পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"বৈশাখ ব্যবস্থা হইয়াছে । জাৰ্ম্মানী ও ইটালী গণতন্ত্র ব। সাম্যবাদ কোনটাই পছন্দ করে না। এই জন্য রুশিয়ার বিরুদ্ধে তাহাদের ভয়ানক কোপ । এই কোপের আর একটি কারণ হইল, রুশিয়া ভাবী আক্রমণ-আশঙ্কায় তাহার পশ্চিম সীমান্তে চেকোস্লোভাকিয়া ও পোল্যাণ্ডের পাশ দিয়া ঘাটি নিৰ্ম্মাণ করিয়াছে, সেথানে বহু রুশ সৈন্য বর্তমান । সোভিয়েট রুশিয়ার পূর্ব সীমাস্তে রহিয়াছে জাপান । জাপানও কতকট ফাসিষ্ট মতাবলম্বী, সোভিয়েট সাম্যবাদের সে ঘোর শত্রু। পূৰ্ব্ব সীমাস্তুও রুশিয়া বেশ স্বরক্ষিত করিয়াছে । জাপানের ইহ আদৌ কাম নহে । একারণ ইহার বিরুদ্ধে জাপানের যুড়ধস্থ বেশ পাকিয় উঠিয়াছে । গত ডিসেম্বর মাসে জাপান ও জাম্মানীর মধ্যে রুশিয়ার বৰ্ত্তমান শাসন-ব্যবস্থার বিরুদ্ধে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হইয়াছে । এই জাপ-জাৰ্ম্মান চুক্তি আসন্ন অনর্থের তৃতীয় পর্কের স্বচনা করিতেছে বলিলে অভু্যক্তি হইবে না । এই চুক্তির দ্বারা পূর্বে জাপান ও পশ্চিমে জাৰ্ম্মানীর প্রাধান্য ও শক্তি পরস্পর স্বীকার করিয়া লইয়াছে । সমগ্ৰ দক্ষিণ-পূব এশিয়। জাপানের আওতায় পড়িয়াছে। জেনেরল হায়ালির নেতৃত্ত্বে সমরপন্থীরা জাপানে প্রবল হইয়া উঠিয়াছে। এতকাল ব্রিটেন যেন আন্তর্জাতিক ব্যাপারে বিশেষ দৃঢ়তা দেখায় নাই। কিন্তু জাপ-জাম্মান চুক্তির পর সেও অত্যধিক তৎপর হইয় নানারূপে সমরায়োজনে লাগিয়া গিয়াছে । ইটালী কর্তৃক আবিসনিয়া অধিকারের পর ব্রিটেন ধেরূপ ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলির সঙ্গে মোটামুট সদয় ব্যবহার করিতে আরম্ভ করিল সেইরূপ ভূমধ্যসাগর ছাড়াও প্রাচ্যসাম্রাজ্যে ধাতায়াতের পথ যাহাতে মুরক্ষিত হয় তাহার দিকে মন দিল । এক সময় দক্ষিণ-আফ্রিক। ব্রিটেনের হস্ত হইতে একেবারে মুক্ত হইতে চাহিয়াছিল, অষ্ট্রেলিয়ায়ও একটি দল পূর্ণ স্বাধীনতা ঘোষণা করিতেছিল। কিন্তু বৰ্ত্তমান বর্ষের প্রথম হইডেই যেন সব বদলাইয় গেল । দক্ষিণ-আফ্রিকা আত্মরক্ষার উপায় সাধনের জন্য ব্রিটেনের শরণাপন্ন হইল । উত্তর-পূৰ্ব্ব আফ্রিকায় ইটালীর ক্ষমতা যতই বাড়িতেছে, জাৰ্ম্মানীর উপনিবেশের দাবী যতই তীব্র হইয় উঠতেছে তভচ্ছ, কি দক্ষিণ-আফ্রিকা, কি অষ্ট্রেলিয়া সকলেই ব্রিটেনের