পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

جاسوله মহীতোষের মা শয্যা লইয়াছেন, এ-যাত্রা রক্ষা পান কিনা সন্দেহ ! সন্তানকে একবার দেপিবার আকুল প্রার্থনা পত্রের প্রতি ছত্রে পরিস্ফুট । অনাড়ম্বর সহজ প্রার্থনা, ভাষার পারিপাট্য নাই। পুকুরের ষে অংশে গভীর জল সেখানে ঢ়িল ফেলিলে যেমন গম্ভীর শব্দ হয়, তেমনই এই অতি সংক্ষিপ ‘একবার এস’ মহীতোষের স্নেহ-সরোবরের অথই জলে অস্তমুখীন আৰ্ত্তনাদ তুলিল। মা আপন জবানীতে অন্যকে দিয়া পত্র লিখাইয়াছেন । হয়ত তিনি শয্যায় চক্ষু মুদিয়া পড়িয়া দুঃসহ রোগযন্ত্রণায় ছটফট করিতেছেন । হয়ত সেই সঙ্গে মহীতোষের আগমনমুহূৰ্ত্তের উল্লাসে সেই নিদারুণ বেদনাকে মনে স্থান দিতেছেন না। আশা-আনন্দের লঘুপক্ষে ভর করিয়া দীর্ঘ দিন ও দীর্ঘতর রাত্রি কাটিতেছে, লুতাতন্তুজাল বুনিয়া মায়ামুগ্ধ মাতৃহৃদয় আপন তীব্র বেদনায় ও নিবিড় আনন্দে প্রতিনিয়ত দোল থাইতেছে । 8 মহীতোষ চিঠিখানা হাতে করিয়া সহকৰ্ম্মী মুরেনের পানে চাহিল। নিৰ্ব্বিকার চিত্তে সে লেজারে অঙ্কপাত করিয়া চলিয়াছে । আপিসে আসিয়া বসিলে বাড়ীর চিন্তা সে ভুলিয়া স্বায় ; মুখী বটে ! s অল্প কাশিয়া লেজারে একটা শব্দ তুলিয়া মহীতোষ বলিল, “সুরেন, শোন ।” স্বরেন মুখ তুলিয়া চোখের ইসারায় মর্থীতোষকে একটু অপেক্ষা করিতে বলিয়া লেজারে কয়েকটি অঙ্কপাত করিল। পরে লেজার বন্ধ করিয়া বলিল, “বল ।” মহীতোষ বলিল, “আজ এইমাত্র একখানা চিঠি পেলাম দেশ থেকে।" একটু থামিয়া বলিল, “মার খুব অমুখ।” “বটে, তাহ’লে তোমার যাওয়া উচিত।” “উচিত হ’লেও ষাই কি ক’রে বল। এই সবে নূতন কোলিয়ারিটা নেওয়ার বন্দোবস্ত হ’ল, হাতে কাজের অস্ত নই।” স্বরেন বলিল, সাহেব না হোক, বড়বাবুর কাছে ছাড়পত্র পাবে কিনা সন্দেহ ।” 钱 প্রবাসী SNE88 মহীতোষ স্বরে দোর ছিয়া বলিল, “কিন্তু মার অসুখ, যেতে আমায় হবেই।” সুরেন ক্ষণকাল ভাবিয়া বলিল, “কি অমুখ ?” “তা ত কিছু লেখা নেই । শক্ত অমৃথ, আশা নেই ।” “কে লিখেছেন f" “মার জবানী ।” “তুমি ত পাচ বছর ও-মুখে হও নি। মার প্রাণ ত, হয়ত একবার দেখবার জন্য অসুখের কথা লিখেছেন।” “না হে, আমার মাকে তুমি জান না। আমি তার একমাত্র ছেলে, মুতরাং স্নেহের দুর্বলতা তার যথেষ্ট । তৰু, আমার অসুবিধা ঘটিয়ে মিথ্যে অমুখের কথা তিনি লেখেন না কোন দিন ।” মুরেন বলিল, “যাই বল, পাচ বছর না-দেখায় স্নেহের সংযম রক্ষা করা কঠিন । যাও না একবার বড়বাবুর কাছে, কি বলেন, দেখ ” বঁচিবার 叙 পত্ৰখানা মহীতোষ বড়বাবুর হাতেই তুলিয়া দিল। বলিল, “স্যর, এই দেখুন চিঠি। মা বাচেন কিনা সন্দেহ, বাড়ী যেতে হবে ।” &. বড়বাৰু পত্র না পড়িয়াই মহীতোষের মুখের পানে আশ্চৰ্য্য দৃষ্টিতে চাহিয়া বলিলেন, “বাড়ী ! নতুন কোলিয়ারির লেজারটা না খুলেই ?” “সে হিসেব ঠিক করতে এক মাস লাগবে, স্যর ।” “তাহলে এক মাস পরেই ছুটি নিয়ো ।” মহীতোষ মনে মনে রুষ্ট হইয়া বলিল, “এক মাসে লেজার কমপ্লিট হতে পারে, মার দেখা হয়ত ইহজীবনে পাব না।” বড়বাবু হো হো করিয়া হাসিলেন, “আরে, তুমি ত বড় সেন্টিমেন্টাল ! অমুখ হ’লেই কি লোক মারা যুায়। শোন তবে আমার জীবনের একটা গল্প। সবে নতুন চাকরি, এক মাসও হয় নি; বাড়ী থেকে টেলিগ্রাম এল বাবার অস্থখ । বেলা তখন বারটা । ছুটি চাইতেই বড়বাৰু বললেন, ‘ছোকরা এত উতলা হ’লে কখনও আপিলে