পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাস্তুন কোথায় ছুটছে। কেমন ক’রে টাটু তার গায়ে এলিয়ে পড়ল। স্বকোমল ছুটি হাত তাকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে নিয়েছে। তার গায়েতে কম্বল টেনে দিলেন । এসেন্সের গন্ধটি কি স্বন্দর । এমন এসেন্স সে আর কখনও দেখে নি । টাটুকে যেন আরও বুকের মধ্যে টেনে নিয়েছে। তার চোখের জল কি টাটুর কপালে পড়ল ! কি মিষ্টি চুমু ! টাটুর আর কিছুই মনে পড়ে না। ষ্টেশনের হাকডাকে, বিত্র চকচকে আলোয় টাটুর ঘুম ভেঙে গেল। সারা গদিটা জুড়ে সে গুয়ে অাছে। গাড়ীতে ‘এক জন" ত নেই। কম্বলটা সে ঠেলে ফেলে দিলে। কেমন মুন্দর ফুলের গন্ধ আসছে। একটা মস্ত বড় সাদা গোলাপ তার বুকে আঁটা, তার পাশে এক তোড়া লিলি । ধিনি দরজা খুললেন, লাফিয়ে উঠে ষ্ঠ্যা" ব’লে চেচিয়ে টাটু তাকে ছু-হাতে জড়িয়ে ধরল—বাব । বাবা | —টাটু –টাটু ! শোফার তখন বেরিয়ে এসেছে । তিনি তার দিকে চেম্বে বললেন-বাস্দেও ! * সে স্বর গুনে বামুদেব সেলাম করতে ভুলে গেলা-হুজুর আমার কম্বর নেই। বিবিজী আসতে আসতে গাড়ী কবিকঙ্কণ-চণ্ডীতে প্রাচীন বাংলার চিত্র (ՆԵ-Պ ঘোরাতে বললেন ; হাওড়া এসে নেমে গেলেন, বললেন— একটা খুব ভুল হয়ে গেছে, টাটুবাবার কাছে হজুরের জন্তে চিঠি লিখে রেখে গেলেন। তিনি কারও দিকে না চেয়ে বললেন-বাসদেও ! —হজুর, পরমাত্মা জানেন— টাটুর বুকের সাদা গোলাপের পাশে পিনে-গ্ৰাট ছোট এক টুকরা কাগজে সেই চিঠি। গাড়ীর পাশের টেশনের সেই বিত্র চকচকে আলোয় টাটুর বাবা সেই চিঠি পড়লেন। জ্যাস্ত মানুষের মুখ এক মূহূৰ্ত্তে মৃত হয়ে গেল, নিরতিশয় বেদনায় শুধু দুই ভ্রর মধ্যের গভীর রেখা, মুখের কোণের ক্ষীণ রেখা স্পষ্ট হয়ে উঠল, আর টাটুর মতই গাঢ় বাদামী চোখ দুটি জলজল ক'রে উঠল। চিঠিতে বড় বড় অক্ষরে পেন্সিলে লেখা ছিল –তোমার স্ত্রীর স্বামীকে তার কাছ থেকে কেড়ে নিতে আমার বাধত ন, কিন্তু টাটুর বাবাকে টাটুর কাছ থেকে চুরি আমি করতে পারলুম না। আমার সঙ্গে আর তুমি দেখা করে না। চিঠি লিখে না। আমি প্রতিজ্ঞা করেছি তোমার সঙ্গে আর আমার দেখা ঘটবে না। ハ/ কবিকঙ্কণ-চণ্ডীতে প্রাচীন বাংলার চিত্র শ্ৰীমুশীলচন্দ্র কর মঙ্গলকাব্য রচনায় অনেক কবিই হাত দিয়াছিলেন। তন্মধ্যে কবিকঙ্কণ মুকুন্দরামের নামই বিশেষ উল্লেখযোগ্য । তিনি কাব্য রচনা করিলেন পল্পীজীবন লইয়া। পল্পীবাসীর দুঃখদৈন্ত, আচার-নিষ্ঠার কথা তিনি ষত হৃদয়গ্রাহী করিয়া বর্ণনা করিয়াছেন, তাহার সমসাময়িক আর কোন কবি তাহা পারেন নাই। তখনকার লোকে কি খাইত পরিত, কি ভাবিত, কেমন করিয়া ঘরকন্না করিত—এই সবই তিনি অতি প্রাঞ্জল ভাষায় চিত্রিত করিয়াছেন। সেকালের সমাজ এবং রাষ্ট্রকেও তিনি ভোলেন নাই। ফুল্পরার বার মাসের দুঃখের মধ্য দিয়া আমরা প্রাচীন দরিদ্র গৃহস্থের করুণ আৰ্ত্তধ্বনি শুনিতে পাই। কালকেতুর জীবন-মুকুরে প্রাচীন যুগের চরিত্র-বল ও মাহাত্মা প্রতিফলিত হইয়াছে। ভাড়ু দত্তের চরিত্রে -গায়ে মানে না, আপনি মোড়ল”—এই ভাবটি স্বন্দরভাবে পরিস্ফুট । মুরারি শীলের কথাবাৰ্ত্তার মারপ্যাচের ভিতর দিয়া কপট-প্রকৃতি লোকের স্বরূপ প্রকাশিত হইয়াছে। বণিক-সভায় মালা-চন্দনকে’ উপলক্ষ্য করিয়া বাঙালীর সামাজিকত আত্মপ্রকাশ করিবার স্থযোগ পাইয়াছে। লহন ও খুল্পনার কোন্দলের মধ্য দিয়া সপত্নী