যাড ! পোষাক পরিবর্তন করিয়াই বিশ্বনাথ দেখা করিতে গেল। মনে মনে স্থির করিল এই স্বযোগে সাহেবকে একট চাকরির কথা বলিবে : বাড়ীর অবস্থা সত্যই অসহনীয় হইয়া উঠিয়াছে ! সাহেব খুশী হইয় করমর্দন করিয়া বলিল—ওয়াওরিফুল મિઃ dોધૂૌ ! বিশ্বনাথ ধন্যবাদ দিল, আপনারা খুণী হয়েছেন! মেমসাহেবের দল তখনও হাসিতেছিল। সাহেব সিগারেটকেস খুলিয়া সম্মুখে ধরিয়া বলিল-মাও ! বিশ্বনাথ ধন্যবাদ দিল । * সাহেব বলিল—আমি অমূল্যবাবুর কাছে সব শুনেছি মিষ্টার চৌধুরী ! তোমার পূর্বপুরুষ রাজা ছিলেন ।

  • মেমসাহেবের দল সবিস্ময়ে বিশ্বনাথের দিকে চাহিয়া রহিল। এক জন বলিয় উঠিল—সত্যি ! ।

সাহেব আবার বলিল-আভিজাত্যর সঙ্গে কালচারের বলিল-আমার সৌভাগ্য প্রবাসী ১৩৪৪ খুব নিকট-সম্বন্ধ ! মিষ্টার চৌধুরী, তোমার রক্তের মধ্যে ললিতকলার কালচার রয়েছে! বিশ্বনাথ তখন মুখর হইয়া উঠিয়াছে, সে কালচার লইয়া কথা আরম্ভ করিয়া দিল। চাকরির কথা তুলিতে ঘৃণা হইল । 喙 舉 徽 পনর দিনের পরিবর্তে বিশ্বনাথ দুই মাস সেখানে থাকিয়া গেল । কোন রূপেই সে আসিতে পারিল না। আশেপাশে প্রায় কলিয়ারীতেই বাঙালী বাবুদের থিয়েটারক্লাব আছে, তাহারা আসিয় তাহাকে ধরিল। আজ এ ক্লাব আসে—কাল আর এক দল, পরদিন আবার অন্ত দল, এই দশ দিন পরে প্লে দাদা, এ দশ দিন আপনি যেতে পাবেন ন! } সে এখানে সাৰ্ব্বজনীন দাদা হইয়া উঠিয়াছে। তাহার আবার ধরে— আপনাদের পূর্বপুরুষের সঙ্গে নবাবের যুদ্ধের কথা বলুন। ইতিমধ্যে দেশ হইতে সংবাদ আসিয়াছে তাহার একটি পুত্রসস্তান হইয়াছে। প্রস্থতি ও নবকুমার ভালই আছে। পরিশেষে প্রত্যেক পত্রেই মা লেখেন—কাজের কি কিছু সুবিধা করিতে পারিলে ? পত্র যখন পায় তখন সে একবার সঙ্কল্প করিয়া বাহির হয়, কিন্তু বাহির হইয়া সে-সঙ্কল্প সে রাখিতে পারে না। বহুবার এমন হইয়াছে। শেষ পত্র আসিল, ছেলেটির খুব অমুখ–এবং ঘোষবাবুরা নাকি নালিশ করিয়াছেন। তুমি পত্র পাঠ আসিবে। তখন হাতে তাহার এক কপর্দকও নাই । হাতে একটা আংটি ছিল সেটাকে পাচ টাকায় গোপনে বিক্রয় করিয়া সে ফিরিল। পথে সে কিনিল চার পয়সায় একখানি স্যাম্পেল সাবান ও একটি ছোট কোঁটা সস্তা স্কো । বাড়ীর দরজাতেই সে শুনিল—মৃদ্ধস্বরে বাড়ীর মধ্যে কায়ার ধ্বনি উঠিতেছে। সে একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া খাড়ীতে প্রবেশ করিয়া ডাকিল-বাণী ! বাণীমা, রাণীম বলিবার মত শক্তি তখন আর তাহার ছিল না। মা তাহাকে দেখিয়াই ফোপাইয়া কাদিয়া বলিলেন—এলে বাবা, আসতে পারলে r সোনার চাদ আমার বিনা-চিকিৎসায় মারা গেল বাবা ! ছি-ছি-ছি! আমার কপালে ছি! বলিতে বলিতেই তিনি নিৰ্ম্মমভাবে আপনার কপালে