পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৭৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कोछुन्म নামরহস্য ግመ● তাহাদের “একটি বিসদৃশ লম্ব, রোগ, বুটজুতাপরা, ধুতি প্রায় হাটুর কাছে উঠিয়াছে, চোখের নীচে কালিপড়া, ম্যালেরিয়া রোগীর চেহারা, বয়স বাইশ হইতে বত্ৰিশ পর্যন্ত যেটি খুশী হইতে পারে।” ইহার নাম “মৃত্যুঞ্জয় গাঙ্গুলী”। দ্বিতীয় ব্যক্তিটি “বেঁটে খাটো, অত্যন্ত দাড়িগোষ্ণসঙ্কুল, নাকটি বটিকাকার এবং আরও নানাবিধ শারীরিক স্বলক্ষণ সমাক্রান্ত। ইহার নাম দারুকেশ্বর মুখোপাধ্যায়।" যাহার যে নাম তাহাকে সে নামে না ডাকিয়া অঙ্ক নামে ডাকিলে খুশী হয় না—বিশেষতঃ ঐ নূতন নামকরণের মধ্যে যদি তাহার শারীরিক, ব্যবহারিক বা আর কোন প্রকারের কোন ক্রটির সম্বন্ধে কোন রকমের ইঙ্গিত থাকে। যাহার নাম বিশেষ স্বপ্রাব্য নয় সেও তাহার পরিবতন চায় না । “এমন কি যাহার নাম ভূতনাথ তাহাকে নলিনীকান্ত বলিলে অসহ বোধ হয়।* আর নামটিকে বিকৃত করিলে ধে পীড়া দেওয়া হয় তাহার যন্ত্রণ যে কিরূপ অসহনীয় তাহ সহজেই অনুমান করা যায়। “গিন্নি’গল্পের শিবনাথ .পণ্ডিতের এই তত্ত্বটি ভাল রকম জানা ছিল। বাচনিক যতগুলি অস্ত্র তাহার মুখ হইতে বাহির হইত এইটি তাহার মধ্যে সর্বাপেক্ষ নিদারুণ। তাই শশিশেখরকে “ভেটকি” এবং আশুকে “গিন্নি’ নাম দেওয়ায় তাহারা যেরূপ কষ্ট পাইছিল, পানিবেত ও বিছুটির জালাও তাহার তুলনায় অনেক আরামের । গ্রন্থোক্ত পত্রিপাত্রীর নামই নয়, গ্রন্থের নাম সম্বন্ধেও গ্রন্থকাররা মধ্যে মধ্যে যথেষ্ট চিন্তা করেন । চিস্তার বিষয় ইহাতে সন্দেহ নাই । পুস্তকের নামকরণ বিষয়ে লেখকেরা সাধারণত কয়েকটি বিষয়ে দৃষ্টি রাখেন। কেহ বা নামের মধ্য দিয়া গ্রস্থোত্ত বিষয়-বস্তুটির পরিচয় দিয়া দেন। যেমন— মেঘনাদবধ, বুত্রসংহার, সরল বাংলা অভিধান, ধাতুরূপ কল্পদ্রুম। কেহ বা আলোচ্য বিষয়ের মূলস্বত্রটি ধরাইয় দিয়াই নিশ্চিন্ত হন ; যেমন—কৃষ্ণকাম্ভের উইল, বৈকুণ্ঠের খাত, নীলদর্পণ। পাঞ্জ-পাত্রীর নাম লইয়া গ্রন্থের নাম দেওয়াটাই বোধ হয় সর্বাপেক্ষ অধিক প্রচলিত। উহার উদাহরণ উল্লেখ করা নিম্প্রয়োজন । কিন্তু প্রধান পাত্রপাত্রীর কোন প্রকার বৈশিষ্ট্য অথবা আলোচ্য