পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఫిషెరి বিলাতের নব উদ্ভাবিত নানা কল চলিষ্ণু হয় এবং ব্রিটেন পণ্যশিল্পের ক্ষেত্রে প্রাধান্য লাভ করে। ইহার বিশেষ বৃত্তাস্ত মেজর বামনদাস বস্থর রুইন অব ইণ্ডিয়ান ট্রেড এও ইণ্ডাষ্ট্রজ’ বহিতে আছে। ভারতবর্ষ হইতে ব্রিটেনের লাভের আর একটা মাত্র দৃষ্টাস্তের উল্লেখ করিব । বহুপরিমাণে ভারতবর্ষের ও ভারতবর্ষ হইতে লব্ধ জনবল ও অর্থবলের সাহায্যে ব্রিটেন বিশাল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য গড়িয়া তুলিয়াছে। এই সাম্রাজ্য রক্ষার জন্য তাহার ভারতের প্রভু থাকা দরকার। এই কারণে ব্রিটেন হইতে ভারতবর্ষে আসিবার পথটা নিরাপদ রাখা আবশ্বক, আবার পূর্বদিক হইতে সমুদ্রপথে কেহ ভারত আক্রমণ না করে, তাহাও দেখা দরকার। ভূমধ্যসাগরে এখন ব্রিটেনের প্রভাব কমিয়াছে, ইটালীর বাড়িয়াছে। কাজেই জলপথে ভারতবর্ষ আসিবার উপায় ছাড়া অন্য উপায়ও ব্রিটেনকে স্থির করিতে হইতেছে। সেই জন্ত নানা স্থানে বিমানঘাটির জায়গার কোন-ন-কোন প্রকারে অধিকারী হইতে হইতেছে। পূৰ্ব্বদিক হইতে সমুদ্রপথে ভারতবর্ষ আক্রমণ নিবারণের জন্য সিঙ্গাপুরে রণতরীর বৃহৎ পোতাশ্রয় নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। মিঃ বেভান বলিয়াছেন, ভারতবর্ষে নানা জাতি (“রেস” ) নানা ধৰ্ম্মমত ("ক্রীড়") ও নানা জা’ত ("কাষ্ট") থাকায় ও তাঁহাদের মধ্যে পরস্পরবিরোধিতা থাকায় ব্রিটেনকে ভারতবর্ষে থাকিতে হইতেছে । ইহার অর্থ এই, যে, বিরোধ ঘটিলে তাহ দমন করা ও থামান, এবং বিরোধের ও বিরোধের কারণের উচ্ছেদসাধন ব্রিটেনের উদ্দেশু। দাঙ্গ মারামারি হইলে লাঠি চালাইয় এবং শেষ পৰ্য্যস্ত গুলি চালাইয় তাহা থামাইবার চেষ্টা করা হয়, ইহা সত্য। তাহার পর কতকগুলি লোককে ধরিয়া আদালতে তাহাদের বিরুদ্ধে মোকদ্দমার শুনানির পর অনেকের শাস্তি দেওয়া হয়, ইহাও সত্য। লাঠি ও গুলি চালান এবং মোকদম চালান সাধারণত: নিরপেক্ষভাবে হয় কিনা, সে বিষয়ে আলোচনা নী করিয়া বর্তমান প্রসঙ্গে কেবল ইহাই বিবেচ্য, যে, এই সকল উপায় দ্বারা বিরোধের ও বিরোধের কারণসমূহের উচ্ছেদ সাধিত হইয়াছে বা হইতেছে কি ? হয় নাই, হইতেছে না। কোন দেশে যদি খুব ম্যালেরিয়া জর হয়, তাহা হইলে অনেক প্রবাসী ১৩৪৪ ডাক্তার ও প্রচুর পরিমাণে