পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ আচল সিকি 8רא অবর্ণনীয় অভূতপূৰ্ব্ব আনন্দে পূর্ণ হইয়া উঠিল যে গান গাহিবার প্রবল ইচ্ছ। চাপিয়া রাথিতে র্তাহাকে যথেষ্ট বেগ পাইতে হইল ! fকন্তু একটু গৌরচঞ্জিকার অবতারণা না করিয়াই ফস্ করিয়া সিকির চেঞ্জ চাওয়াটা ঠিক ভাল মনে হইল না । কাজেই একথা-সেকথা বলিতে বলিতে কিছু দূর তিনি চলিলেন মণ্ট বাবুর সঙ্গে। আর একটা গলির সম্মুখে আসিয়া শ্ৰীপতি বাৰু মন্ট বাবুকে বলিলেন, “ভাল কথা, মন্ট, বাৰু সিকির ভাঙানি হবে আপনার কাছে ?” মণ্ট বাবু একটু আগেই কোন একটি মহৎ ব্যক্তির নিকট হইতে একটা সিকি ভাঙাইয়া লইয়াছিলেন । তিনি বলিলেন, “ষ্ঠা আছে। দুটো দুয়ানি ।” “তাই দিম” বলিয়া অচল সিকিটা মন্ট, বাবুকে দিয়া দুয়ানি দুটি নিয়া ঐপতিবাবু তাঁরবেগে গলির ভিতর ঢুকিয়া গেলেন । তার পর দুয়ানি দুটির দিকে ভাল করিয়ু নজর করিয়া ঐপতিবাবু হায় হায় করিয়া উঠিলেন । এ কি সৰ্ব্বনাশ! ছুটিরই চেহারা উচ্চশিক্ষিত বেকার যুবকের চেহারার মত স্নান—এমনি শোচনীয় চেহার। ষে দেখিলে অতি কঠিন চোখেও অশ্র আসে। তত ক্ষণে মন্ট বাৰু অনেকটা পথ চলিয়া গিয়াছেন। শ্রপতিবাবু উদ্ধশ্বাসে ছুটিলেন । এ দুটি দুয়ানির চাইতে সেই সিকিটাই ছিল বরং ভাল। সিকিট আসলে অপদার্থ হইলেও তাহার চেহারায় একটু জুলুশ ছিল। এ দুটি দুয়ানির যে তাহাও নাই ! কিছুক্ষণ ছুটিয়া মণ্ট বাবুকে পাইয়া ঐপতিবাবু যেন হাতে স্বৰ্গ পাইলেন । তাহাকে ছুটিয়া আসিতে দেখিয়া মন্ট,বাৰু অবাক হইয়া দাড়াইয়া পড়িলেন এবং জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হ’ল, শ্ৰীপতিবাৰু ?” “হবে আর কি ? আমার ভাঙানির দরকার নেই মশাই। আমার সিকি আমায় দিন, আপনার দুয়ানি দুটো আপনি নিন। আবার যেমন ছিল তেমনি হোক।” অবিলম্বে যেমন ছিল তেমনি হইল। শ্ৰীপতিবাবু জানিতেন মন্ট বাবু সিকিটিকে নিশ্চয়ই পরীক্ষা করিয়া দেখেন নাই। তিনি কহিলেন, “দুয়ানি দুটো আপনাকে শ্ৰেষ্ক ঠকিয়ে দিয়েছে। একেবারে অচল।” “অচল ? বলেন কি ? তাই নাকি ?” মন্ট, বাৰু অবাক হইয়া কহিলেন । “তাহ’লে লোকটা নিশ্চয়ই ভূল ক’রে দিয়েছে।” ভুল করিয়া যে এই দুটি অচল দুয়ানি দিয়াছে সে এতক্ষণে নিজের ভুল বুঝিতে পারিয়া হয়ত কত আপশোষ করিতেছে এ কথা ভাবিয়া মণ্ট বাবুর চোখ দুটি অপ্রতে ভরিয়া উঠিল । তিনি সজল ছল-চুল চোখ দুটি রুমালে মুছিয়া ফেলিলেন ।-- “না:, এ আর চালানো যাবে না" হতাশভাবে বলিতে বলিতে শ্ৰীপতিবাবু অগ্রসর হইতে লাগিলেন । কিন্তু মুখে এ কথা বলিলেও মন এ কথায়ু সায় দিল না। অসম্ভবকে সম্ভব করিবার অর্থাৎ আচলকে সচল করিবার উপায়ু ভাবিতে লাগিলেন । “স্বরেন বাড়ুযে সেট্ল্ড ফ্যাক্ট আনূসেটল্ড, করেছিল।” শ্রপতিবাবু ভাবতে লাগলেন, “আর আমি একটা আচল সিকি চালাতে পারব না ? দেখা যাক্ ; ঐ যে একটা হিন্দী কথা আছে মা—হাল ছোড়েগা নেহি!” হাল তিনি ছাডুন বা নাই ছাডুন, ফুটপাথের উপর একট কলার ছোবড় পড়িয়া ছিল—সেটি র্তাহাকে ছাড়িল না, এবং এই ন+ছাড়ার ফলে এক অপ্রত্যাশিতপূৰ্ব্ব মুহূর্তে শ্রপতিবাবু দেখিলেন তিনি চাং হইয় ফুটপাথের উপর শুইয়া আছেন, প্রায় সমস্ত শরীরেই একটু অদ্ভুত রকমের ব্যথা অতুভব করিতেছেন, এবং তাহার অবস্থা দেখিয়ু কয়েক জন বাঙালী ভদ্রলোক সমবেত ভাবে প্রমাণ করিতেছেন যে বাঙালী হাসিতে জানেন, এ কথাটা একেবারে মিথ্যা এক হিন্দুস্থানী ভদ্রলোক আসিয়া ঐপতিবাবুকে ধরিয়া তুলিলেন । শ্রীপতিবাবুর সারা গায়ে, বিশেষত: মাথায় ও পায়ে, ব্যথা বোধ হইতেছিল । তিনি বুঝিলেন স্থাটিয়া বাড়ী ফেরা তাহার পক্ষে অসম্ভব। অগত্য একটা বাসেই উঠিতে হইল। বাসওয়ালার বরাতে ছিল কটা পয়সা—বিধিলিপি কে খণ্ডাইতে পারে ? শ্ৰীপতি বাৰু একবার মনে করিলেন বাসের টিকিট কেনার সময় আচল সিকিট চালাইয়া দিবেন। কিন্তু পাঞ্জাবী কওক্টিরকে দেখিয়া বিশেষ ভরসা পাইলেন না । শেষকালে