পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

た5石 A চাকরি চলে । পাচটা বাজুক, ঠার পর বেয়ে। বাবা গেলে ফিরে পাবে না এ-কথা যেমন সত্য, চাকরি গেলেও পাবে না এ তার চেয়েও মৰ্ম্মান্তিক সত্য ।” বাবার শোক দু-দিনে ভুলবে, কিন্তু পেটের চিন্তা যত দিন বঁাচবে ভুলতে পারবে ন। তার কথা শিরোধাৰ্য্য করলাম। পাচটার পর বাড়ী গিয়ে অবশু বাবাকে দেখতে পাই নি । তখন মনে মনে খুব রাগ হ’লেও, আজ ভাবি, অন্নগতপ্রাণ কলির জীবকে বড়বাৰু সেদিন কি অমূল্য উপদেশই দিয়েছিলেন ।” মহীতোষ ঈষৎ বেগের সহিত বলিল, “আমরা নব্বই টাক মাইনের কেরানী, আমাদের সেণ্টিমেণ্টালিটি তাই বেশী : ' বড়বাবু বলিলেন, “আরও এক কথা। অদৃষ্ট মান ত ? হিন্দুর ছেলে, বাঙালীর ছেলে, ওটা না মেনে উপায় নেই। তবেই বোঝ, অদৃষ্টের লেখা খণ্ডাবে তোমার সাধ্য কি । মিছিমিছি মন খারাপ ক’রো না, কাজ করগে । টেলিগ্রাম নয়, সামান্য চিঠি–এর জন্য উতলা হয় কখনও । তেমন গুরুতর হলে টেলিগ্রাম আসত নিশ্চয়।” শেষের কথা কয়টি মহীতোষকে কিঞ্চিং সানা দিল । জরুরী চিঠি ন-আসিয়া জরুরী তার আসিলে ভাবনার কারণ ছিল বটে। হাজার হোক, বড়বাবু, একটা অভিজ্ঞতা আছে ত ! . ჯა দুই দিন হইল ছোট ছেলের অল্প অল্প গ৷ গরম হইতেছিল। আপিস হইতে বাড়ী ফিরিয়া আজ মহীতোষ দেখিল, জর তার বেশীই হইয়াছে। সোনার মা শিয়রে বসিয়া পাখার বাতাস করিতেছে ও রুগ্ন ছেলের মাথায় হাত বুলাইতেছে। জামা কাপড় না ছাড়িয়াই মহীতোষ উদ্বিগ্ন স্বরে ডাকিল, “সোনা ।” জৱঘোরে অচৈতন্ত সোনা চক্ষু মেলিল না, কিংবা অক্ষুট কোন শব্দও করিল না। 40 মহীতোষের স্ত্রী বলিল, “তুমি আপিস যাওয়ার পর ভাত খাবার বায়না ধরলে, তার পর ভাত খেয়েই ছন্থ করে জর এল * - মাতৃভক্তি ومع سواه মহীতোষ বলিল, “ডাক্তার ডাকা হয়েছে ?” স্ত্রী বলিল, “কে ডাকবে ? নস্কদের আজ ক্রিকেটম্যাচ, ইস্কুল কামাই ক’রে সেই দশটার সময় বেরিয়েছে।” মহীতোষ রাগ করিয়া বলিল, “যত সব ভূত কোথাকার । বুড়োধাড়ি ছেলে, খালি খেলা আর খেলা ৷ দূর করে দিতে হয় সব বাড়ী থেকে ।” কাপড়-জামা না-ছাড়িয়াই গজগজ করিতে করিতে মহীতোষ বাহির হইতেছিল, স্ত্রী বলিল, “মুখে হাতে, জল দাও, একটু জিরোও, তার পর যেয়ো ।” মহীতোষ রুক্ষম্বরে বলিল, “জুড়োব চুলোতে শুয়ে। আগে ডাক্তার ডেকে আনি ।” a তিন দিন পরে সোনার জর ছাড়িয়াছে । আজ সে চোখ মেলিয়া চাহিতেছে ও বাবার সঙ্গে দুই-একটি কথা বলিতেছে। মহীতোষের মুখে আনন্দের ছায়া । সোনার মাথায় হাত বুলাইতে বুলাইতে সে বলিল, “আজ আপিস যাই, কি বল সোনামণি ?” সোনা ক্ষীণ কণ্ঠে আব্দার ধরিল, “না ।” “ন। কি রে? তিন দিন আপিস কামাই করেছি, আজ না গেলে সাহেব বকবে যে, সোনা ।” সোনা গাল ফুলাইয়া বলিল, “বকুক গে। তোমাদের সাহেবটা ভারি দুই কেন, বাবা ? খালি খালি বকে কেন ?” “পড়া না-বলতে পারলে তোমাদের মাষ্টার কেন বকে, সোনা ?” “সায়েব বুঝি রোজ তোমাদের পড়া নেয় ? কই বাড়ীতে ত বই খুলে কখনও পড় না ?” এমন সময় সোনার মা ঘরে ঢুকিতেই মহীতোষ তাহার পানে চাহিয়া হাসিয়া বলিল, “গুনছ, তোমার সোনামণি কি বলে ? বলে আমি বাড়ীতে ত পড়ি না। তুমি কিবল ?” e - স্ত্রী হাসিয়া বলিল, “ঠিকই ত বলেছে, সোনা ।” “ঠিক বলেছে ? ককখনও নয়। সকাল থেকে: বেলা নটা অবধি হাটবাজার; দোকান, পড়া নয় ? বেলা,