ঔষধ রাখিলেই যথেষ্ট ব্যবস্থা করা হইয়াছে বলা যায় না। ম্যালেরিয়া জরট। যাহাতে না হয়, ম্যালেরিয়ার বিষটাই যাহাতে নষ্ট হয়, তাহা আর জন্মিতে না পারে, এরূপ ব্যবস্থাও করা আবশ্বক। সেইরূপ সাম্প্রদায়িক ও শ্রেণীগত বিরোধ ও দাঙ্গা মারামারি হয় বলিয়া যথেষ্ট পুলিস ও সৈন্য ও তাহদের অস্ত্রশস্ত্র এবং ধৃত লোকদের বিচার ও শাস্তির জন্য যথেষ্ট বিচারক ও কারাগার রাখিলেই যথোচিত ব্যবস্থা হইয়াছে বলা যায় না। এরূপ আইন ও সরকারী অন্যবিধ ব্যবস্থা থাকা দরকার যাহাতে সাম্প্রদায়িক ঈর্ধ্যাম্বেষ না বাড়িয়া কমে ও লোপ পায়। এরূপ কোন আইন ও অন্যবিধ সরকারী ব্যবস্থা আছে কি ? যাহাতে সাক্ষাৎ বা পরোক্ষ ভাবে সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে, শ্রেণীতে শ্রেণীতে ঈৰ্য্যান্বেষ বাড়ে, এরূপ আইন ও সরকারী অন্য ব্যবস্থা কোন মতেই হওয়া উচিত নয়। কিন্তু নূতন ভারতশাসন আইনে সাম্প্রদায়িক ও শ্রেণীগত ঈর্য্যাম্বেষ ও অন্য অবাঞ্ছনীয় মনোভাব বাড়িয়াছে। যোগ্যতা কম বা বেশী যাহাই হউক, প্রদেশভেদে কোন কোন সম্প্রদায় সংখ্যায় বেশী বা কম যাহাই হউক বিবেচনা না করিয়া, সৰ্ব্বত্র কোন কোন সম্প্রদায়ের লোকদিগকে নির্দিষ্ট কতকগুলি চাকরি দিতেই হইবে, এরূপ সরকারী নিয়মেও ঈর্ষ্যাম্বেয বাড়িয়া চলিয়াছে । কোন ধৰ্ম্মসম্প্রদায় তাহাদের কোন ধৰ্ম্মানুষ্ঠান করিতে পারিবে বা ন-পরিবে, তাহা নিৰ্দ্ধারণ করিবার সময় নিষেধ ও অধিকারসঙ্কোচ একই মানদণ্ড অসুসারে সকল সম্প্রদায়ের প্রতিই প্রযুক্ত হওয়া উচিত। কিন্তু কাৰ্য্যত দেখা যায়, যে, নিষেধ ও অধিকারসঙ্কোচ হিন্দুদের ভাগ্যেই সৰ্ব্বত্র বা অধিকাংশ স্থলে ঘটিয়া থাকে। ইহাও দেশের মধ্যে মানসিক তিক্ততা ও ঈর্ষ্যাম্বেষ বৃদ্ধির একটা কারণ। ঈর্ষ্যাম্বেষ বাড়িবার অন্য কারণও থাকিতে পারে । আমরা যে আইন ও নিয়মগুলিকে ঈর্ষ্যাম্বেষ বৃদ্ধির কারণ বলিয়াছি, ইংরেজদের মতে যদি সেগুলি কারণ না হয়, তাহা হইলেও ঈর্ষ্যাম্বেষ, ঝগড়া বিবাদ এবং দাঙ্গণ মারামারি যে বাড়িয়াছে, তাহা সরকার পক্ষের খুব উচ্চপদস্থ ইংরেজ রাজপুরুষের দ্বারাও স্বীকৃত হইয়াছে। ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় ভারত-গবন্মেন্টের স্বরাষ্ট্রসচিব সর হেনরী ক্রেক কিছুদিন পূৰ্ব্বে বলেন, যে, গত পচিশ বৎসরে