বর্তমান অস্তির্জাতিক অবস্থার গতি ও প্রকৃতি S8S. আশ্রয় চাহিতেছে। ব্রিটেন ও ছসিয়ার হইয়া গিয়াছে, শতবর্ষ আগেকার মত এখন আবার পূর্ব-আফ্রিকা ঘুরিয়া প্রাচ্য সাম্রাজ্যে যাইবার ব্যবস্থা করিতে তৎপর হইয়াছে । ইতিমধ্যে সে কিন্তু একটা কুট চালও চালিয়াছে। গত ১লা জানুয়ারী ইটালীর সঙ্গে একটা ‘ভদ্রলোকের চুক্তিতে অবিদ্ধ হইয়াছে। এই চুক্তিতে ভূমধ্যসাগরে যাহাতে ব্রিটেনের স্বাৰ্থ সংরক্ষিত হয় ইটালী তাহাতে স্বীকৃত হইয়াছে। স্পেনে কিন্তু ইটালীই প্রাধান্য লাভ করিয়াছে । আজ যে লক্ষাধিক সৈন্য সেখানে লড়াই করিতেছে তাহা কি তবে এই চুক্তিরই ফল । ব্রিটেন সম্প্রতি তাহার রণসজ্জার একটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রকাশ করিয়াছে। বাৰ্ষিক তিন শত মিলিয়ন পাউণ্ড হিসাবে পাচ বৎসরে পুণর শত মিলিয়ন পাউণ্ড খরচ করা হইবে । জল, স্থল ও বিমান-বাহিনী প্রত্যেকটি এইরূপে বৰ্দ্ধিত হইবে। পূর্ব-পশ্চিমের সকল ঘাটি পাকা করিয়া নিৰ্ম্মাণ করা হইবে । সিঙ্গাপুৰু-ঘাটি নিৰ্ম্মাণ প্রায় শেষ হইয়াছে । চীনের গাত্রে হংকঙে আর একটি বড় রকমের ঘাটি নিৰ্ম্মিত হইবে । ইহাতে খরচ হইবে মাশ লক্ষ পাউণ্ড। ব্রিটেনের কর্ণধারগণ এই শিক্ষকা দিলেক্ট্রন যে, ইহা দ্বারা জগতে শাস্তি প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হইবে। প্রত্যেক চিন্তাশীল ব্যক্তিই কিন্তু ইহার পরিণাম ভাবিয়। চিন্তিত হইয়া পড়িয়াছেন । আর একটি বৃহত্তর সমরের বুঝি আর বিলম্ব নাই। জগতে ধাতব ও অন্যান্ত জিনিষের মূল্য বৃদ্ধি ইহাই স্বচিত করিতেছে। - বৰ্ত্তমান বংসরে অন্তর্জগতে কি কি প্রধান প্রধান ঘটনা সংঘটিত হইল তাহারই আলোচনা করিলাম। ইহার মধ্যে ব্যর্থতা ও নৈরাপ্তই আমরা দেখিয়াছি। কিন্তু কয়েকটি এমন ঘটনাও ঘটিয়াছে যাহার মধ্যে ভবিষ্যৎ সূgদ্ধ একেবারে নিরাশ হইবার কারণ নাই। সাম্রাজ্য ঘাঁহাদের আছে তাহদের মধ্যে বিবাদ দ্বন্দ্ব কলহ লাগিয়াই থাকিবে। দুৰ্ব্বল যাহারা তাহারা সবল হইলে সাম্রাজ্যওয়ালামের শিক্ষা হইতে পারে, উপযুক্ত শিক্ষা পাইয়া ক্ষুণ্ণিবৃত্তি হওয়াও সম্ভব। মহাচীন এতকাল সাম্রাজ্যবাদীদের লীলাভূমি হইলেও এ বৎসর যে-সমস্ত লক্ষণ প্রকাশ পাইভেছে তাহাতে তাহার সংহতিই ব্যক্ত করিতেছে। এ বৎসর দক্ষি৭ে ক্যান্টনে, উত্তর চীনে ও সেদিন সিয়ান প্রদেশে যে তিনটি