বিষয়ের মূল ভাবের প্রতি লক্ষ্য করিম ষে সক্ষেত-মূল নাম গ্রন্থের পরিচয় প্রদান করে তাহাই এ যুগে সর্বাধিক জনপ্রিয় হইয়া উঠিয়াছে। बलिश्व भरन श्घ्रं । এরূপ নাম নিবাচনে যথেষ্ট দক্ষতার প্রয়োজন এবং সে দক্ষতার অভাব অনেক স্থলেই পরিস্ফুট। ক্ষুধিত পাষাণ" ‘নষ্ট নীড়", "অচলায়তন’, ‘আলালের ঘরের দুলাল', 'পণ্ডিত মশাই’, ‘দত্তা", "পরিণীতা’, ‘অরক্ষণীয়া’, ‘বলিদান” প্রভৃতি নামে গ্রন্থকারদের যে নাম-নিবাচনের নৈপুণ্য দেখিতে পাওয়া যায়, তাহ সর্বত্র স্বলভ নহে। o পুস্তকের প্রথম নাম পরিবতন করিয়া পরবর্তী সংস্করণে অস্ত নাম দিলে পাঠকের মনে স্বতঃই কৌতুহল জাগে । মনে হয়, প্রথম নামে লেখক যে ভ্ৰম করিয়াছিলেন, দ্বিতীয় নামে তাহা সংশোধন করিতে চাহিয়াছেন। কালির আঁচড় না দিলে অশুদ্ধও শুদ্ধ বলিয়া চলিয়া যায়, কিন্তু দাগ পড়িলে খাটিকেও দাগী মনে হয় এবং কাটা শব্দটির পক্ষোদ্ধার করিবার জন্ত মন তখন উদগ্রীব হইয়া উঠে। সেদিন যখন শ্ৰীমতী দত্তা’ ‘বিজয়া’ নামে নাট্যশালায় পদার্পণ করিলেন, তখন হঠাৎ মনে হইল ‘দত্তা’ নামটি দিয়া শরৎচন্দ্র কি এত দিন অনুতাপ করিতেছিলেন ? অথবা, উপন্যাসের নাট্যরূপে নামেরও পরিবতন আইন অনুসারে অবশুকতব্য ? 'দত্তা’র মধ্যে যে স্বক্ষ এবং মুনিপুণ ইঙ্গিতটি রহিমাছে, ‘বিজয়’ নামে তাহ নাই । পিতা বনমালী কন্যার নাম দিয়াছিলেন ‘বিজয়া'—দৈবজ্ঞ শরৎচন্দ্র রাশি-নাম লিখিয়াছিলেন ‘দত্তা’। র্তাহারই দেওয়া ‘দত্ত' নাম প্রত্যাহার করায় তাহাকে মৃত্তাপহরণ পাপে লিপ্ত হইতে হইল। ললিতা'র প্রচুর লালিত্য সত্ত্বেও পরিণীতা’ নাম বজন করিয়া রঙ্গমঞ্চে উঠতে দিতে আমাদের ইচ্ছা নাই । ‘অরক্ষণীয়া'র ‘জ্ঞানদা সম্বন্ধেও আমাদের এই মত । রবীন্দ্রনাথ ‘রাজা ও রাণী’র সংস্কৃত রূপকে যে “তপতী’ নামে অভিহিত করিয়াছেন, তাহার মধ্যে একটা স্বম্পষ্ট অর্থ লক্ষ্য করা যায় । স্বমিত্রার আত্মভাগের মধ্য দিয়া এই নাটক পরিণতির পথে অগ্রসর হইয়াছে। কাজেই ‘রাজা ও রাণী'র মধ্যে কাহারও নাম দিতে হইলে রাণুর নামটির প্রতিই দৃষ্টি পড়ে। কিন্তু "রাণী" বস্তুত রাণী নহেন, তাই শুধু রাণী’ নামটিও যথেষ্ট বিবেচিত হয় নাই। স্থমিত্র নাম রাখা যাইতে পারিত, কিণ্ড তপতীর মধ্যে ষে-সক্ষেতটি