পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ গৃহিণী উৎফুল্প হইয়া বলেছিলাম না ? কর্তা হাসিয়া বলিলেন, “কিন্তু রং সত্যিই কালো, তোমার চেয়েও কাল।” গৃহিণী বলিলেন, “ত হোক। ফরসাদের কপাল দেখে অরুচি ধ’রে গেছে । কালো আছি আছিই, কিন্তু সংসারে কারও কাছে আজ অবধি মাথা ষ্টেট করতে হয় নি। এমনি পয় যেন আমার কালো বৌয়েরও হয়।" বিবাহ হইয়া গেল। অমল যখন বে লইয়া বাড়ী ফিরিল, তখন তাঙ্গকে আগের মত অতট আর অসন্তুষ্ট দেখাইল না। বাস্তবিক নববধূর মুখপানি দেখিবার মত । যেন মূৰ্দ্ধমতী লক্ষ্মীঠাকুরাণী। চৈমবতী নিজের গলাব দশ ভরির হার দিয়া বৌয়ের মুখ দেখিলেম । বরণাস্তে বধুর মুখপানি তুলিয়া ধরিয়া সমাগত প্রতিবেশিনীবৃন্দকে বলিলেন, “দেখ দেখি বাপু তোমরা, এ-ঞ্জিনিষ কেউ নিন্দের বলবে ?" অন্তত: তাহfর সামনে কেইষ্ট নিন্দার বলিল না । বলিলেন, “দেখ আমি আড়ালে অবশু সকলে মন খুলিয়ান্ত কথা বলিল, যাঙ্গ উত্ত হৈমবতী তাহ! শুনিতে পাইলেন না । বিবাহে ধুমধাম হুইবে না হইবে না করিয়াও নিতান্স মন্দ হইল না । অমলের মাতামহের পরিবাইটি বৃহৎ, একমাত্র দৌহিরের বিবাহে সকলে দল বাধিয়া আসিলেন । পাড়প্রতিবাসী, আত্মীয়, কুটুম্ব ও বিশেষ বন্ধুর দল, কাহাকেও বাদ দেওয়া গেল ন । এ বাড়ীর শোকের আবহাওয়াও এই তিন মাসে পানিকট কাটিয়া গিয়াছে। বিধবা পুটু ঙ্গোর করিয়ু মনকে বুঝাইয় পড়াশুনায় ডুবিয়া গিয়াছে, সে নিজের পায়ের উপর দঁাড়াইতে চায়। বড়গিল্পীং একটি ফুটফুটে নাতি হইয়াছে, তাহাকে বুকে চাপিয়া তিনি বিনয়ের শোকও ভুলিবার চেষ্টা করিতেছেন । পুত্রবধূকে আর বাপের বাড়ী যাইতে দেন নাই, খোকা এক মুহূৰ্ত্ত চোখের আড়াল হইলে তিনি অন্ধকার দেখেন । বেী আসার পরদিন ঘটা করিয়াই বউভাত হইয়৷ গেল। ফুলশয্যাও সেই রাত্রে। রাত দুইটার পর হৈমবর্তী অনেক কষ্টে তরুণী ও বালিকার দলকে ঘর হইতে বাহির করিয়া নবদম্পতীকে ঘুমাইবার স্বযোগ করিয়া দিলেন । রক্ষাকবচ રૂઢિં૧ অমল বলিল, “বাপ রে বাপ, কে বলে স্ত্রীলোক অবলা ? এদের হাতে পড়ে যা নাস্তানাবুদ হ’তে হয় গোরাপণ্টনের হাতেও এতটা হয় না।” সাবিত্ৰী ফিক্‌ করিয়া হাসিয়া মুখ ফিরাইয়ু লইল । অমল বলিল, “হাসড় কি ? যত উৎপাত সব আমার ঘাড় দিয়ে গেল ব'লে বুঝি r” সাবিত্ৰী বলিল, “ন, তা কেন ?" হঠাৎ জানালার ওপাশ হইতে কে বলিয়ু উঠিল, “ওম, লজ্জাবতী লতা ত বেশ বরের সঙ্গে কথা কইছে গে৷ ” সাবিত্রী লজ্জা পাঠয় একেবারে চুপ করিয়া গেল, হাজার সাধ্যিসাধনা করিয়াঙ, সারারাতের মধ্যে আমল আর তাহাকে কথা কহাঙ্গতে পারিল না । আত্মীকুটুম্বের দল কিছু বৌভাতের পরদিনই চলিঃ গেল না । মেয়ের এমন করিয়া সারাদিন নববধূকে ছfকয়৷ ধরিয়া থাকিত যে বেচার। অমল একেবারেই আমল পাঠত না। রায়ে, ৪ এত লোকের খাওয়া-দাওয়া সারিয়া শুষ্টতে রাত এগারটা বাজিয়া ধাইত । শ্বশুরশাশুভ শুইতে যাইবার আগে কোনো মতেই সাবিত্রীকে তাহার ঘরে পাঠান যাহত না । হৈমবতী কাগু দেখিয় মনে মনে বিরক্ত ইহঁতেন, কিন্তু কাহাকেও কিছু বলিতে পারিতেন না, সকলে যে তাহারঃ ঘরে অতিথি ! তাহার ইচ্ছা ছিল বেী ছেলে আরও এক মেলামেশা করিবার সময় পায় t মেয়েটি সত্যই আশে। গুণবতী, স্বভাবটিও মধুং, ভাল করিয়া পরিচয় পাহলে অম কখনও এমন স্ত্রীর অনাদর কfরবে না। কিন্তু অমল বেচার ভ স্বীর ধারেকাছে আসিবারই অবসর পায় মা ? দেখিয়া শুনিয়া একদিন তিনি কামিনীর কাছে বলিলে “এর চেম্বে সাহেবদের নিয়ম ভাল বাপু, বিয়ের পর দুটে fafরবিলিতে কোথাও গিয়ে মাসখানেক বেড়িয়ে আসে।” কামিনী বলিলেন, “শুমা, তোমার আবার এ-সব মো সাহেবী পছন্দ কবে থেকে হ’ল ? হৈমবতী বলিলেন, “মেমসাহেবীর সবহ fক আ ভাল বলছি, তা ব'লে সব মন্দও নয় । এই দেখ । পলর দিন হ’ল বিয়ে হয়েছে, অমু বোধ হয় পনর কথাও বৌমার সঙ্গে বলতে পায় নি। এটা ভাল নয় ।"