পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ミぬ8 পরিচয় দীর্ঘকালব্যাপী । আমি যখন এলাহাবাদে একটি কলেজে কাজ করিতাম, তাহার গোড়ার দিকে, বোধ হয় ১৯০০ সালের কিছু আগে, তিনি তখনও বিবাহ করেন নাই, তিনি এলাহাবাদ গিয়াছিলেন এবং তাহার ও আমার বন্ধু গণিতাধ্যাপক উমেশচন্দ্র ঘোষ মহাশয়ের বাসায় ছিলেন। তখন তাহার ফোটোগ্রাফীর সখ খুব বেশী ছিল। বরাবরই র্তাহার একট-ন-একটা সৰ্থ ছিল ও তিনি কিঞ্চিৎ খেয়ালী ছিলেন। তখন অনেক দৃশ্বের ও অনেক মানুষের ছবি তিনি তুলিতেন। পরে তাহার সর্থ হয় গোলাপ বাগানে ও গোলাপ ফুলের চাষে । আমাকে তিনি একবার বলিয়াছিলেন, মিহিজামে তাহার গোলাপ বাগানে যত রকম গোলাপ আছে, ওঅঞ্চলে বা অন্যত্র কোন বাগানে তাহা অপেক্ষ বেশী ও উংকৃষ্ট শ্রেণীর গোলাপ নাই । তিনি নিজের ঢাক বাজাইতে অভ্যস্ত ও নিপুণ ছিলেন না বলিয়া এবং তিনি যে বিদ্যার যে উচ্চ অঙ্গের অনুশীলন করিয়া গবেষণা করিয়াছিলেন তাহা শিক্ষিত সাধারণেরও সহজবোধ্য ছিল না বলিয়া তাহার খ্যাতির ব্যাপ্তি তাহার বিদ্যাবত্তার অতুরূপ হয় নাই । তিনি কেবল গণিতজ্ঞ ছিলেন না, ইংরেজী সাহিত্য ও দর্শনের অধ্যাপকতাও করিয়াছিলেন। তিনি স্বগৃহস্থ ছিলেন। র্তাহ অপেক্ষ কম আয়ের লোকও আজকাল নিজে বাজার করে না, কিন্তু সুস্থ অবস্থায় তিনি প্রত্যহ বাজার হইতে তরকারী কিনিয়া আনিতেন । তিনি অমায়িক ও সরল প্রকৃতির লোক ছিলেন । ডাক্তার সুরেশচন্দ্র রায় ইদানীং ভারত ইন্সিওরেন্স কোম্পানীর কলিকাতা আপিসের ভারপ্রাপ্ত ডিরেক্টর ও তাহার পূৰ্ব্বে নিউ ইণ্ডিয়া কোম্পানীর কলিকাত আপিসের জীবনবীম-বিভাগের ম্যানেজার ডাঃ সুরেশচন্দ্র রায় মহাশয়ের অকালমৃত্যুতে বীমার কাৰ্য্যে বিশেষ অভিজ্ঞ এবং সাধারণত: ব্যবসাবাণিজ্য বিষয়ে বিচক্ষণ এক জন উদ্যোগী পুরুষকে বাংলা দেশ হারাঈল । তিনি নিজের চেষ্টায় সমাজে নিজের স্থান করিয়া লইয়াছিলেন । রাষ্ট্রনীতিক্ষেত্রে তিনি কংগ্রেসওয়াল ছিলেন । কলিকাতার ভারতীয় সাংবাদিক সভার তিনি একজন সহকারী সভাপতি ছিলেন। জীবনবীমার কাজ শিখাইবার প্রবাসী S్సN988 জন্য তিনি উক্ত বিষয়ে একটি শিক্ষালয় খুলিয়াছিলেন । জীবনবীমা ও অন্যান্ত ব্যবসাবাণিজ্য বিষয়ক একখানি ইংরেজী ও একখানি বাংলা কাগজ তিনিই চালাইতেন। ভারত ইন্সিওর্যান্স কোম্পানীর কাজ লইবার পর তিনি “ভারত ম্যাগাজিন” নাম দিয়া একটি মাসিক প্রতিষ্ঠিত করেন। তাহার নিজের জীবন-চরিত ও সমসাময়িক ঘটনাসমূহের ইতিহাসবিষয়ে তিনি একটি ইংরেজ বহির লেখক ও প্রকাশক। তিনি দীর্ঘকাল দিল্লী ও মীরাটে ছিলেন, এবং প্রবাসী বাঙালীদের সহিত তাহার গভীর সহান্তভূতি ছিল । প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের গোরখপুর অধিবেশনে তিনিই সম্মেলনকে কলিকাতায় আহবান করেন, এবং ইহার কলিকাতার অধিবেশনের সুশৃঙ্খল বন্দোবস্ত প্রধানতঃ তাঙ্গারই উদ্যোগিতা ও পরিশ্রমে হইয়াছিল । তিনি সহৃদয় ও পরোপকারী ছিলেন । কেহ তাতার সাহায্যপ্রার্থী হইলে তিনি যথাসাধ্য তাহার উপকার করিতেন । বাংলা বানান বৈশাখের প্রবাসীতে শ্ৰীযুক্ত প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়ের মূল্যবান ও অবশুপাঠ্য “রবীন্দ্র-জীবনী"র কিছু পরিচয় দাম উপলক্ষ্যে ঐ পুস্তকের কিছু দোষত্রুটি উল্লিখিত হইয়াছিল। তাহার মধ্যে সৰ্ব্ব’, ‘পূৰ্ব্ব’, ‘কর্তৃক’ ইত্যাদি শব্দের বানানে রেফের নিম্নস্থিত ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব লোপের বিরুদ্ধে কিছু লেথা হইয়াছিল। যাহা লেখা হইয়াছিল, তাহার বিরুদ্ধেও কিছু বলিবার আছে । ইহা সত্য, যে, আমরা ‘সর্ব’ বলি না, বলি, ‘সবুৰ্ব্ব’, সুতরাং বানান উচ্চারণের অতুযায়ী করিতে হইলে, “সৰ্ব্ব’ লেখাই উচিত। কিন্তু আমরা লিখি তর্ক, কিন্তু উচ্চারণ করি ‘তবুক’ ‘তবুক' বলি না ; লিখি “স্বৰ্গ”, কিন্তু বলি ‘স্বরণ ; ইত্যাদি। অতএব আমাদের বানানে ও উচ্চারণে সকল স্থলে সঙ্গতি নাই দেখা যাইতেছে । তাহা হইলে, আমাদের বোধ হয়, কেবল সেই সব স্থলেই রেফের নীচে ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব রাখা ভাল যেখানে ব্যুৎপত্তি বুঝাইবার জন্য তাহা আবশুক । অন্য সব স্থলে রেফের নীচে ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব পরিহার করা ভাল—উচ্চারণ যাহাই হউক । ‘বানান" কথাটি কেহ কেহ লেখেন ‘বাণান । তাহার