পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কামরাঙা গাছের পাতা। বঁ-দিকের পাতাগুলি মেলিয় অাছে - আঘাতের ফলে ডান দিকের পাতা বুজিতেছে। কিন্তু তাঙ্গ ঠিক নহে । বৌদ্রের সময় ইহারা আপনাআপনিই উ%-নামা করিতে থাকে। লঞ্জাবতী বা বন-চাডাল-জাতীয় উদ্ভিদের স্বভাব সাধারণ উদ্ভিদ ইষ্টতে সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের । কিন্তু তথাপি একটু লক্ষ্য করিলেই সাধুরণ অনেক উদ্ভিদের মধ্যেও এরূপ পত্রসঞ্চালনের ক্ষমতা দৃষ্টিগাচর হইয়া থাকে। সন্ধ্যার অন্ধকারে বা বর্ষা-বাদলের দিনে অনেক উদ্ভিদের পত্রই আপনাআপনি মুড়িয়া ষায় ; আবার আলো দেখিলেই ঘুমের ঘোর কাটিয়া যায় এবং পত্র প্রসারিত করিতে থাকে। পত্রের এইরূপ সঙ্কোচন ও প্রসারণ যতই মন্দগতিতে হউক না কেন, ইহাতে তাহদের অঙ্গসঞ্চালন-ক্ষমতার প্রমাণ পাওয়া যায় । কাজেই দেখা যাইতেছে, প্রাণীজগং ছাড়াও আমাদের চতুর্দিকে বিস্তৃত এই বিরাট উদ্ভিদ-জগৎ ব্যাপিয়া জীবনের উচ্ছ,সি প্রবাহিত ইষ্টতেছে। কিন্তু প্রাণীজগতের বাহ লক্ষণগুলি সাধারণত তাহাতে পৰিস্ফুট না হইলেও এই অঙ্গসঞ্চালনক্ষম উদ্ভিদগুলির অদ্ভূত ব্যবহার প্রাণীজগতের সহিত যথেষ্ট গোঁসাদৃশ্বের পরিচয় দেয়। বৈজ্ঞানিক উপায়ে উদ্ভিদ-দেহের জীবন-ক্রিয়ার বিষয় অনুসন্ধান করিলে দখা যায়, এই অঙ্গসঞ্চালনক্ষম উদ্ভিদ ছাড়াও অস্কাঙ্ক সকল প্রকার উদ্ভিদেরই প্রাণীর জীবন-ক্রিয়ার সহিত কোনই পাথক্য নাই। আচাৰ্য্য জগদীশচন্দ্র তাঙ্গার জীবনব্যাপী সাধনায় এ বিষয়ের অতি নিগূঢ় রহস্ত উদঘাটন করিয়া দেখাইয়া গিয়াছেন। উদ্ভিদ ও প্রাণার জীবনের ঐক্য বুঝিতে হইলে বৃক্ষের আভ্যস্তরিক পরিবর্তন সম্বন্ধে বিস্তত বিবরণ জান প্রয়োজন, কিন্তু আভ্যন্তরিক পরিবর্তন কি উপায়ে জান। যাইবে বৃক্ষ উত্তেজিত বা অবসাদগ্ৰস্ত হইলে উঠার ভিতরের অদৃশ্য পরিবর্তন কেমন করিয়৯ বুঝিতে পাৱ৷ ৰবি ? আঘাত বা উত্তেজনায় গাছ সাড়া দিলে তাহ কোন ধপম ধরিতে ও মাপিতে পারিলে সেই উদেশ্ব সিদ্ধ হইতে পারে । ই ! বাহিরের শক্তি দ্বারা আহত হইলে অবস্থা-বিশেষে চীৎকার ক স্বী নতুবা হাত-পা নাড়িয়া প্রতিক্রিয়ার অবস্থা প্রকাশ করে। 커egsg জল-লঞ্জাবতী লতা। উপরের পাতা মেলিয়া আছে ; আঘাতের ফলে নীচের পাতাগুলি বুজিয়৷ আসিতেছে। বাহিরের আঘাত বা নড়াচাড়ার পরিমাণ অনুসারে সাড়ার আকৃতিপ্রকৃতি মিলাইয়া দেখিলেই জীবন-ক্রিয়ার বিভিন্ন অবস্থা জানিতে পার। ষায় । উত্তেজিত অবস্থায় অল্প নাড়ায় প্রচণ্ড সাড়া পাওয়া যায়, আবার অবসন্ত্র অবস্থায় অধিক নাড়ায়ও ক্ষীণ সাড়া দিয়া থাকে। মৃত্যুর সময় উপস্থিত হইলে, হঠাৎ সৰ্ব্বপ্রকার সাড়া দেওয়ার ক্ষমত। লোপ পায় । জীব আঘাত পাইলে সঙ্কুচিত হয়, সেই সঙ্কোচনষ্ট জীবনের সাড়া । বৃক্ষও আহত হইলে ক্ষণিকের জঙ্গ সঙ্কুচিত হয় ; কিন্তু সেই সঙ্কোচন অতি ক্ষীণ বলিয়া আমরা সচরাচর দেখিতে পাই না । কলের সাহায্যে সেই ক্ষীণ সঙ্কোচন বৃহদাকারে লিপিবদ্ধ হইতে পারে । আঘাতে যদি গাছ সাড়া দেয়, তবে সেই আঘাত অমুভব করিতে তাহার কত সময় লাগে ? বহিরের আঘাত ভিতরে কি করিয়া পৌছে ? আহার দিলে অথবা আহার বন্ধ করিলে কোন পরিবর্তন হয় কি না ? ঔষধ সেবন বা বিষপ্রয়োগে কি অবস্থা হয় ? জীবের হৃৎপিণ্ডের মত উদ্ভিদের কোন স্পন্দনশীল পেশী আছে কি না ? আচার্ষ্য জগদীশচন্দ্রের পরীক্ষার ফলে নিঃসন্দিগ্ধরূপে প্রমাণিত হইয়াছে যে, গাছ মাত্রেই বাহিরের আঘাত-উত্তেজনায় সাড়া দিয়া থাকে এবং এ-বিষয়ে জীবে উদ্ভিদে কোনই পাথক্য নাই । তবে লজ্জাবতী গাছ পাতা নাড়িয় সাড়া দেয়, আর সাধারণ গাছ দেয় না কেন ? অামাদের বাহুর এক পাশের মাংসপেশীর সঙ্কোচন-ফলেই হাত নাড়িয়া সাড়া দিতে পারি ; উভয় দিকের পেশী একই সময়ে সঙ্কুচিত হইলে হাত নড়িয়া সাড়া দেওয়া চলিত না । সাধারণ উদ্ভিদের পত্র-পল্লবের চতুৰ্দ্দিকের পেশী আহত হইয়। সমভাবে সঙ্কুচিত হয়, কাজেই কোন দিকেই নড়াচড় করিতে পারে না । যদি ক্লোরোফরম প্রয়োগে এক দিকের পেশী অসাড় করিয়া দেওয়া যায়, তবেই দেখিতে পাওয়া যাইবে আহত হইলে যে-কোন গাছ পাতা নাড়িয়া সাড়া দিবে ৯ ব্যাঙের গায়ে চিমটি কাটিলে তমুহূৰ্ত্তেই সাড়া পাঞ্চয়া যায় না—সাড়া পাইতে প্রায় এক সেকেণ্ডের শত ভাগের এক ভাগ সময় লাগিয়৷