পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Nこ8ァー প্রৰণসী ১৩৪৪ জন্য কোন প্রমাণ ঐ সকল নিদর্শনে নিহিত নাই। সেই প্রমাণের সন্ধান ভারতবর্ষের বাহিরে যেসমস্ত দেশের সঙ্গে প্রাচীন ভারতের আদান-প্রদান ছিল সে-সমস্ত দেশে পাওয়া যায়। এই প্রকারে ভারতবর্ষের ইতিহাসের পুনরুদ্ধার অনেক স্থলে বিদেশে প্রাপ্ত প্রমাণ অবলম্বনে সাধিত হইয়াছে। তাই সৰু জন মার্শালের রচিত মহেনজোদড়ে-সম্বন্ধীয় বিপুল গ্রন্থে ভূগর্ভ-খনিত বিস্তর উপকরণ ও নিদর্শন সমাহিত হইয়াছে, কিন্তু তাহার মধ্যে কালনির্ণয়ের কোন নিদিষ্ট প্রমাণ বা ইঙ্গিত সঠিক পাওয়া যায় না। কিন্তু উক্ত গ্রন্থ প্রকাশের কিছুদিন পরেই শিকাগে ওরিয়েন্টাল ইনষ্টিটিউট প্রত্নতত্ত্ববিৎ লইয়া ইরাক দেশে একটি অভিযান প্রেরণ করিয়াছেন। ইহার বোগদাদের নিকট টেগ্‌-আস্মার নামক পুরাতত্ত্বনিদর্শনলাভের একটি আশাপ্রদ ক্ষেত্রে খনন-কাৰ্য্য আরম্ভ করিয়া দেন। সেখানে প্রথম খননের ফলে ভূমির উপরের স্তরেই নানাবিধ পুরাতন সামগ্ৰী পাওয়া গিয়াছে। তাহার মধ্যে একটি মুদ্র পাওয়া গিয়াছে। এই মুদ্রার উপর একটি লিপি উৎকীর্ণ আছে। লিপিটিতে একটি নাম, যথা, শু-দুর-উল (Shu-dur-ul) উল্লিখিত হইয়াছে। আক্কা-এর সারগন-বংশীয় একটি রাজার নাম ; ইনি ঐ বংশের শেষ রাজা এবং ইহার কাল আনুমানিক খ্ৰীষ্টপূৰ্ব্ব ২৫০০। এই মুদ্রাটির সঙ্গে জড়িত আবার আর একটি মুদ্র পাওয়া গিয়াছে যাহ নিঃসন্দেষ্ট ভারতবর্ষের জিনিষ। তাহার প্রমাণ মুদ্রাটিতে এমন কয়েকটি জন্তুর প্রতিরুতি উৎকীর্ণ বুহিয়াছে যাহার! বাবিলনজাত নহে। তাহাদের প্রত্যেকটি ভারতবর্ষের নিজস্ব জন্তু, যথা, হস্তী এবং গণ্ডার। ইহা হইতে নিশ্চিত ভাবে প্রমাণিত হইতেছে যে এই মুদ্রাটি সেই যুগে ভারতবর্ষ হইতে রপ্তানি হইয়া টেপ্‌-আস্মার প্রদেশে নীত হইয়াছিল। এইরূপ আরও অনেক প্রমাণ ক্রমশ সেখানে আবিষ্কৃত হইতেছে । এদিকে এই ধরণের মুদ্ৰ মহেনজোদড়োর মধ্যবর্তী স্তরে পাওয়া যায়। সুতরাং সেই স্তরের সময় অন্ততঃ খ্ৰীষ্টপূৰ্ব্ব ২৫••, এইরূপ অনুমান নিঃসন্দেহে করা যাইতে পারে। ইহা হইতে আরও অনুমান করা যাইতে পারে যে মহেনজোদড়েসভ্যতার