পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R(R প্রবাসী SNෂෂිෂී প্রেরিত গীতগোবিন্দের সচিত্র পাণ্ডুলিপি ও শ্রীরামপুরের শ্ৰীযুত ফণীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী মহাশয় প্রেরিত ১১৬৬ সালে লিখিত সচিত্র রামপঞ্চাধ্যায় পুথি। ইহাদের বহু বর্ণের স্বন্দর চিত্রগুলি না দেখিলে তাহার নৈপুণ্য উপলব্ধি করা श्क़्श् । তার পর শিল্পপ্রদর্শনী, তিনটি বিরাট কক্ষ চন্দননগরের ছোটবড় বিবিধ শিল্পে সজ্জিত, তন্মধ্যে একটি শুধু মহিলা শিল্পেই পূর্ণ। স্বন্দর সুন্দর বহু প্রকার স্বচশিল্প ছাড়াও চিত্র, বেতের কাজ, চামড়ার কাজ, মাটির কাজ, পুতির কাজের বহুল নিদর্শন যাহা এথানে সজ্জিত করিয়া রাখা হইয়াছিল, তাহার মধ্যে কৃষ্ণভাবিনী নারী-শিক্ষা মন্দিরের ছাত্রীদের কাজ সকলের দৃষ্টি বিশেষ ভাবে আকর্ষণ করিয়াছিল । অপর কক্ষদ্বয়ে পটুয়া অঙ্কিত ও স্ববিখ্যাত বসন্তলাল মিত্র, বেণীমাধব পাল প্রভৃতি প্রাচীন ও শ্রযুক্ত আশুতোষ মিত্র, গৌরচন্দ্ৰ কুণ্ডু প্রভৃতি স্থানীয় আধুনিক বন্ধ চিত্র-শিল্পীর অঙ্কিত সুন্দর চিত্র, তাতের কাপড়, খম্বর, ধাতুনিৰ্ম্মিত দ্রব্য, কামারের কাজ ও প্রসিদ্ধ আসবাবপত্র নিৰ্ম্মাণকারকদিগের কারখানার দারুশিল্পের বিবিধ নিদর্শন, এথানকার তৈয়ারী এসেন্স, সাবান, সিগারেট দিয়াশালাই, ছবির ফ্রেম, ফ্রেটওয়ার্ক, ঐযুক্ত গোষ্ঠবিহারী দাস নিৰ্ম্মিত মৃন্ময় প্রতিমূৰ্ত্তি ও অন্যান্য মৃৎশিল্পী কর্তৃক প্রস্তুত মাটির কাজ, বাংলার নূতন শিল্প গ্রাইগুষ্টোন, পিউমিক ষ্টোন, এমরি ছক্টল, পিউমিক ব্লক, তাপমান যন্ত্র, এসরাজ, কাঠের খেলনা, শাখ, স্বাস্থ্যবিষয়ক বিবিধ চাট প্রভৃতি শতাধিক বিষয়ের বহুসংখ্যক দ্রব্যসম্ভারের নমুনা রক্ষিত হইয়াছিল ; কিন্তু তথাপি বলিতে হইতেছে, যে-ফরাসডাঙ্গা একদিন বস্ত্রশিল্পে এ-প্রদেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করিয়াছিল, নানা প্রকার পাড়ের বিভিন্ন ধরণের বস্থাদি থাকিলেও মনে হইল ফরাসডাঙ্গার আজ সে-থ্যাতি কোথায় ? দারু-শিল্পের কতিপয় উৎকৃষ্ট নিদর্শন, প্রসিদ্ধ মিস্ত্রী নীলমণি নাথের প্রস্তুত অতি স্বন্দর দারুময় জগদ্ধাত্রী মূৰ্ত্তি দেখিয়া এ-শিল্পের পূৰ্ব্ব গৌরবের কথঞ্চিৎ আভাস পাওয়া গেলেও পূৰ্ব্বেকার দড়ির কাজ, গালার কাজ, চুরুটের কাজ, রঞ্জনের কাজ এ সব লুপ্ত হইয়া গিয়াছে। ঐ সকল জিনিযের ধ্বংসাবশেষ কারখানাগুলির ক্ষুদ্র আলোকচিত্রগুলি এখন ঐতিহাসিক প্রদর্শনীর দ্রষ্টব্য হইয়াছে। প্রথম বাঙালী-প্রতিষ্ঠিত বটকৃষ্ণ ঘোষের যে কাপড়ের কল ছিল তাহা হইতে উৎপন্ন বস্ত্র ও এখানকাব বহু প্রাচীন টঙ্কার প্রস্তুতিব কারখানার ঔষধগুলি দেখিয়া এথানকার অধিবাসীদের মনে আবশ্ব একটা আত্মপ্রসাদ আসে তাহাতে সন্দেহ নাই, কিন্তু দুঃথের বিষয় সে-সব কারখানা অনেক দিন লুপ্ত হইয়াছে। এই প্রসঙ্গে প্রযুক্ত ফটিকলাল দাস নিৰ্ম্মিত নানাপ্রকার ফ্রেট-ওয়ার্ক ও শ্রযুক্ত অদ্বৈত দাস বাবাজী কর্তৃক নিৰ্ম্মিত কাঠের চতুদোলা ও কতিপয় জীবজন্তু যে শিল্পের উৎকৃষ্ট নমুনা, তাহ দর্শকমাত্রেই উপলব্ধি করিয়াছিলেন । বহু প্রকার স্থানীয় শিল্পনিদৰ্শন ভিন্নং চন্দননগরের সম্পর্কযুক্ত এমন কতকগুলি দ্রব্য ছিল-- যেমন দুপ্লের বিবাহ রেজিষ্টার, তাহার লিখিত পত্রের প্রতিলিপি, দাসবিক্রয়ের দলিল, দুপ্নে রেণে ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী স্বাক্ষরিত একখানি দলিল, স্থানীয় কোম কোন ব্যক্তিকে লিখিত বঙ্কিমচন্দ্র, গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বরেশচন্দ্র সমাজপতি, চিত্তরঞ্জন দাস প্রভৃতির পত্র। এথানকার লোকের দ্বারা নিহত প্রকাও ব্যাঘ্র-চৰ্ম্ম, কুম্ভীর, এখানকার লোকের সংগৃহীত বহুসংখ্যক প্রাচীন মুদ্র, বাংলা অক্ষরের ক্রমবিবর্তম চিত্র, বাংলার সম্পদ-চাট, ফরাসী ভারতের ব্রহ্মার ছবি অঙ্কিত ও অন্যান্য ডাকটিকিট, প্রকৃতির বহু অদ্ভুত খেয়ালের ফোটোগ্রাফ প্রভৃতি সকল দর্শকেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছিল ।