পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Nరిరిక অবগু এ বিষয়ে বিশেষ সচেষ্ট থাকিতে হইবে । ভারতীয় নেতার মধ্যে মধ্যে এদেশ হইতে ব্ৰহ্মদেশে গেলে তাহাদের উৎসাহ বাড়িবে ও সেই চেষ্টা সফল হইবার সম্ভাবনা বাড়িবে। চেষ্টা অবশু ব্ৰহ্মদেশীয় নেতাদের সহযোগিতায় করিতে হইবে। এমন ভারতীয় আছেন যাহার রাষ্ট্রনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উভয় দিক্ দিয়াই নেতৃস্থানীয়। কেহ কেহ কেবল এক এক দিকে নেতা। সকল রকম নেতারই ব্ৰহ্মদেশে মধ্যে মধ্যে যাওয়া আবশ্যক । পণ্ডিতজী ঠিকই বলিয়াছেন, যে, ব্রহ্মদেশের স্বাধীনতাপ্রচেষ্টায় ভারতবর্ষকে তাহার সহায় হইতে হইবে, এবং ভারতবর্ষের স্বাধীনতা-প্রচেষ্টায় ব্রহ্মদেশকে তাহার সহায় তইতে হইবে । এখানে একটা অবাস্তর কথা বলি । ভারতীয় আছেন তাহাদের মধ্যে বাঙালীদের অন্য কোন প্রদেশের লোকদের চেয়ে কম নয়—বোধ হয় বেশী । ব্রহ্মদেশনিবাসী শিক্ষিত সব বাঙালী সরকারী চাকর্যেও নহেন । কিন্তু রাষ্ট্রীয় বা অন্যবিধ সাৰ্ব্বঞ্জনিক কাজে নেতৃস্থানীয় ভারতীয়দের মধ্যে বাঙালীর নাম প্রায়ত দেখিতে পাই না। পণ্ডিত জবাহরলাল নেহরুর সম্বৰ্দ্ধনাদি ব্যাপারেও নেতৃস্থানীয় বাঙালীদের নাম চোখে পড়ে নাই । ইহার কারণ কি ? জনসেবাসম্বন্ধীয় কাজে রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামী শ্যামনন্দের কথা আমরা বিশ্বত হইয়া কোন কথা লিখিতেছি না । ব্ৰহ্মদেশে যত সংখ্যা ভারতবর্ষ ও চানের ধৰ্ম্ম ও সংস্কৃতি সম্বন্ধীয় সম্পর্ক বহু শতাব্দী পূর্বে ভারতবর্ষীয় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বৌদ্ধধৰ্ম্ম শিক্ষা দিবার জন্য চীনদেশে গিয়াছিলেন । র্তাহারা সাম্রাজ্যস্থাপক কোন রাজ সম্রাট বা অন্য যোদ্ধার অগ্রদূত বা চর হইয়া যান নাহ, কোন প্রভুজাতির মানুষ রূপেও তাহার সাক্ষাৎ বা পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় যান নাই । ভারতবর্ষীয় ধৰ্ম্মোপদেষ্টাদিগের অসহায় অবস্থায় নদী, গিরি, অরণ্য, মরুভূমি অতিক্রম করিয়া চীন যাত্রা প্রবাসী sరీt 8 বিস্ময়কর ঘটনা। ধৰ্ম্ম ভিন্ন অন্য নানা বিষয়েও—সাহিতে্যু চিত্রকলায়, ভাস্কর্য্যে, স্থাপত্যেও–চীনের উপর ভারতবর্ষে প্রভাব লক্ষিত হয়। ভারতবর্ষের উপরও চীনের প্রভা পড়িয়াছিল। পুরাকালের এই আদানপ্রদান বরাবর রক্ষিত হয় নাই আধুনিক সময়ে রবীন্দ্রনাথ কয়েক জন বয়ঃকনিষ্ঠ সহচরকে সন্ধে লখয়া যে কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে চীনদেশে গিয়াছিলেন, তাহাই চীন ও ভারতের প্রাচীন সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করিবার প্রথম প্রয়াস । বিশ্বভারতীতে চীনের ভাষা ও সাহিত্য অধ্যাপনাৰ ব্যবস্থা সেই চেষ্টার অংশীভূত । অধ্যাপক তান য়ুন-শা- মহাশয়ের অধ্যবসায়ে ও চীনের সেনাপতি চিয়াংকাইশেক প্রমুখ রবীন্দ্রনাথের কয়েক জন চৈনিক বন্ধুর আহুকুল্যে শাস্তিনিকেতনে একটি চীন-ভবপ্রতিষ্ঠিত হইয়াছে । গত ১লা বৈশাপ ততাব গৃহ প্রবেশ-উৎসব যথারীতি সম্পন্ন হয় । তদুপলক্ষ্যে বৈদিক মন্ত্রপাঠ ও সঙ্গীতের পর কবি তাহাৰ অভিভাষণ পাঠ করেন। মহাত্মা গান্ধী, পত্তিত জবাহরলাল নেহরু প্রভূfrর বক্তব্য পঠিত হয়। চীনেৰ বাণিজ্যদৃত এবং অধ্যাপক তান য়ুন-শন বক্তৃতা করেন । উৎসবে যোগ দিবার নিমিত্ত কলিকাতা ইষ্টতে অনেক ভদ্রলোক ও ভদ্রমহিলা গিয়াছিলেন । এলাহাবাদ হস্ততে শ্ৰমত হন্দিরা নেহরু তাহার পিতার বক্তব্য লইয়া আসিয়াছিলেন । অসুস্থতাবশতঃ পণ্ডিতজী আসিতে পারেন নাই। তাহারই সভাপতি হইবার এবং চীন-ভবনের দ্বারোদঘাটন করিবার কথা ছিল । দুটা জাতির মধ্যে মনকষাকষি ঝগড়া বিবাদ যুদ্ধ অপেক্ষা এই ঘটনার গুরুত্ব অনেক বেশী। অথচ ইহার সংবাদ পৃথিবীর সর্বত্র প্রচারিত হইবার সম্ভাবনা কম। চৈনিক ভবনটি নিৰ্ম্মাণ করিতে শুনিয়াছি ৩৩• • • টাকা খরচ হইয়াছে। পরিকল্পনাটি শ্ৰীযুত স্বরেন্দ্রনাথ কবের, নিৰ্ম্মাতা শ্রযুক্ত বীরেন্দ্রমোহন সেন। এই ভবনে চৈনিক সাহিত্য আদির অধ্যাপক ও ছাত্রদের থাকিবার স্থান আছে, ইহাতে বহু সহস্ৰ চৈনিক গ্রন্থ থাকিবে, অনেক হাজার বহি হতিমধ্যেই আসিয়াছে, এবং চীনের ললিতকলার অনেক প্রতিলিপিও ইহাতে রক্ষিত হইবে।