পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র প্রতিশ্রুতি প্রভৃতিমাঞ্চুকুয়োর সময়েই বাতিল করিয়া দিয়া জাপান এখন নিষ্কণ্টক। শুধু তাহাই নয়, চীনে জাপানী সৈনিকদের ঔদ্ধত্য ও অবহেলা হইতে ইংরেজ, ফরাসী, জাৰ্ম্মেনী, মার্কিণ—কোন জাতিই রেহাই পায় না । অবশ্য অনেক সময়েই এই সব শক্তি জাপানের এই আচরণে তাহাদের আপত্তি জানায়, জাপানও নিয়ম মাফিক নিজেদের দুঃখ প্রকাশ করে। এই খেলা জমিয়াছে বেশ, স্পেনের নিরপেক্ষতা-কমিটির মতই ইহা অান্তর্জাতিকতার ইতিহাসে এক হাস্যকর অধ্যায়। ব্রিটিশ-ফরাসী প্রভৃতি শক্তিদের অবশ্য ইহাতে মান বাচিতেছে না, কিন্তু আপাতত: প্রাণ বাচিতেছে, তাহাই যথেষ্ট । চীন যাইতে বসিয়াছে, যাইবে । কিন্তু তাহ পরিপাক করিতে জাপানের অনেক দিন লাগিবে। তত দিন সুদূর প্রাচ্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভূক্ত অষ্ট্রেলিয়া ও ভারতবর্ষ, ফরাসী সাম্রাজ্যভূক্ত ইন্দোচীন, নেদারল্যাণ্ডের সাম্রাজ্যভুক্ত যবদ্বীপ ও মার্কিণের সংরক্ষিত ফিলিপাইন অন্ততঃ নিরাপদ থাকুক। ইতিমধ্যে এই সব শক্তি নিজের ভাবী দিনের জন্য প্রস্তুত হইলে এইরূপ একটা চিস্তা এই সব জাতির মনে জাগিতেছে । তাই সিঙ্গাপুরে নৌ-ঘাটি সম্পূর্ণ হইল, প্রাচ্য-মণ্ডলে এমন কি ভারতবর্ষে পৰ্য্যন্ত, ব্রিটুেনের সমর-শক্তি বৃদ্ধি পাইতেছে ; ব্রিটেন, ফ্রান্স ও আমেরিকা নেী-নিৰ্ম্মাণে পরম্পর একযোগে মন্ত্রণা করিতেছে, জাপানের নিকটেও তাহার নেী-নিৰ্ম্মাণের ভাবী প্রোগ্রাম চাহিতেছে। রূঢ় ভাবেই জাপান অবশ্য এই প্রশ্ন প্রত্যাথ্যান করিয়াছে । বরং শোনা যায়, ৩৫ হাজার টনেরও বড় যুদ্ধজাহাজ নিৰ্ম্মাণ করিতে সে এখন কৃতসঙ্কল্প। কিন্তু এই ত্রি-শক্তির ঐক্য, আর্থিক শক্তি ও সমরনৈপুণ্য অক্ষুণ্ণ থাকিলে প্রশান্ত মহাসাপুরে জাপান একুেবারে একচ্ছত্র হইতে পারিবে না— বরং আচ্ছন্ন হইয়া ধাইবে । অথচ জাপান সবে আপনার সন্তু সিদ্ধির পdথ অগ্রসর হইয়াছে, মাঞ্চুকুয়ো, চীন, বহিমজোলিয়া স্ট্রাইবেরিয়া শেষ হইতে না-হইতে তাহার প্ৰবৰ্দ্ধমান জনসংখ্যার নামে দাবি পড়িবে অষ্ট্রেলিয়ার উপর, প্রসারিত শিল্পবাণিজ্যের তাগিদে চীনে ও ভারতবর্ষে প্রধান ও একান্ত অধিকার ত্বাহার প্রয়োজন হইবে, আর সমস্ত প্রাচ্য ভূমণ্ডলে সে চাহিবে আপনার প্রভুত্ব। ৰহির্জগৎ ه با اسمولاً মৃদুর প্রাচ্যে জাপানী মহাসাম্রাজ্যের উদয় হয়ত স্থার अग्न ! و& তনাকার এই স্বপ্ন সুপরিচিত, অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদীরাও জানেন, আমরাও জানি । কিন্তু সত্যসত্যই কি জাপানী সাম্রাজ্যবাদ আমাদের পক্ষে এক নূতন বিভীষিকা ? চীনের অদৃষ্ট দেখিয়া কি ইহাই মনে হয় না ষ্ণে এই দানবীয় শক্তির সম্মুখে আর নিজেদের স্বাতন্ত্র্য ও স্বাধীনতার স্বপ্ন না-দেখাই ভাল, আপনার আত্মকর্তৃত্ব —যেটুকু আত্মাধিকার এখনও পাইতেছি—তাহাও অটুট রাপিতে হইলে আর পূর্ণ স্বাধীনতার কথা চিন্তা না-করিয়া ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মধ্যে ঔপনিবেশিক স্বরাজ্যের আদৰ্শই গ্রহণ করা উচিত ? সত্যসত্যই এইরূপ একটা ভাবনা অনেক ধীরপন্থী ভারতবাসীর মনে যে না-জাগিতেছে তাহা নয় । কিন্তু পূর্ণ স্বাধীনতাই যাহারা জাতির চরম ও একমাত্র সম্মানকর দাবি বলিয়। গ্রহণ করিয়াছেন তাহাদের পক্ষে জাপান অন্যরূপ আশা ও আশঙ্কার কারণ। আশা এই— প্রাচ্য-মণ্ডলে এই অতি-প্রবল শক্তির ক্রম-প্রতিষ্ঠায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ হয়ত নিৰ্ব্বাপিত হইবে । বিশেষ করিয়া পশ্চিম হইতে যদি আবার মুসোলিনীর ফাসিস্তর ব্রিটিশপূৰ্ব্ব-পৃথিবীকে চাপিয়া ধরে, তাহা হইলে ব্রিটিশ-নিগড় হইতে ভারতবর্ষের মুক্তি অপেক্ষাকৃত সহজসাধ্য হয়। এখন তবে কংগ্রেসের পক্ষে চীনের সহিত এই অকেজো ও অর্থহীন সহমৰ্ম্মিত না-জানাইয়া জাপানের সহিত ও ইতালীর সহিত সম্ভাব স্থাপনের চেষ্টা করাই কি ভারতীয় পররাষ্ট্র-নীতির মূলস্বত্র হওয়া উচিত নয় ? অন্য দিকে স্বাধীনতাকামী ভারতবাসীর মনে এই প্রশ্নও আছে— এই নৃতন সাম্রাজ্যবাদী জাপান বা ইতালীর নিকট স্বাধীন ভারতের সত্যই ভয়ের কারণ আছে কি ? পণ্ডিত জৱাহরলাল নেহরু কংগ্রেসের মঞ্চ হইতে, বলিয়াছেন, যে, মানচিত্রের দিকে| বুঝিব ইহাদের আস্তান ও ভারতবর্ষের মধ্যে7কত কত মাইলের তফাৎ। তাহ ছাড়া যে-ভারত ইংরেজের নাগপাশ ছিন্ন করিবার মত শক্তি