পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

कोङ्घन्म ৰিবিধ প্রসঙ্গ—বঙ্গীয় রাষ্ট্রীয় সম্মেলনে সভাপতির বক্তৃত ՊՀs প্রকাশ করা শহরের বড় বড় কাগঞ্জগুলিরও কৰ্ত্তব্য, তাহাতে সন্দেহ নাই, এবং প্রথম প্রথম তাহ সম্ভবপরও হইতে পারে । কিন্তু পল্লীসংস্কার ও পুনরুজ্জীবনের কাজ সকল জেলার { সকল না হইলেণ্ড ) বহু গ্রামে চলিতে থাকিলে সমুদয় বৃত্তান্ত মুদ্রিত করা বৃহত্তম কাগজের পক্ষেও সম্ভবপর না ইষ্টতে পারে। এই জন্ত প্রত্যেক জেলার ও মহকুমার কাগজগুলির এই কাজটি করা উচিত । শহরের দৈনিক ও সাপ্তাহিক গুলি হইতে পৃথিবীর নানা দেশের, ভারতবর্ষের ও বঙ্গের নানা খবর সংগ্ৰহ করিয়া ছাপা সহজ । তাহদের কোন কোন প্রবন্ধ উদ্ধৃত করাও সহজ । আদালতের নিলামের বিজ্ঞাপন ছাপিলে ত লাভই হয়। কিন্তু যে কাজটি শহরের কাগজে অল্পপরিমাণেই হয় এবং অধিক পরিমাণে মফস্বলের কাগজেই হইতে পারে, তাহা মফস্বলের কাগজগুলিকেই করিতে হইবে। প্রথম প্রথম হয়ত র্তাহীদের বামুই বাড়িতে পারে, কাটতি না-বাড়িতে পারে। কিন্তু কালক্রমে কাটুতিরও বৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী। “বন্দেমাতরম্ সঙ্গীতের অঙ্গচ্ছেদ” ' কংগ্রেসের কার্য্যনিৰ্ব্বাহক সভা বন্দেমাতরম্ সংগীতের প্রথম দুটি কলি গাইবার বিধি দিয়া বাকী সমস্তটি গাওয়া নিষেধ করিয়াছেন। বিষ্ণুপুরে রাষ্ট্রীয় সম্মেলনে অভ্যাসবশতঃ ছুটি কলি অতিক্রম করিয়া আর একটি পংক্তি গাইবামাত্র তাহা বন্ধ করিয়া দেওয়া হয়, এবং খুড়ি দিয়া আবার কেবল ছুটি কলি গাওয়ান হয় । কংগ্রেসের হুকুম তামিল করা কংগ্রেসী সব প্রতিষ্ঠানের অবশুকৰ্ত্তব্য। কিন্তু হুকুম সত্ত্বেও বাংলা দেশের হিন্দুদের মনের ভাব কংগ্রেসী হিন্দুরাও প্রকাশ করিয়া ফেলিতেছেন। শ্রীযুক্ত রাধাগোবিন্দ রায় তাহার অষ্টি ভাষণে এ-বিষয়ে যাহা বলিয়াছেন, তাহার কিয়দংশ উদ্ধৃত করিতেছি । - “বন্দেমাতরম্ সঙ্গীতের অঙ্গচ্ছেদ করিয়া নিখিল ভারত কংগেস কমিটী বাঙালীর হৃদয়ে দারুণ আঘাত করিয়াছেন । সাম্প্রদায়িকভাবাপন্ন কতিপয় তথাকথিত মুসলমান-নেতাদের ইসন ইঙ্গিতে হিন্দু-মুসলমান-মিলনপ্রয়াসী কংগ্রেস নেতৃবর্গের এইরূপ আচরণ হিন্দু বাঙালীকে অতিশয় পীড়া প্রদান করিয়াছে। ‘বশেমাতরম' সঙ্গীত কংগ্রেস আন্দোলনের সহিত অচ্ছেদ্যভাবে উচিত। সমগ্র ভারতবর্ষ স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয় প্রকৃতির নির্দেশে এই পূত সঙ্গীতকে ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের শীর্ষদেশে স্থান És দিয়াছে—বন্দেমাতৰম’ শব্দটিকে দেশসেবার মহান শাস্ত্ররূপে গ্ৰহণ করিয়াছে। এই পবিত্র শব্দ ভারতের জনসাধারণের হর্ষউল্লাস, শোক-দুঃখ, তেজবীৰ্য্য প্রকাশের তুর্য্যধ্বনিরূপে গ্রহণ করিয়াছে। এহেন অপার্থিব সঙ্গীতের অঙ্গচ্ছেদ করিয়া নিখিলভারত কংগ্রেস কমিটীর বর্তমান নায়কগণ যেন বঙ্গমাতা তথা ভারতমাতার অঙ্গচ্ছেদ করিয়াছেন । সাম্প্রদায়িক ভাবে আচ্ছন্ন মুসলমান ভাইগণ হিন্দু ভাইদের সহিত বিচ্ছিন্ন হওয়াতে বঙ্গমাত যে অঙ্গহীন হইয়াছেন—ইহা কি তাহারই দ্যোতক ? কংগ্রেসের আদশ গ্রহণ করিয়া ভারতের স্বাধীনতা কামনায় যে সমস্ত ত্যাগী মুসলমান নেতৃবৃন্দ ৪৭ বৎসর কাল দেশষেবা করিয়াছেন ঠাতাদের মধ্যে কখনও কাহারও মনে এই সঙ্গীতের ভিতর মূৰ্ত্তিপূজার দোষ স্পশ করে নাই।...ভোটের জোরে একটা জাতির প্রাণে শেল নিক্ষেপ করা যে কত নিষ্ঠ বৃত, তাহ বাঙালী অমুভব করিতেছে । অঙ্গচ্ছেদ করিয়াও এই পবিত্র সঙ্গীতকে ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে অঙ্গতম বলিয়া স্বীকার করা হইয়াছে মাত্র । এই গীত জাতীয় গীতের মধ্যে সৰ্ব্বপ্রথম সমগ্র ভারতে গৃহীত হইয়াছে জানিয়াও জাতীয় মহাসভার উদ্বোধন-সঙ্গীত বলিয়। স্বীকৃত হয় নাই । বঙ্গীয় রাষ্ট্রীয় সম্মেলনের সভাপতি শ্রীযুক্ত যতীন্দ্রমোহন রায় মহাশয় কিঞ্চিং ভিন্ন স্বরের কথাও বলিতে বাধ্য হইয়াছেন। তিনি বলিয়াছেন :– কিছুদিন হতে "বন্দেমাতরমূ" নিয়ে বিরোধের আর এক আছিল খাড়া হয়েছে । দেশ-প্রীতির প্রকাশক হুঙ্কার হিসাবে “বন্দেমতেরম্"-এর তুলনা নাই। এই কয়টি শব্দ যেখান থেকেই নেওয়া হোক, প্রকাশ-শক্তি ও ধ্বনি-মাধুর্য্যের দিক দিয়ে বিবেচন৷ করলে মনে হয় শেষ পর্য্যস্ত নিজের অস্তুর্নিহিত শক্তিবলেই জাতীয় জীবনে এই মন্ত্র অক্ষয় হয়ে থাকবে । সমগ্র গানটি জাতীয় সঙ্গীতরূপে গৃহীত হওয়ার বিরুদ্ধে, সভা-সমিতির পরিমিত সময় হিসাবে এক দৈর্ঘ্য ভিন্ন আর কোনও আপত্তি উঠতে পারে, এ মনে আসে নাই । কিন্তু আপত্তি এসেছে । জটি রাখতে হ'লে আপত্তি খানিকট মেনেই চলতে হবে । সুশিক্ষায় গোড়ামি নষ্ট হয়। দেশের লোককে শিক্ষিত করার কষ্ট স্বীকার না করলে তাদের অসংস্কৃত আবেগের আঘাত সহ করা ছাড়া উপায় কি ? বঙ্গীয় রাষ্ট্রীয় সম্মেলনে সভাপতির বক্তৃত৷ বঙ্গীয় রাষ্ট্রীয় সম্মেলনের বিষ্ণুপুর অধিবেশনে সভাপতি ঐযুক্ত যতীন্দ্রমোহন রায় মহাশয়ের বক্তৃতার একটি বিশেষত্ব তাহার ভাষা। তিনি চলতি বাংলায় নিজের বক্তব্য বলিয়াছিলেন। তিনি নিজের হৃদগত ভাব অসস্কোচে প্রকাশ করিয়াছিলেন। কংগ্রেসী দলের দোষক্রটির উল্লেখ করিতে