পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষণঢ় উদ্বেগু নহে। এখানে একটা বিষয় বিশেষরূপে লক্ষ্য করিতে হইবে এই যে, জগতে নিপীড়িত বা অধ:পতিতদের উদ্ধার বা অবস্থোন্নতির চেষ্ট এক্ষণে কিছু নূতন নহে। সোস্যালিজম্—ধাহা হইতে বৰ্ত্তমান কমুনিজমের উদ্ভব, তাহ জগতে বহুকাল পূৰ্ব্বেই উখিত হইয়াছে। সোস্তালিজমের মূলমন্ত্র এই বলা যায় যে, সকলের মধ্যে ধন বা অর্থের বণ্টন যতদূর সম্ভব ন্যায়সঙ্গত হয়। বলা যায়, ক্যাপিটালিজমের বিরোধীরূপে সোস্যালিজমের উদ্ভব বহুকাল পূৰ্ব্বেই হইয়াছে। যাহাদের চিত্তেই মহামু ভূবতা ও উদারতা আছে তাহারাই নিপীড়িতদের দুঃখে কাতর না হইয়ু থাকিতে পারেন নাই, এবং তfহাদের চেষ্টাও হইয়াছে জগতে এরূপ অসামঞ্জস্য দূর করা । কিন্তু বৰ্ত্তমান কমুনিষ্টদের ও সোসালিষ্টদের মত ও পথে অনেক পার্থক্য আছে । কমুনিষ্টদের পন্থ। বা উপায় প্রধানত: সংগ্ৰামমূলক। র্তাহারা বিশ্বাস করেন যে নিপীড়িত বা অধ:পতিতদের উদ্ধারের জন্য শ্রেণীবিরোধ অবশুম্ভাবী ও একান্ত আবশ্যক। ধনিক-সম্প্রদায়ের সমূলে বিনাশ তাহাদের উদেশ্ব এবং এরূপ করিতে পারিলে এক বৰ্গহীন বা শ্রেণীহীন সমাজ ও রাষ্ট্র স্থাপনের কল্পনা সফল হয়। নিম্নশ্রেণীকে উঠাইতে গিয়া উচ্চ বা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর এই ধ্বংসসাধনের চেষ্টটি ভয়াবহ, ফ্যাপিষ্ট ব। নাৎসিরা ইহা নিবারণ করিতে চাহেন । তাহারাও ধে শ্রমিক ও কুষাণদের দুঃখে দুঃখিত নহেন তাহা নহে, কিন্তু তাহারা উচ্চ বা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ধবংস চাহেন না । এই জন্যই ফ্যাসিষ্টর কমু্যনিষ্টদের প্রধান শক্র হইয়াছেন, এবং একে অন্যের ধ্ব স-সাধনে বদ্ধপরিকর। আমাদের দেশেও কমুনিজমের ঢেউ ও প্রভাব যথেষ্ট আসিয়া পড়িয়াছে এবং উহার উক্ত ভাব ও যথেষ্ট প্রচারিত হইতে আরম্ভ করিয়াছে। আমাদের দেশের কমুনিষ্টরাও প্রসার করিতে আরম্ভ করিয়াছেন যে বর্তমান গণতন্ত্র প্রকৃত গণতন্ত্র নহে, উল্লাহ ধনিকদের সঙ্ঘ, উহাকে ধ্বংস করিয়া উহার স্থানে এক সোস্যালিষ্ট রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠিত করিতে হইবে । ইহার ব্রিটিশ গণতন্ত্রকে ফ্যাসিষ্টতন্ত্র নামে অভিহিত করিয়া থাকেন। ইহার অর্থ এই যে, ফ্যাপিষ্টতন্ত্র যেরূপ গণতন্ত্রের বিলোপ সাধন করিয়াছে, ব্রিটিশতন্ত্রও অনুরূপ। একথা