পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবাসী 纖 ১৩৪৪ بسواعي مسوا 鬱 পড়ল। এখানে দারুণ শীত, গণয়ে তিনটা গরম স্কুলে যায়। সে স্কুলে যাওয়া দুই-দশ পা নয় । তিন ফামার উপর একটা ওভারকোট ছিল ; কিন্তু বোঝ} হাজার ফুট নীচেও তারা একলাই যায়, দুই-তিনটা বস গেল। * তাতেও কাজ চলবে না। ভাগ্যে সঙ্গে কি বৈদ্যুতিক ট্রেন বদল করেও তারা একলা যায়। এরা একটা ছোট কোট ছিল তাই রক্ষা। জাপানে ষে নাকি কখনও হারায় না কিংবা গাড়ী চাপা পড়ে না। সৰ্ব্বত্রই কোন দ্রষ্টব্য জায়গাতেই বাথরুম, চা খাবার ঘর, হোটেল, আগুন পোয়াবার জায়গ। ইত্যাদি যথাযথস্থানে থাকে। এইখানে একটা চা খাবার ঘরে আগুনের পাশে দাড়িয়ে আর একটা কোট পরে ফেললাম। কিন্তু পা নিয়ে মুস্কিল। পায়ে মাত্র এক জোড়া মোজ আর এক জোড়া স্তাণ্ডাল জাতীয় জুতা। এদিকে সমস্ত রাস্তা বরফে সাদা হয়ে আছে। যেখানে বা বরফ নেই, সেখানে বরফ গলে এক গাদ জল। রাস্তাগুলো খুব ভাল, তাই কাদা হয় নি। কোন রকমে পা বঁচিয়ে ওই জলের উপরই আঙুলে ভর দিয়ে হাটতে হল, বরফে পা দিলেই ত পা যাবে ডুবে । খাচাগাড়ীতে ছয়-সাতআট বছরের কতকগুলি ছোট ছোট ছেলে এসেছিল, বোধ হয় কোবে স্কুল থেকে রোক্কোতে বাড়ী আসছে। তাদের পায়ে সব ষ্টাট পৰ্য্যন্ত টপবুট, কাধে একটা ক’রে ব্যাগ। আমরা যেমন পা বাচাতে ব্যস্ত, তারা তেমনি প। ভেজাতে ব্যস্ত। ভাল রাস্তায় বরফ দেড় ইঞ্চির দুই ইঞ্চির বেশী জমেনি মনে হ’ল , কিন্তু দুই পাশের নর্দমায় বেশ এক হাত ক’রে বরফ জমে আছে । ছেলেগুলি রাস্তা ছেড়ে দিয়ে পরমানন্দে নর্দমায় নেমে পড়ল এবং এক ষ্টাটু বরফ ভাঙতে ভাঙতে মহা কোলাহল করে ছুটতে লাগল। তাদের গালগুলো গোলাপ ফুলের মত টক্‌টকে লাল, অমৃথ-বিশ্বথের কোন চিহ্ন নেই । সঙ্গে অভিভাবক কেউ নেই ব’লে এমন তাওব নৃত্যে বাধাও কেউ দেয় না। দাস মহাশয় দেখে বললেন, “বাপের পয়সার জুতো ছেড়ে ত ওদের কি ? ফুৰ্ত্তি ত ক’রে নিচ্ছে।” তাদের দেখাদেখি আমার কন্যাও রাস্তায় বরফ মাড়িয়ে মাড়িয়ে চলতে আরম্ভ করুল, অবশ্য নর্দমায় নামবার মত উৎসাহ তার হয় নি। ছেলেগুলির বরফে লাফানো ছাড়াও একটা দেখবার জিনিষ ছিল, তাদের নিঃসঙ্গতা। জাপানে সৰ্ব্বত্রই দেখেছি এই রকম ছোট ছোট ছেরে এবং মেয়েরা একলাই غه গাড়ীর চালকের সাবধান এবং ছেলেমেয়েরা নিৰ্ভীক । শুনেছি তাদের গলায় নাকি নাম-ঠিকান লিখে ঝুলিয়ে রাখা হয়, যদিই দৈবাং কেউ হারায় বা বিপদে পড়ে ত তৎক্ষণাৎ তার আত্মীয়স্বজনের কাছে পৌছে দেওয়া যায় । আমি ৮০ ০৯০০ মাইল রেলপথেও একটি আট-নয় বছরের ছোট বেঁটে ছেলেকে ব্যাগ নিয়ে একলা যেতে দেখেছি । বোধ হয় ছুটির দিনে টোকিও থেকে সে কোবে যাচ্ছিল । বেশ থোস মেজাজে চলেছে । রোকে৷ পাহাড়ের মাথায় অনেক জায়গাতেই খুব ঘন জমাট বরফ পড়েছে। পথ-সাজানো কেয়ারি-করা বেঁটে ঝাউগাছগুলি লোকের দরজার সামনে কিংবা বড় রাস্তার পাশে সাদা ধপধপে বরফের মধ্যে সবুজ তোড়ার মত ফুটে রয়েছে, গায়ে গুড়ে গুড়ো চূণের মত বরফ পড়ছে, দূরে একটা পুকুর জমে কঠিন হয়ে গিয়েছে, অনেক দূরে কোবের সমুদ্র-বন্দরের পাথরে বাধান সীমানা দেখা যাচ্ছে, নিস্তরঙ্গ সমূদ্র উপর থেকে র্কাচের মত চকু চকু করছে, তার চেয়েও দূরে ‘মায়া সান পৰ্ব্বতের চুড়া, সব জড়িয়ে মনে হচ্ছিল কি একটা অবাস্তব লোকে এসে পড়েছি । এরকম দেখা ত আমাদের অভ্যাস নেই, এরকম দেখবার কথাও নয়। অনেক জায়গায় সিড়ি ক’রে ক’রে উপরে বসবার ও চা পাবার সব জায়গা আছে, কার একটা বিরাট স্মৃতিস্তম্ভও রয়েছে দেখলাম । দেখে শুনে আমরা আবার ঝোলানো ট্রেনেই ফিরলাম। কিন্তু ততক্ষণে ঠাণ্ডায় আমার হাতগুলো জালা করতে মুরু করেছে। সন্ধ্যায় মিঃ দাসের বাড়ী পাপড়-ভাজা, ডালমুট ইত্যাদি নানা স্বদেশী জিনিষ খেয়ে পথে পথে মন্দিরের মত তোরণ-দেওয়া গাছের বাকলের বাড়ী, কাঠেরু বাড়ী ইত্যাদি দেখতে দেখতে আবার সেই ঈষ্টাৰ্ণ লজে গিয়ে লুচিতরকারি খাওয়ণ গেল । আমাদের জাহাজ কোবে বন্দরে দিন পাচেক থাকবে, কাজেই আমাদের আর রাষ্ট্রে হোটেল ভাড়া ক’রে থাকতে হ’ল না। একটা ট্যারি