উৎপত্তির কাল আরও প্রাচীন ; কারণ এই ইহা সভ্যতার উৎপত্তির নিদর্শন নিম্নতম স্তরে নিহিত। মহেনজোদড়োতে খনন-কার্যের ফলে ভূমির নিম্নে ৪০ ফুটের অধিক নীচের স্তরে সভ্যতার নানাবিধ পরিচয় আবিষ্কৃত হইয়াছে। সেইগুলিকে ভাগ করিয়া প্রত্নতত্ববিদেরা মনে করেন, যেন সাতটি পৃথক পৃথক শহর সেখানে স্তরে স্তরে সজ্জিত রহিয়াছে । সুতরাং মধ্যবৰ্ত্তী স্তরের আনুমানিক কাল যদি খ্ৰীষ্টপূৰ্ব্ব ২৫০০ ধরা যায় তাহ হইলে নিম্নতম স্তর ও প্রাচীনতম সভ্যতা ও শহরের কাল অর্থাৎ ভারতের বাস্তব-প্রমাণিত সৰ্ব্বপ্রথম সভ্যতা যে অন্ততঃ ইহার এক হাজার বৎসর পূৰ্ব্বে উন্মেষিত হইয়াছিল, ইহা প্রত্নতত্ত্ববিদগণ নি:সন্দেহেই অল্পমান করেন । এই শ্রেণীর প্রমাণের দ্বারাই ভারতের ভাব ও সভ্যতার ইতিহাস ও ক্রমবিকাশ কালের অন্নবর্তী হইয়া ধারাবাহিকরূপে প্রকটিত হইবার সম্ভাবনা হইয়াছে । ভারত যে সভ্যতার আদি উৎপত্তির স্থল তাহার আরও প্রমাণ অন্যদিক হইতেও পাওয়া যায়। সে প্রমাণ ভূতত্ত্ব- ও নৃতত্ত্ব- বিদগণের অঙ্গুসন্ধান ও গবেষণার ফল। এই বিশেষজ্ঞ বৈজ্ঞানিকগণের মতে মাতৃযের কেন, আদিম মানুষই উত্তর-ভারতে হিমালয় অঞ্চলে আবিভূত হইয়াছে। প্রাণিতত্ত্ববিদগণ অল্পমান করেন যে প্রকৃতিদেবী অনেক দিন ধরিয়া যুগের পর যুগ, কল্পের পর কল্প মামুষের আবির্তীবের জন্য অপেক্ষা করিয়া আসিন্তেছিলেন । বাস্তবিক জড় হইতে জীবনের প্রথম উন্মেষ যে অণু-পরমাণুতে প্রকাশিত হইয়াছে তাই। হইতে মানুষের মত উন্নত জীবের উদ্‌গম যে অপরিসীম কালসাপেক্ষ, তাহার সন্দেহ নাই। ডারউইন-প্রমুখ প্রাণিতত্ত্ববিদগণের মতে যে শ্রেণীর জীব মমুয্যাকারে বিকশিত হইল তাহার পূৰ্ব্বের জীব বানর জাতি। পৃথিবীর ক্রমবিকাশের এক অবস্থায় ভারতের উত্তর ভাগ এক মহাসমুদ্রে বিলীন ছিল। সেই স্বনী জলধি হইতে যখন হিমালয়ের অভু্যত্থান সংঘটিত হইতে আরম্ভ হয় তখন বানরজাতি এই অঞ্চলের নিবিড় বন । বৃক্ষ অবলম্বন করিয়া এইখানেই এক রকম কেন্দ্রীভূত সমবেত হইয় পড়িয়াছিল। তার পর যখন হিমালয়ে অভু্যখানের সঙ্গে সমগ্ৰ অটবী ও বিটপী নিম্নভূমির উষ্ণং ছাড়িয়া উপরের শৈতো আসিয়ু পড়িল, তখন সমগ্র উদ্ভি সভ্যতা