পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশষার্চ আকাশ হইতে পড়িলেন। পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাব যে এত দূর ভয়ঙ্কর হইতে পারে তাহা তাহার ধারণার অতীত ছিল । তিনি অবিলম্বে মাধব কুতুকে ডাকিতে পাঠাইলেন। কি করিয়া এমন ব্যাপার ঘটিতে পারে তাহা তাহার মাথায় আসিতেছিল না । ছ’কড়ি লিখিয়াছে— “বাব, আমাকে ক্ষমা করিবেন । আমি প্রায় ছয় মাস পুৰ্ব্বেষ্ট বিবাহ করিয়াছি । আপনাকে এ-কথা জানাই নাই তাহার কারণ আপনি স্ত্রীশিক্ষার ঘোর বিরোধী । মেয়েটি লেখাপড় কিছু জানে। ম্যাটিক পাস করিয়াছে। আমাকে ক্ষম; করিবেন। যদি অভয় দেন আমরা উভয়ে গিয়া আপনাদের প্রণাম করিব ও সকল কথা খুলিয়। বলিব।" কুণ্ডু আসিলে তিনি পত্রটি তাহার হাতে দিলেন এবং বলিলেন, “চ’কঢ়িব চিঠি পড়ে দেপ—এর মানে আমি কিছু বুঝতে পারছি না । পোদার-বংশে এমন কুলাঙ্গার জন্মায় ।” কুণ্ডু নীরবে পত্ৰখানি পাঠ করিলেন এবং আরও কিছুক্ষণ নীরব থাকিয়া বলিলেন, “লভে পড়েছে—” “কিসে পড়েছে ?" “লভে-লভে-–মানে প্রেমে—* পোদ্ধাব মহাশয় শুনিয় স্তম্ভিত ইয়া গেলেন। তাহার পর বুলিলেন, “এর মূলে কি আছে জান ?" কুণ্ডু বলিলেন, “পাশ্চাত্য শিক্ষা—” “ন, আমার গিন্নি। ওরষ্ট পরামর্শে আমি ছেলেটাকে কলকাতায় পড়তে পাঠাই—দাও চিঠিখানা—” পোদ্দার পত্রপানি লইয়া খড়ম চট্‌চটু করিতে করিতে অন্তঃপুরে চলিয়া গেলেন । গৃহিণীর সহিত র্তাহার যে বচনfবনিময় হইল তাহ প্রকাশ করিতে সঙ্কুচিত হইতেfছ। পরদিন আর এক কাগু ঘটিল এবং তাহার ফলে পোদার মহাশয়কে হরিণহাটি ত্যাগ করিতে হইল। কাওটি এই— বিশ্বনাথেরও একটি পত্র আসিল । তিনি পরদিন আসিতেছেন । দিশাহারা পোদার মাধব কুণ্ডুর নিকট ব্যক্ত করিলেন যে বিশ্বনাথের নিকট তিনি মুখ দেখাইতে পাfরবেন না। لا يخ مصيدة 8 যুগাম্ভর Bの? র্তাহার পক্ষে হরিণহাটিতে আত্মগোপন কর। আরও শক্ত । কুণ্ডু বলিলেন, "চলুন না, এই সময় বৃন্দাবনের তীর্থটা সেরে আসা ধাক। এক ঢিলে দুই পার্থীই মরবে--” পাচকড়ি পোদ্দার তীর্থধাত্রা কfরলেন। কুণ্ডু সঙ্গী। 创 দীর্ঘ ছয় মাস পোদার মহাশয় তীর্থে তীর্থে ভ্রমণ করিয়া বেড়াইলেন । কুণ্ডু সঙ্গে থাকাতে ভ্রমণটা মনোরমই হইয়ছিল। ফিরিবার পথে কাশীতে তিনি বিশ্বনাথের এক পত্র পাইলেন । বিশ্বনাথ লিখিতেছেন— “ভায়ী, হরিণহাটিতে গিয়া তোমার নাগাল পাই নাই । তুমি বাড়ীতে কোন ঠিকানাও রাথিয় যাও নাই যে তোমাকে চিঠি লিখি। সম্প্রতি শুনিলাম তুমি ন-কি কাশতে আছ এবং সেখানে কিছুদিন থাকিবার বাসন করিয়াছ এবং এই মৰ্ম্মে হরিণহাটিতে কুতু মহাশয় একখানি পত্রও না-কি লিখিয়াছেন। সেই পত্র হইতে তোমার ঠিকানা জোগাড় করিয়া তোমাকে এই পত্র লিখিতেছি । তোমাকে সব কথা খুলিয়া বসিবার সময় পাই নাই। এখন অকপটে সমস্ত খুলিয়া লিখিতেছি এবং তোমার মার্জনা ভিক্ষা করিতেছি। “তুমি স্ত্রীশিক্ষার ঘোরতর বিরোধী বলিয়া তোমাকে আমি জানাই নাই যে আমার মেয়েকে আমি স্কুলে পড়াইতেছিলাম। ভাবিয়ছিলাম তোমার সহিত দেখা হইলে জিনিষটা ধীরে সুস্থে তোমাকে বুঝাইয়া বলিব । আমি নিজে বিশ্বাস করি লেখাপড় শেখা প্রত্যেকেরই কর্তব্য। ইহাতে নিন্দার কিছু থাকিতে পারে না। “ শ্রমান ছ’কড়ি কলিকাতায় থাকিতে আমার বাসায় প্রায়ই যাতায়াত করিত এবং কুমুমের সহিত তাহার বেশ ভাবও হইয়াছিল। কুসুম ভবিষ্যতে তাহার পত্নী হইবে ভাবিয়া আমিও তাহদের মেলামেশায় কোন বাধা দিই নাই। কিন্তু একদিন আমার স্ত্রীর মুখে শুনিলাম যে মেলামেশাটা একটু বেশী রকম ঘনিষ্ঠ হইয় পড়িতেছে—বিবাহ না দিলে আর ভাল দেখায় না । শ্ৰীমান ছ’কড়িকে আমি সে-কথা একদিন স্পষ্টতই বলিলাম। তাহাতে সে বলিল যে সে অবিলম্বে কুমুমকে বিবাহ করিতে প্রস্তুত এবং ইহাও সে বলিল যে তুমি যদি জানিতে পার যে মেয়ে স্কুলে গিয়া