পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Nరి\లిS প্রবাসী ১৩৪৪ ফেলিয়া উপার্জনের কথা বলিয়৷ থাকি, ইংরেজীতে sweat of the brow, foots co-fool off-l কথা আছে। অর্থাৎ যাহাতে এমন পরিশ্রম করিতে হয় যে তাঁহাতে স্বেদোদগম হয় । দেবকল্বারা এক খণ্ড মেঘ ধরিবার জন্য এরূপ পরিশ্রম করিয়াছিলেন যে তাহাতে র্তাহাদের স্বেদোদগম হইয়াছিল। এই অর্থ টাই গরমের সময়ে মেঘ ধরার অর্থ অপেক্ষ ভাল বলিয়া আমার বোধ হয় । এই শ্লোকে কালিদাস যদি সাহস করিয়া স্বেদ অর্থে মেঘ শব্দ প্রয়োগ করিয়া থাকেন তাহা হইলে তিনি নিশ্চয়ই বাঙ্গালী ছিলেন । আমরা কথোপকথন অথবা পরিচয় অর্থে ‘আলাপ’ শব্দ ব্যবহার করিয়া থাকি, কিন্তু আলাপের প্রকৃত অর্থ রাগরাগিণীর সাধন । “আমোদ' শব্দের অর্থ সুগন্ধ, কিন্তু আমরা প্রমোদ বা রসিকতা অর্থে আমোদ বলিয়া থাকি । ‘প্রশস্ত’ শব্দের অর্থ ভাল, কিন্তু আমর চওড়া অর্থে শব্দটা প্রয়োগ করিয়া থাকি । ‘সহজ’ শব্দের অর্থ সঙ্গে জাত, কিন্তু আমরা অনায়াস ব! অল্পায়াস সাধ্য অর্থে সহজ শব্দ ব্যবহার করিয়া থাকি । অতি সাবধান লেখকেরাও কোন-না-কোন রূপে উক্ত ভুল অর্থে সহজ শব্দের ব্যবহার হইতে মুক্ত নহেন । বাঙ্গলা দেশের এক জন সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ পণ্ডিত আমাকে বলিলেন যে তিনি কখনই ভুল অর্থে সহজ প্রয়োগ করেন না । কিন্তু তাহার লেখাতে আমি অনায়াস বা আল্লায়াস অর্থে অর্থাৎ adverb রূপে সহঞ্জ শব্দের প্রয়োগ দেখিয়াছি । ‘সুতরাং’ শব্দের অর্থ বিশেষরূপে বা অধিকরূপে ; কিন্তু আমাদের স্বতরাং শব্দের অর্থ অতএব বা এই হেতুতে। আমার কখনও কখনও মনে হইয়াছে যে আমাদের ‘স্বতরাং শব্দ হয়ত প্রথমে a fortiori শবে প্রযুক্ত হইয়াছিল। এক জন প্রধান কবি ন!—কি শেষরাত্রি অর্থে প্রদোষ শব্দ প্রয়োগ করিয়াছেন অথচ শব্দটার অর্থ সন্ধ্যাকাল । ‘আদৌ’ শব্দের অর্ণ আদিতে, কিন্তু আমরা মোটেই বা কিছুমাত্র অর্থে শব্দটার প্রয়োগ করিয়া থাকি। “হিংসা’ শব্দের অর্থ বধ করা, কিন্তু আমরা দ্বেষ পোষণ করাকে হিংসা বলি । প্রস্ত অর্থাৎ ‘প্রমাদ’ শব্দের অর্থ ভুল, কিন্তু আমাদের প্রমাদের অর্থ বিপদ । যে ব্যক্তি ভুল করিয়াছে তাহাকে প্রমত্ত বলা উচিত কিন্তু আমরা প্রমত্ত বলি অহংকুত বা গৰ্ব্বিত লোককে । যে করে সে কর্তা । কখনও কর্তা বলা হয়, কিন্তু আমরা কর্তা বলি অধিকারী অর্থাৎ স্বামীকে। গৃহস্বামীকে বাড়ীর কর্তা বলি। কৰ্ত্তা’ শব্যের কথা লিখিতে লিখিতে একটা গল্প মনে পড়িল । এক পণ্ডিত কোন স্থানে যাইতে মাইতে দেখিলেন যে পথপাশ্বে এক বাড়ীতে মহাভারতের কথা হইতেছে। পণ্ডিত কথা শুনিবার জন্ত সেই বাড়ীতে প্রবেশ করিলেন এবং কথক মহাশয়ের ব্যাখ্যা শুনিয়া বুঝিলেন যে কথক সংস্কৃত কিছুই জানেন না। একটা শ্লোকের ব্যাখ্য! এত অদ্ভূতরূপে ভুল হইয়াছিল যে তাহ শুনিয়া পণ্ডিত থাকিতে না পারিয়া কথককে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, মহাশয় আপনার ব্যাখ্যাটা ঠিক হয় নাই, দেখুন দেখি ঐ শ্লোকের মধ্যে কে কৰ্ত্ত । কথক শ্রোতাদিগকে বলিলেন, তোমরা কি এমন নিৰ্ব্বোধ এবং মুখ আর কোথাও দেখিয়াছ ? সমস্ত মহাভারতের কৰ্ত্ত: বেদব্যাস । সমস্তের কত্তা যিনি খণ্ডের কৰ্ত্তাও অবশুই তিনি । সুতরাং এ শ্লোকের কৰ্ত্তাও অবশুই বেদব্যাস। এ সামান্য কথাটাও এ লোকটা জানে না । ইহাকে মহাভারত শুনিতে দেওয়াও অসুচিত। তখন শ্রোতার সকলে মিলিয়া পণ্ডিতকে তাহাদের মধ্য হইতে বাহির করিয়া Nominative-C** ***,\! সেই দিল । "যথেষ্ট' শব্দের অর্থ যত প্রয়োজন ততমাত্র। কিন্তু সংবাদপত্রে সৰ্ব্বদাই দেখিতে পাই যে অত্যস্ত অর্থে শব্দট। ব্যবহৃত হইয়া থাকে। যেমন নিরপরাধ লোককে ধরিয়া যথেষ্ট প্রহার কর । বাঙ্গল দেশে প্রায় সকলেই পটিকে (puttiকে) বলে পুডিং। ধাৰ্ম্মিক শব্দটা ব্যাকরণ অনুসারে মহয্যের প্রতি প্রযোজ্য, কিন্তু দুই জন শ্রেষ্ঠ লেখক ধাৰ্ম্মিক কাৰ্য' লিখিয়াছেন । পূৰ্ব্বে মৃত ব্যক্তিকে ঈশ্বরপ্রাপ্ত বলা হইত। কয়েক বৎসর হইল তাহার পরিবর্তে স্বগীয় লেখা হইতেছে। এইরূপ লেখা যে ভুল তাহা একটু ভাবিয়া দেখিলেই উপলব্ধ