পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষণচ বঁশকুড়ার দুটি স্মরণীয় ঘটনা రిక్షాఢ অনাবৃষ্টি । তার পর কুড়ি বছর চলে গেছে । এর মধ্যে এমন ধান হয়েছিল কিনা, জানি না। ইনান বোডে এসব খবর লিখে রাখা উচিত। গত বৎসরের ধান্ত-বৃদ্ধির দুতিন কারণ মনে আসছে । কিন্তু মনে আসা ও কার্যে প্রত্যক্ষ করা এক নয় । বাকুড়া নগর, বাকুড়ার পশ্চিম ভাগের অন্তর্গত। এখানে বিন্ধ্যাচলের পুর্বাঞ্চলের লক্ষণ বতর্মান । সেই ডাঙ্গা আর ডহর। ডাঙ্গা হ’তে ডহর কোথাও আট হাত, কোথাও ষোল হাত নীচে । কোথাও কোথাও ডহর ভরাট হয়ে প্রায় ডাঙ্গার সামিল হয়েছে। ডহরে কুঅ' কাটলে অল্প নীচে জল পাও| যায়। না জেনে না বুঝে ডাম্বায় কাটলে পাথর কাটতে হয়। অনেক নীচে না গেলে জল পাও যায় না । নগরের উত্তরে ও দক্ষিণে দুই নদী বয়ে গেছে। নদীর তলায় পাথরের চটান । নদীতে জল থাকে না । গবমেণ্ট কৃষিক্ষেত্রের দক্ষিণাংশ ডাঙ্গা, উত্তরাংশ বৃহৎ ডহর। ডহরের উত্তর ভাগ হতে দক্ষিণাংশের ভাঙ্গা দুতলার সমান উচু। ক্ষেত্রের পাথর বাছা হয়েছে, মাটি চালা হয়েছে, তবে চাষ হ’চ্ছে । মাটি লাল । এক অতীত যুগে যখন পাহাড় বনাচ্ছন্ন ছিল, তখন বনভূমির বৃষ্টিজল ডহরে জমা হ’ত, লালমাটি থিতিয়ে পড়ত। পূর্বকালের লালমাটি দক্ষিণে মেদিনীপুর পর্যন্ত বিস্তৃত আছে। এই লাল মাটিতে পাচ সাত ভাগ মুত্তি আছে । এ মাটি মন্দ নয় । লালমাটির গায়ে স্থানে স্থানে মৰ্কট পাথর বিস্তীর্ণ হ’য়ে আছে । কোথাও চাঙ্গড়, কোথাও চটান । এই পাথর লৌহময় । কিন্তু জল ও পাতা-পচানি পেলে গুড়া হ’য়ে যায়, অনেক বছর পরে লালমাটিতে পরিণত হয়। কিন্তু ছোট ছোট কাকর বহুকাল থাকে । এই দুই মাটিই পশ্চিম বাকুড়ার মাটি । (১) একটাতেও পচাট ( পচাপাত ) নাই, জল ধরে না। ছ শ, আড়াই শ. বছরের বড় গাছ দূর হতে চিনতে পারা যায় না। পাতা ছোট ছোট, ভাল হ’তে যদি বা জটা ঝুলেছে, সে জটা শূন্যেই আছে, তলার মাটিতে ঠেকতে পারে নি। গাছের পাতা তলায় পড়ে। যদি সে পাতা সেখানেই থাকে, ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে না ফেলে, তাহ’লে সেখানকার মাটি রসা হয়। কিন্তু তেমন সুযোগ প্রায় ঘটে না। ডাঙ্গায় ঝড় বেশী লাগে। { ২ ) বর্ষ থেমে গেলে কাতিক মাস হ’তে মাটি শুখাতে থাকে। আর এমন শুখায় যে কোদাল চলে না, মাটিতে যেন সিমেন্ট মিশেছে। গতিও চলে না । জল ঢেলে, তবে গাতি চালাতে হয়। বর্ষাকালে সে মাটিই সপ-সপ করে । (৩) শুথার দিনে বাতাস এত শুষ্ক হয় যে গাছের গোড়ায় জল ঢাললেও পাতা ঝামর্যে যায়। শিকড় জল টেনে পাতায় পৌছিয়ে দিতে পারে না। এই তিন দোষ, দুটি মাটির, একটি বায়ুর, গত বছরের বর্ষাতে কেটে গেছল। ডাঙ্গ ও বাইদ জমিতে বরাবর জল ছিল, গাছ শুখায় নি। বায়ু ভিজা ছিল, গাছকে গরমে হাফাতে হয় নি, গরম জলে গোড়া ডুবিয়ে থাকতে হয় নি। কিন্তু তার পর ? মাটি উর্বরা হ’ল কি করে’ ? জমিতে সার না দিলে ধান হয় না। আর সার মানেই গোবর, আর গোবর মানেই সার । থ’ল, হাড়গুড়া, বিলাতী মসলা, সে সব সার’ নয়, গাছের দোহদ । বৃষ্টিজলে সারের গুণ হ’ল কি করে’ ? ধানচাষের পক্ষে মৃত্তির ভাগ কম থাকলেও চলে। বালি-ফুড়েও ধান জন্মাতে পারা যায়। কিন্তু সার দিতেই হবে । এত সার কোথায় পাও৷ যাবে ? জমিতে ধনিচ কিম্বা শণ চাষ করে মাটিতে পচিয়ে ফেলবার সময় পাও যায় না । সে বুদ্ধি এ জেলায় চলবে না । বর্ষা দেরিতে নামে, ধানচাষেরই সময় বয়ে যায়। অতএব দেখছি, বন কেটে বাঁকুড়ার সর্বনাশ হয়েছে। ধানচাষ ইন্দ্রের রুপা ভিন্ন হ’তে পারে না । (২) মেলেরিয়া-হ্রাস পশ্চিমবঙ্গ মেলেরিয়ার জন্য উৎসন্ন হয়েছে । কি কারণে কে জানে প্রথমে বৰ্দ্ধমানে আরম্ভ হয়েছিল । সেখান হ’তে ক্রমে ক্রমে দক্ষিণে আরামবাগ দিয়ে মেদিনীপুরে এবং পূর্বদিকে বৰ্দ্ধমান ও হুগলী জেলায় ছড়িয়ে পড়ে’ছিল। কিছু fদন পর্যন্ত পশ্চিমের দেশ রক্ষা পেয়েছিল । তখন বীরভূম ও বাকুড়ায় মেলেরিয়া ছিল না। বাকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর সবডিভিজন বাকুড়া জেলার পূর্বভাগ। এটির প্রকৃতি পশ্চিম হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন । মাটি পাথুরে নয়, ডাঙ্গা ডহরও নাই। এর পূর্বদিকে দামোদর ও বর্ধমান জেলা, দক্ষিণে আরামবাগ | দুটাই