পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র দেরি করে কাজ নেই। ঐ ਅਿਰ ডেকে আন, ও ত ঘরেরই ছেলের মত।” বিমলকেও ডাকিয়া আনা হইল। এক লাইনে বসিলেন বীরেনবাবু, বিমল আর বাড়ীর একটি ছেলে। অন্য লাইনে বসিল মেয়ের দল। বাড়ীর কর্তা কাজ কামাই করিতে পারেন না, তিনি দশটার মধ্যেই যাহা রান্না হইয়াছিল খাইয়া বাহির হইয়া গিয়াছেন। বিমল খায় সাধারণ কলিকাতাবাসী ছেলেদের মতই । বৃদ্ধ কেবলই অমুখোগ করিতে লাগিলেন “তুমি ত কিছুই খাচ্ছ না ভাই, তোমাকে শুধু খাটিয়েই মারলাম।” বিমল বলিল, “আজকালকার ছেলেরা এর চেয়ে বেশী খেতে পারে না ঠাকুরমা ।” বীরেনবাবু বলিলেন, “কেন, এই যে আমাদের পঞ্চ, সেও ত আজকালকারই ছেলে, বেশ ত খেতে পারে।” বিমল হাসিয়া বলিল, “ওরে বাপ রে, পঞ্চমামার সঙ্গে কার তুলনা ? আমাদের সাধ্যিও নেই ওর সঙ্গে পাল্লা দুেবার ” 繪 মৃণাল মনে মনে বলিল, “না হ’লে আমন চমৎকার চেহারা হয় ।” খাওয়া-দাওয়া চুকিয়া গেলে, বিমল আবার বাহিরে চলিয়া গেল । তাহার ইচ্ছা ছিল অতঃপর মেসে ফিরিবার, কিন্তু বীরেনবাবু তাহাকে ছাড়িতে নারাজ। বলিলেন, "দিনটা ত মাটিই হয়েছে বাবা, তবে আর কী-ঘন্টার জন্যে কেন ? সব চুকিয়ে রাত্রে দুটাে ভাতে তাত থেয়ে একেবারে মেসে গিয়ে ঘুমিয়ে থেকে ।” বিমল বলিল, “আজকের মত ঢের হয়েছে, আর তাতে ভাত খাবারও জায়গা নেই। আর কাজ কি-ই বা বাকী আছে ?” বীরেনবাৰু বলিলেন, “মিনুকে তার বোর্ডিঙে পৌছে দিয়ে আসতে হবে না ? আমার ত বাপু এ আজব শহরের রুস্তায় পা দিলেই মাথা ঘুরে যায়। এই কাজটুকু ক’রে দিতেই হবে।” Q বিমল আর আপত্তি না করিয়া থাকিয়া গেল । সন্ধ্যার মুখে মৃণাল চুল বাধিয়া কাপড়চোপড় বদলাইয়া ধাইবার জন্ত প্রস্তুত হইল। বৃদ্ধ রাতটা থাকিয়া যাইবার মাটির ৰাম৷ వg জন্ত অনেক অনুরোধ করিলেন, কিন্তু আর বেশী সময় নষ্ট্র করিতে মুণালের সাহস হইল না। রাস্তায় পা দিয়া বিমল বলিল, “এবার না-হয় একখানা গাড়ী করা যাক ৷” মৃণাল বলিল, “কি দরকার ? ট্রামে এসেছি ট্রামেই যাব ।” বিমল একটু ইতস্ততঃ করিয়া বলিল, “বাড়ীর ওঁরা যদি কিছু মনে করেন ?” বীরেনবাবু একটু কৃপণ মানুষ, যেখানে চার আনায় সারা যায় সেখানে বারো অানা খরচের সম্ভাবনা তাহার মনে বড় আঘাত দেয় । তিনি ব্যস্ত হইয়া বলিলেন, “আরে না, না, মল্লিকদাদ আমাদের সেরকম মানুষই নয়, অত গোড়ামি ওঁর নেই।” মৃণাল আন্দাজে বুঝিল, বিমল কেন আপত্তি করিতেছে। মনটা তাহারও বিগড়াইয়া গেল, এখনই কি পঞ্চাননের কর্তৃত্ব মানিয়া তাহাকে চলিতে হইবে ? সে বলিল, “মামা কিছুই মনে করবেন না, আমি ট্রামেই যাব।” ট্রামেই চড়িয়া বসিল তিন জনে। মৃণালকে বোর্ডিঙে পৌছাইয়া দিয়া বিমল সোজা নিজের মেসে চলিয়া গেল । বীরেনবাবু বার দুই-তিন যাতায়াত করিয়া রাস্তাটা চিনিয়া ফেলিয়াছিলেন, তিনি আর পয়সা, না খরচ করিয়া আস্তে আস্তে হঁাটিয়াই বাড়ীর দিকে অগ্রসর হইলেন । দুপুরে ঠাসিয়া খাওয়ার ফলে পঞ্চাননকে বাড়ী গিয়া খানিক বিশ্রাম করিতে হইয়াছিল । বিকাল হইতেই সে হাতমুখ ধুইয়া বাহির হইয়া পড়িল। একটু হাট-চলা করিলে শরীরটাও ভাল বোধ হইবে, আর বীরেনবাবুদেরও একবার খবর লওয়া দরকার। শুধু খাইয়া বিদায় হইয়া গেলে তাহারা ভাবিবেন কি ? আত্মীয় ন হইলেও এক গ্রামের লোক ত বটে ? তাহারই বেশী করিয়া উহাদের সাহায্য করা উচিত ছিল, কিন্তু বিমূলে হতভাগা যে “গায়েমামে-না-আপনি-মোড়ল ।” তাহার জালায় কাহারও কিছু করিবার জো থাকিলে ত ? ছেলের মতলব যে ভাল নয় তাহা বুঝাই যাইতেছে। তবে মুখের বিষয় আমন চালচুলাহীন ছেলেকে কেহই Yধীননের প্রতিদ্বন্ধীরূপে গ্রহণ