পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭২ প্রবাসী ్సN288 বলিয়া থাকেন যে, রাশিয়ার লোকেরা বড় সুখী, এ-কথা সত্য নহে।” রাশিয়ার সকলেই যদি সুখী হইত তাহা হইলে যে-সব অনাচার-অত্যাচার এখনও ঘটিতেছে, তাহার কোনও স্থান থাকিত না । অবশু, এ-কথা বলা যায় যে, শ্রেণী বা সম্প্রদায় বিশেষ সুখী হইতে পারেন, কারণ রাষ্ট্রবা সমাজ-ব্যবস্থায় তাহারাই অধিকতর সুখ-সুবিধার অধিকারী হইয়াছেন, অথবা অধিকারী হইয়া না থাকিলেও হইবার আশা রাখেন। ইহা ফ্যাসিষ্টতন্ত্রের পক্ষেও সত্য। মুসোলিনী বা হিটলারের অধীনে তাহাদের শিষ্য বা মতাবলম্বী লোকেরা অধিক সুখ-সুবিধার অধিকারী হইয়াছেন বা হইবার আশা রাখেন বলিয়া তাহারা সৰ্ব্বাস্তুকরণে উক্ত শাসনতন্ত্র সমর্থন করেন ও তাঁহা রক্ষা করিবার জন্যও বদ্ধপরিকর। কাজেই লোকের সন্তোষ বা সস্তোষের আশা যদি তদধীনস্থ শাসনতন্ত্রের ঔৎকর্ষের পরিচায়ক হয় তাহা হইলে কমুনিষ্টতন্ত্র ও ফ্যাসিষ্টতন্ত্রে কোনও প্রভেদ নাই । সুতরাং উক্তরূপ যুক্তি যে কতদূর অসঙ্গত তাহ সহজেই অল্পমেয়। এ-কথা স্বচ্ছন্দেই বলা যায় যে, গণতন্ত্রের স্বরূপের আভাস আমরা ফ্যাসিষ্টতন্ত্র বা কমুনিষ্টতত্ত্বে পাই না ; এই জন্যই ইয়োরোপে এখনও ব্রিটিশ ও ফরাসী তন্ত্র গণতন্ত্র বলিয়া উচ্চ ও সম্মামের স্থান অধিকার করিয়া আছে যদিও ফ্রান্সে এক্ষণে কমুনিষ্ট গভর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় লোকেরা পূৰ্ব্বে যে অবাধ ব্যক্তিগত স্বাধীনতা উপভোগ করিতেন তাহার খৰ্ব্বতা সাধনের চেষ্ট হইতেছে শুনা যায় । --- কলিকাতা হিন্দু অনাথ-আশ্রম ও হিন্দুর বিবাহ-সমস্যা শ্ৰীসরসীলাল সরকার, এম-এ, এল-এম-এস যে-সকল হিন্দু বালক-বালিকা নিরাশ্রয়, যাহাদের জীবনধারণের, খাদ্য ও বস্ত্র প্রভৃতি সংগ্রহের কোনই উপায় নাই, তাহারাই কলিকাতা হিন্দু অনাথ-আশ্রমে স্থান পাইতে পারে। দশ বৎসরের অধিকবয়স্ক কোনও বালক বা বালিকাকে আশ্রমে লওয়া হয় না এবং বেশ্বালয় হইতে উদ্ধারপ্রাপ্ত কোনও বালিকার বয়স সাত বৎসরের অধিক হইলে সে এই আশ্রমে স্থান পাইতে পারে না । কুড়ি বৎসর বয়স পর্য্যস্ত ছেলেদের আশ্রমে রাখা যাইতে পারে। মেয়েরা যত দিন বিবাহিত না হয় তত দিন আশ্রমে থাকিতে পারে। তবে যদি আশ্রমের কর্তৃপক্ষ মনে করেন যে কোন মেয়ে বিবাহিতা না হইলেও নিজের জীবিক অর্জন করিবার মত উপযুক্ত হইয়াছে, তাহা হইলে তাহাকে আশ্রম হইতে বিদায় দেওয়া যাইতে পারে। আশ্রমে সাধারণ ভাবে লেখাপড়া শেখান হয় এবং অর্থকরী বিদ্যা শিক্ষা দেওয়ারও ব্যবস্থা আছে । ছেলেদের পুস্তক বাধাই, বেতের কাজ, বস্ত্ৰ-বয়ন ও সেলাই শিক্ষা দেওয়া হয়। মেয়েদের বস্ত্ৰ-বয়ন, সেলাই এবং অর্থকরী কারুশিয় শিক্ষা দেওয়া হয় । আশ্রমে অল্পবয়স্ক কুমারী বালিকারা ভৰ্ত্তি হয়, সুতরা তাহাদের বিবাহের ভারও আশ্রমের কর্তৃপক্ষের। এই বিবাহসমস্ত আজকালকার দিনের একটি গুরুতর সমস্যাঃ দাড়াইয়াছে । বর্তমানে আর্থিক দুর্দশা ও পারিপাশ্বিক অবস্থার পরিবর্তনের জন্য হিন্দু পরিবারে মেয়ের বিবাহ দেওয়া বড়ই কঠিন হইয়াছে। কায়স্থ, ব্রাহ্মণ ও বৈদ্য প্রভৃতি জাতির মধ্যে গৃহে গৃহে অধিকবয়স্ক অবিবাহিত কুমারী দেখা যায়। লেখক স্বয়ং প্রাচীন হিন্দুসমাজভূক্ত কায়স্থ, কায়স্থ-সমাজের মধ্যবিত্ত পরিবারের অবস্থা তাহার ভাল করিয়াই জানা আছে। ইহা নিশ্চয় করিয়া বলা যায় যে আর্থিক অভাবের জন্মঃ আজকালকার ছেলেরা সহজে বিবাহ করিতে চাহে না । দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত কায়স্থ-গৃহের কন্যাভারগ্রস্ত পিতামাতাঃ দুর্দশ অবর্ণনীয়। কায়স্থ-সভা হইতে প্রকাশিত কায়