পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ2ԵաԵա প্রবাসী S్సరిgg বিদ্বেষ তীব্র হইয়া ফুটিয়াছে । কংসনদীর কুলুধ্বনি । তাহার সহিত ফুল্পর ও কালকেতুর প্রেমময় স্থতি যেন মিশিয়া আছে । বিরহিণী খুল্পনাকেও আমরা তুলিতে পারি না, কখনও বা সে বিহবলfচত্তে পতি-ভ্ৰমে নিজীব অশোক ও কিংস্তক পুষ্পকে আলিঙ্গন করিতেছে, কখনও বা অনাথার মত সখীর কাছে বিলাপ করিতেছে । আর একটি বিষয়ের প্রতি আমাদের দৃষ্টি পড়ে। তাহ প্রতিবাসিনীদের পতিনিশা । গৌরীর এমন স্বন্দর স্বামী জুটিয়াছে দেখিয়া প্রতিবাসিনীরা অস্তরে অস্তরে জলিয়া-পুড়িয়া মরিতে লাগিল । শিবের মদনমোহন রূপের কাছে তাহাদের স্বামীদের বিরূপতা আরও স্পষ্ট হইয়া উঠিল, শতমুখে নিন্দ চলিল । খোড়া কুঞ্জ থাগ স্বামী কার স্বামী ব্যাধি । কাঙ্গিয় তাহার অবিরত লিঙ্গে বিধি । ধনী-দরিদ্র উভয় শ্রেণীর লোক-চরিত্রই এই কাৰ্যখানিতে স্বন্দরভাবে ফুটিয়াছে। এক দিকে কালকেতু ও ফুল্পরার দরিদ্র বেশ, অপর দিকে ধনপতি, ক্রমণ্ড,লহনা, খুল্পনা প্রভৃতি মহামূল্য পরিচ্ছদের চাকচিক্য ঝলমল করিয়া উঠিতেছে। বুলান মণ্ডল, মুরারি শীল প্রভৃতি মধ্যবিত্ত ঘরের লোক । ইহাদের জীবনেও জানিবার মত অনেক খুঁটিনাটি বিষয় ‘व्रटिष्ठ । তার পর বৃক্ষ কৰ্ত্তন', 'নীলাম্বরের পুষ্পচয়ন, পশুগণের বিলাপ" প্রভৃতি হইতে পশুপক্ষী, ফুলফল এবং বৃক্ষাদি সম্বন্ধে অনেক কথা জানা যায়। এমন কি রন্ধন-সংক্রান্ত সামাগু বিষয়টিও কবির চোখ এড়ায় নাই। সেকালে প্রচলিত অস্ত্রশস্ত্র, যুদ্ধের বাজনা প্রভৃতিরও দীর্ঘ তালিকা কবি দিয়াছেন। নানা দেশ হইতে যে-সকল সম্প্রদায়ের লোক আসিয়া বাংলায় বসতি স্থাপন করিয়াছিল, তাহাজের বিষয়েও অনেক কথা বর্ণিত হইয়াছে। এই সকল বর্ণনা খুব স্বাভাবিক এবং সত্য বলিয়াই বোধ হয়। চণ্ডীমঙ্গলের প্রত্যেক চিত্রটিই অপর হইতে স্বতন্ত্র অথচ কাহারও ঔজ্জল্যে কেহই মান इग्न नोंदे । প্রাচীন বাংলা-সংক্রান্ত ৰেৰে বিষয়গুলি জানিবার জন্ত আমরা নিরতিশয় উৎসুক, তাহার সম্বন্ধেই অপেক্ষাকৃত বিস্তৃতভাবে আলোচনা করিব"। 敏 দেশের তৎকালীন অবস্থা দেশের অধিকাংশ স্থান সে সময় ছিল বনজঙ্গলে ঘেরা। বনে যাহারা বাস করিত, বগুজন্তুদের সহিত যুদ্ধ তাহাদের লাগিয়াই ছিল। কালকেতুর সঙ্গে পশুরাজের যুদ্ধের ভিতর দিয়া তাহার স্পষ্ট আভাস মিলে । পণ্ডরাজ সনে যুঝে বীর কালকেতু । দেবাসুর রণ যেন হৈল সুধা হেতু । আবার দেখা যায় অরণ্যচারী ব্যাধজাতির সময় সময় অতিশয় পরাক্রান্ত ও দলবদ্ধ হইয়া বন কাটাইয়া নূতন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করিত। কালকেতুর উপাখ্যানেও দেখিতে পাই, যখন চণ্ডী-দত্ত অঙ্গুরীর মূল্যস্বরূপ সাত কোটি টাকা কালকেতুর হাতে আসিল, তখনই সে গুজরাট বন আবাদ করিয়া তথায় রাজধানী স্থাপন করিল। কিন্তু রাজ্য স্থাপন করিয়াই রাজা নিশ্চিম্ভ হইতে পারিতেন না । কেননা, অনেক সময় আবার পুরাতন রাজার সঙ্গে বিরোধ বাধিয়া ধাইত। নূতন রাজা প্রবল হইলে, পুরাতন রাজা সহজেই বশ মানিতেন । গুজরাটের গহন কানন যখন কালকেতুর রাজধানীতে পরিণত হইল, তখন দেবীর মায়ায় কলিজদেশ জলে ডুবিয়া গেল। ‘রাজার পাপে প্রজা ক্ষয় এই ধারণার বশবর্তী হইয়া প্রজাকুল কালকেতুকেই তাহাজের রাজা মানিয়া লইল এবং মুখে বসবাস করিতে লাগিল । কিন্তু তখন দেশ ছিল অরাজকতার মধ্যে। স্থায্য অধিকারের দোহাই কেহ গুনিত না। তাই কাহারও ধনসম্পত্তির নিশ্চয় ছিল না। পাঠানের হিন্দুরাজ্য পাইলেই লুণ্ঠন করিত। আবার মোগলদের আক্রমণে পাঠানরাও ব্যতিব্যস্ত হইয়া পড়িয়াছিল। এই সিংহ-শাৰ্দ্দলের লড়াইয়ের মধ্যে পড়িয়া সাধারণ লোকের জীবন দুৰ্ব্বিষহ হইয়া উঠিয়াছিল । চণ্ডী-কাব্যের কবি মুকুন্দরামকেও ভিটা ছাড়িয়া পলাইতে হইয়াছিল । সেই দুঃখ সরল ভাষায় কবি প্রকাশ করিয়াছেন, “নেউী চৌধুরী নহি না করি তালুক।” বড় জমিদার, তালুকদার হইলে না-হয় উপক্রত হইবার সঙ্গত কারণ ছিল, কিন্তু এই দরিদ্র ব্রাহ্মণকে লইয়া এত টান-হেঁচড়া কেন । আপামরজনসাধারণের উপরেও অত্যাচার চলিত। ভক্তির প্রভাব ও পূজা-আর্চা প্রাচীন সমাজে চণ্ডীমঙ্গল গানের প্রবল প্রভাব দেখা