স্বীকার করিতে হইবে যে, পৃথিবীর কোনও ব্যবস্থাই গণতন্ত্রের স্বৰূপ ve^్స সম্পূর্ণ নহে, দোষযুক্ত। যদি এই কথা ধরা যায় ত অবশু স্বীকার করিতে হইবে যে ত্রিটিশ গণতন্ত্রও দে যশূন্য নহে। কিন্তু একথা সকল নিরপেক্ষ ব্যক্তিকেই স্বীকার করিতে হইবে যে, বাস্তবিক গণতন্ত্র বলিতে যদি কিছু জগতে থাকে ত তাঙ্গর আভাস ব্রিটেনে ব্রিটিশতস্ত্রেই পাওয়া যায়। গণতন্ত্রের সোজা কথায় অর্থ এই যে, যাহাতে সকল সম্প্রদায়ের মত স্থান পায় ও আদরণীয় ইয়। ব্রিটিশতস্ত্রের সহিত যাহারা পরিচিত র্তাহারা জানেন ইহা কতদূর সত্য। ব্রিটিশতন্ত্র ব্রিটেনে গণতন্ত্রের পথে অধিক হইতে অধিকতর অগ্রসর হইতেছে, এবং ইহ সত্য বলিয়াই ব্রিটেনে আজ অবধি কমুনিজমু বা ফ্যাসিজম্ কোন মতেরই প্রাবল্য দেখা যায় না, এবং দেখা যাইবে বলিয়াও মনে হয় না। কারণ, ইংরাজ জাতির এটুকু সহজ বুদ্ধি আছে যে, বৰ্ত্তমান কমুনিজম্ ও ফ্যাসিজম্ অর্থে গণতন্ত্রের যে অস্বীকৃতি বুঝায় ইহা তাহারা বুঝেন। ইংরাজ জাতি ব্যক্তিগত স্বাধীনতাকে এত মূল্যবান মনে করেন বলিয়াই ইংলণ্ডে গণতন্ত্র সফল হইয়াছে। অন্য যে-সব দেশে তাহা নাই তথায় গণতন্ত্র ব্যর্থ হইয়া গিয়া ডিক্টেটরত্ব প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। আমাদের দেশের র্যাহারা ব্রিটেনের ব্রিটিশতন্ত্রকে ঘৃণ্য ফাসিষ্টতন্ত্র বলেন তাহদের যুক্তি ন্যায়সঙ্গত বলিয়া মনে হয় না । ইহাদের নিকট একমাত্র বমুনিষ্টতত্ত্বই গণতন্ত্রের স্বরূপ। কিন্তু কমুনিষ্টতত্ত্বও যে ফ্যামিষ্টতত্ত্ব অপেক্ষ কোন অংশে ভাল নয় একথা তাহারা বুঝেন কি-না জানি না। সম্প্রতি আয়লণ্ডের ডাবলিন শহরে যে নিখিল-আয়লণ্ড শ্রমিক সম্মেলন হইয়া গেল তাহাতে ফ্যাসিজম্কে নিন্দ করিয়া এক প্রস্তাব উত্থাপিত হইলে একজন শ্রমিক সভ্য উঠিয়া বলেন যে, কমুনিজমৃকেও নিন্দ করিয়া এক প্রস্তাব গ্রহণ করা হউক । ইহা উক্ত সম্মেলনে প্রথমবার প্রস্তাবিত হইল । এতকাল উথার ফ্যাসিজম্কেই নিন্দ করিয়া আসিতেছিলেন অ-গণতান্ত্ৰিক বলিয়, এইবার কমুনি জম্কেও অগুরুপ অ-গণতান্ত্রিক বলিয়া প্রথম নিন্দ করা হইল । ইহা যে অতি সত্য সে বিষয়ে সন্দেহ করিবার কিছু নাই। ডিক্টেটরত্ব যেখানে বহাল, সেখানে গণতন্ত্র কখনই থাকিতে পারে না ; দুইটি একেবারেই অসমঞ্জস। অনেকে ফ্যাসিজম্ অপেক্ষ কমুনিজমৃ যে অধিকতর শ্রেষ্ঠ এই কথা দেখাইবার জন্য