পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈশাখ ত্ৰিৰেনী పెప్పి করেন নি এবং লোকে এখানেও আপনাকে এসে বিরক্ত করবে তা কখনই আপনি চান না।” শচীন্দ্র এই মেয়েটির এই অসময় অকস্মাৎ একাকী আগমনে সত্যই এমন বিস্মিত হয়েছিল যে সহসা কি ভাবে তাকে সম্ভাষণ করবে ভেবে পাচ্ছিল না। সীমার বিরক্ত করার বারংবার উল্লেখে শচীন্দ্র লজ্জিত হয়ে বললে, “ন না, বিরক্ত কি, নির্জন বাস আমার একটা খেয়াল । আহন ভিতরে, হাত মুখ ধুয়ে একটু চ'-টা খান, তার পর কথা হবে চি ছি আপনাকে অকারণে বাইরে দাড় করিয়ে রেখেছি।” ব’লে সীমার সঙ্গে ভিতরে প্রবেশ ক'রে বলতে লাগল, “কিন্তু এখানে আপনার খুব কষ্ট হবে । স্ত্রীলোক ত কেউ বাড়ীতে নেই—” সীমা হেসে বললে “কেন । এষ্ট ত আমিই রয়েছি । অবিশুি যে-লোক সারা ভুবন ধাওয়া ক’রে আপনাকে সে ধরেছে তাকে স্ত্রীলোক বলতে আপনার রুচিতে ধাধবে—” হিন্দুস্থানী ভৃত্য ও পাচকের সঙ্গে নিৰ্জ্জনবাসে কাটিয়ে চন্দ্রের মনে মনে নিজের অজ্ঞাতে যে মার্জিত জনের সঙ্গে Hালাপের তষ্ণ জেগেছিল তাতে আর সন্দেহ নেই । মার এই সহজ রহস্যালাপে সে খুশী হয়ে হেসে বললে, পনার উত্তর শুনে আমার একটা গল্প মনে হ’ল । Iারিসে একটা দোকানে লেখা ছিল, ‘ইংলিশ ইজ স্পোকন }য়ার’। এক ইংরেজ সফর অর্থাৎ টুরিষ্ট সেখানে গিয়ে যা বলে ষ্টা কেউ বোঝে না ; সে ত চটেই খুন—শেষে গ্রপ্রাইটারের রচিত একজন ইংরেজীনবীশ এলে সফরী বললে, “এমন থ্যা কথা লিখে রাখার মানে কি ? কেউ এখানে ইংরেজী ল না, এমন কি বোঝেও না ।” তখন সেই ইংরেজীবিদ ট্রাসী ভদ্রলোকটি হেসে বললে, ‘কেন মসিয়ে, আপনি কি ইংরেজী বলছেন না। ইংরেজী এখানে বলা হয় আর ত কিছু লেখা হয় নি ? ফরাসী জুয়াচুরির দেখে ইংরেজটি তৎক্ষণাৎ ঘাড় ফিরিয়ে চটে চলে গেল । অবশু জন-বুলের রসিকতাজ্ঞান সম্বন্ধে একটা ফরাসী " "তাই বলে আপনি ঘাড় ফিরিয়ে চলে যাবেন না । hনাকে আমার বড় দরকার। না না, আপনি ব্যস্ত | হবেন না। আমি আপনার চাকরকে দিয়ে সব ঠিকঠাক করিয়ে নিচ্ছি। আপনি কিছুমাত্র ব্যস্ত হবেন না।” চাকরকে ডেকে “মা জীর" খেদমত করবার হুকুম দিয়ে সে ছাদে চলে গেল । সীমার এত সহজ সপ্রতিভ ভাবে তার মনটাও কি জানি কেন বেশ প্রসন্ন হয়ে উঠল। পাৰ্ব্বতীর সংবাদের জন্য তার মনের মধ্যে চঞ্চলত ੱਗ 8 সে সম্প্রতি তা প্রকাশ করলে না । & 8 সীমা ইচ্ছা ক’রেই প্রায়ু পরিচিত আত্মীয়ের মত সহজ নিঃসঙ্কোচ ব্যবহার দিয়ে তার কাজ সুরু করেছিল । অল্প দু-এক দিনের মধ্যেই তার কার্ষ্য সাধন করতে হ’লে প্রথম থেকেই শচন্দ্রের মনে আত্মীয়ের নিশ্চিন্তু সহজ বিশ্বাস উৎপাদন করা আবশুক । চাকর-বাকরের কাছে শচীন্দ্রের ছোট বোল বলে পরিচয় দিয়ে সে সহজেই তাদের আত্মীয়তা অর্জন ক’রে নিয়েছিল ; এবং শচীন্দ্রের সম্ভপ্ত চিত্তে তার সহজ স্বচ্ছন্দ মনের স্নেহ-প্রভাব বিস্তার করতে তাকে বেশী বেগ পেতে হয় নি । কলকাতায় তখন অনিন্দিতা দেবীর নাম একেবারে অপরিচিত ছিল না। এক সময় শচীন্দ্রের মনেও নারীভবনের কাষ্যকলাপ সম্বন্ধে কৌতুহল জেগেছিল । আজ সীমার সঙ্গে বসে তার নারীভবন সম্পর্কে সে বিস্তৃত আলোচনা স্বরু ক'রে দিল । সীমা তার অভ্যাস এবং নিয়ম অনুসারে তার সমস্ত আলোচনাকে যেমন ভারতবর্ষের মুক্তির প্রসঙ্গ নিয়ে উপস্থিত করে আজও তেমনি নিজেদের কাৰ্যকলাপ সম্পর্কে বিস্তৃত বিবরণ দিয়ে বললে, “কিন্তু এরকম কাজ হয়ত আরও দশজন বাংলাদেশে করছে, কিম্বা এর চেয়েও অনেক বিস্তৃত স্বব্যবস্থিত স্বপরিচালিত নারীপ্রতিষ্ঠান হয়ত আরও গড়ে উঠতে পারে, কিন্তু প্রত্যেক ভারতবাসীর যেটা প্রধান কামা হওয়া উচিত সেই স্বাধীনতার উদ্দেশু নিয়ে আমাদের প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের সমস্ত কাজকে নিয়ন্ত্রিত করার চেষ্টা তাদের মধ্যে নেই। আপনার প্রতিষ্ঠিত কমলাপুরীর বিরাট ব্যবস্থার মধ্যেও সেই জিনিষটারই অভাব অনুভব করে এসেছি। পাৰ্ব্বতী দেবীর ত ও সম্বন্ধে কোন উৎসাহই নেই, থাকার কথাও নয়। কিন্তু