পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্যৈষ্ঠ বিবিধ প্রসঙ্গ-ভারতবর্ষের সাধারণ ভাষা বা রাষ্ট্রভাষা R వివి আন্দোলন সফল হইবার কোন সম্ভাবনা নাই, অধিকন্তু এরূপ আন্দোলন করিলে বাংলার প্রতি বিরুদ্ধত বাড়িবে। যেমন রাষ্ট্রীয় সাম্রাজ্যবাদী আছে, তেমনি ভাষিক সাম্রাজ্যবাদী আছে । হিন্দুস্তানীর সমর্থকেরা সকলে ভাষিক সাম্রাজ্যবাদী না হইতে পারেন, কিন্তু তাহদের মধ্যে অনেকে ভাষিক সাম্রাজ্যবাদী । মিথিলায় যে মহামহোপাধ্যায় ডক্টর গঙ্গানাথ ঝার মত ধীর ও শাস্ত মানুষও বলিতেছেন, যে, fহন্দী তাহাদের মাতৃভাষা নহে, মৈথিলী তাহাদের মাতৃভাষা, এবং তাহার মত স্থপণ্ডিত লোকের নেতৃত্বে ষে মৈথিলাকে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গলাইবার চেষ্টা হইতেছে, বহু হিন্দুস্থানী সমর্থকের ভাষিক সাম্রাজ্যবাদ তাহার পরোক্ষ কারণ বলিয় মনে করি । আমাদের ধারণ এহ, ধে, যদি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা +fরবার প্রস্তাব কংগ্রেসমহলে অমিল পাঠত, তাহ! ইহলেও 1ং দীকে স্বদুর মান্দ্রাজ প্রেসিডেন্সীতেও লোকদের বোধগম্য *fরবার -মিত্ত যে দলবদ্ধ সাগ্রহ ও সোৎসাহ চেষ্টা চলিতেছে শু যখিার ফলে ছয় লক্ষ মান্দ্রাজী ইতিমধ্যেই চলনসহ হিন্দী শিথিয়াছে, বাঙালীদের পক্ষ হইতে সেরূপ কোন চেষ্ট হইত • ইহা স্বখের কথা নয়, গৌরবের কথা নয়, কিন্তু সত্য কথা । হিন্দীকে যাহার রাষ্ট্রভাষা করিতে চান, তাহার। অ-হিন্দীভাষাদিগকে হিন্দী শিখাইবার জন্য অনেক পুস্তক লিখিয়াছেন ও প্রকাশ করিয়াছেন। অবাঙালীদের বাংল; শিথিবীর ষে অল্পসংখ্যক বহি আছে, তাহার প্রকাশক ইংরেজ, এবং তৎসমূদয় তউরোপীয়দিগের বাংলা শিখিবার সুবিধার জন্য লিখিত। ভারতীয় অবাঙালীfদগকে বাংলা শিখাইবার জন্য বাঙালীর কয় খানি বহি লিখিয়াছেন জানি না। হিন্দীভাষীদের পক্ষে বাংলা শিখা খুব সহজ । অন্ততঃ তাহাদিগকে বাংলা শিখাহবার নিমিত্ত বাঙালীর কোন চেষ্টা করিয়াছেন কি ? অবাঙালীদিগকে বাংলা শিখানর কথা ছাড়িয়া দিয়ু, বঙ্গের বাহিরে যে-সব বাঙালী বঙ্গদেশ হইতে দুরে বাস করেন, তাহদের বাংলার জ্ঞান ও বঙ্গের সাহিত্য ও সংস্কৃতির সহিত ঘনিষ্ঠ যোগ স্থাপন ও রক্ষার জন্ত প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের কয়েকটি অধিবেশনে প্রস্তাব গৃহীত হইয়াছে। তদনুসারে কোন কাজ হইয়াছে বলিয়া আমরা অবগত নহি । ভারতীয় এবং বিদেশী অবাঙালীদিগকে বাংলা সাহিত্যের সম্পদের ও উত্তরোত্তর সম্পদ বুদ্ধির খবর জানাইবার প্রধান উপায়, ইংরেজী এরূপ সাময়িক পত্রিকাসমূহে বাংলা পুস্তকের সমালোচনা প্রকাশ ধেরূপ পত্রিক ভারতবষের সব প্রদেশে ও ভারতবর্ষের বাহিরে গিয়া থাকে । বঙ্গের এরূপ একখানা ইংরেজী মাসিকে সম্পাদকীয় সমালোচনার্থ বাংলা বহি পাইবার চেষ্টা ব্যর্থ হইয়াছে । তাহার কারণ, বাংলা পুস্তকপ্রকাশকদিগের উক্ত মাসিকের সম্পাদকের আবেদলে অমনোযোগ । ঐ মাসিকে গুজরাটি, হিন্দী, তেলুগু প্রভৃতি বহির সমালোচনা বাহির হয়, বাংলা বহির প্রায়ই হয় না । বল! আবশ্যক, উক্ত সম্পাদকের বা লা বহি পাইবার দরখাস্ত মঞ্জুর হস্তলে তাহার কোন লাভ হইত না। বহিগুলি সমালোচকদের হাতে যাহত, ও তাহদের সম্পত্তি হইত । আমরা যদি আমাদের সাহিত্যসম্পদ অপরকে জানাহবার ও অপরকে তাহার অংশ করিবার নিমিত্ত চেষ্টা না করি, কেবল নিজের ঘরে নিজের সাহিত্যিক গৰ্ব্ব লইয় বসিয়া থাকি, এবং সঙ্গে সঙ্গে ক্ষোভ অভিমান ক্রোধ প্রকাশ করি, যে, কেন বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা বলিয়া অবাঙালীরা স্বীকার করিল না, তাহ হইলে এরূপ মনোভাবের ও বাহ আচরণের সঙ্গতির প্রশংসা করা ধায় না । আমর উপরে হিন্দীর রাষ্ট্রভাষা হতবার দাবীর সমর্থকদিগের অনেকের ভাষিক সাম্রাজ্যবাদের উল্লেখ করিয়াছি । তাঙ্গর একটি প্রমাণ এমন এক জন প্রসিদ্ধ নেতার লেখা হইতে দিতেছি যিনি স্বয়ং হিন্দুস্থানীর রাষ্ট্রভাষা হুইবার দাবী সমর্থন করেন অথচ পূৰ্ব্বোক্ত সমর্থকদিগের মনোভাবের সমর্থন করেন না। তিনি পণ্ডিত জবাহরলাল নেহরু । ( ইহার নামের ‘ব’টি অস্তঃস্থ ‘ব’ ! এস্থলে আসামীয় পেটকাটা ব ব্যবহার করিলেই ভাল হয় । ) নেহরু মহাশয়ের ইংরেজী আত্মচরিত হইতে আমাদের দরকারী কথাগুলি আমাদিগকে অনুবাদ করিতে হইবে না । ঐ পুস্তকের যে সরল সহজপাঠ্য অনুবাদ শ্রযুক্ত সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার করিয়াছেন এবং যাহা পরিপাটীরূপে ছাপিয়া স্থলভ মূল্যে ঐযুক্ত স্বরেশচন্দ্র মজুমদার প্রকাশ করিয়াছেন, তাহী হইতেই কথাগুলি লইব । পণ্ডিতজী বলিয়াছেন, “হিন্দুস্থানী যে ভারতের সাধারণ ভাষায় পরিণত হইবে,