পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$3£3o প্রবাসী ১৩৪৪ } ভোটিয়ের পক্ষে বিশেষ আবশ্বক, সেই জন্য এদেশে কৃষি অপেক্ষ পশুপালন অধিকতর উপযোগী । ভেড়া, ছাগল ও চমরী ( য়াক ) এথানকার প্রধান গৃহপালিত পশু । ভেড়া ও ছাগল—মাংস চামড় ও পশমের সংস্থান ভিন্ন ভারবহনকার্য্যেও উপযোগী, বিশেষতঃ দুর্গম স্থলে । চমরী, দুধ, মাখন, মাংস ও মোট পশম দেয়, উপরন্তু উনিশ-কুড়ি হাজার ফুট উচ্চে-যেখানে বায়ুমণ্ডল অতি ক্ষীণ—বিলক্ষণ বোঝা লইয়া অনায়াসমন্থরগতিতে দুর্গম পৰ্ব্বতে যাইতে পারে । এদেশে ঘোড়, খচ্চর ও গাধা বিস্তর আছে কিন্তু ভেড়ার পরই চমরী এদেশের সর্বাপেক্ষ প্রয়োজনীয় পশু । এদেশে রেল, মোটর বা অন্ত যান নাই, সুতরাং সকল জিনিষই পশুপৃষ্ঠে লইতে হয়। ঘোড়াগুলি ছোট বটে কিন্তু পৰ্ব্বত-পথের বিশেষ উপযোগী এবং সতেজ ও স্বন্দর । থচ্চর মঙ্গোলীয়া ৪ চীনদেশের সীলিঙ্গ অঞ্চল হইভে আসে । গৃহপালিত পশুর মধ্যে কুকুরের স্থান উচ্চে। পশুপালকের প্রধান সহায় এই বিশ্বস্ত জন্তু । এদেশের অধিকাংশ কুকুরষ্ট কৃষ্ণবর্ণ ও নীলচক্ষু । আকারে ঠহার। নেকড়ে অপেক্ষ বৃহৎ, ইহাদের সৰ্ব্বাঙ্গ ভল্লুকের ন্যায় লম্ব কর্কশ লোমে আবুত এবং ইহারা স্বভাবতই হিংস্র । পশুপালকদিগের পক্ষে কুকুর গৃহাদির বক্ষণাবেক্ষণে ইহারা অতুলনীয়। একটি কুকুর সঙ্গে থাকিলেই গৃহস্থ নিশ্চিস্ত থাকিতে পারে, কেননা অপরিচিত লোকের সাধ্য নাহ তাহার এলাকায় পা দেয়। পক্ষে এইরূপ কুকুরের সম্বন্ধে সাবধান হওয়া বিশেষ প্রয়োজন । তিব্বতীয়ের মাংসের সঙ্গে অস্থি পৰ্য্যস্ত চূর্ণ করিয়া সৃপ করিয়া খায় ; সুতরাং সকাল সন্ধ্যায় সামান্ত সত্ত-গোল থাষ্টয়া এই সকল প্রভুভক্ত কুকুর দিবারাত্র রক্ষণকাৰ্য্য শিকলে বাধা বাঘের মতই ইহারা ভীষণ এবং ইহাদের নিকট যাওয়া বাঘের খাচায় প্রবেশ করার মতই বিপজ্জনক। এই সকল বৃহৎ রক্ষী কুকুর ছাড়া লোমাবৃত ছোট ও স্বন্দর কুকুর লাসা ও অন্ত স্থানের ধর্মীদিগের গৃহে থাকে। এখানে তিন টাকায় যে কুকুর পাওয়া যায় দাৰ্জিলিঙে যাট-সত্তর টাকায় তাহা পাওয়া দুষ্কর। অত্যাবশ্ব)ক এবং তিব্বতে আগন্তুকের করে । 纂 臺 蟻 নেপাল ও তিব্বতের সম্বন্ধ অতি প্রাচীন। খ্ৰীষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে তিব্বতের ঐতিহাসিক যুগের আরম্ভ । 茂 “. } ঐ সময়ই ভোটরাজ স্ৰোং-চন্‌-গম্বো এক দিকে নেপালে নিছ : বিজয়-বৈজয়ন্তী উড়াইয়া সেখানকার রাজকুমারীকে বিবাহ করেন, অন্ত দিকে চীন-সাম্রাজ্যের বহু প্রদেশ তিব্বতের অধীনে আনিয়া এবং চীন-সম্রাটকে কন্যাদানে বাধ্য করিয়, চীন-রাজকুমারীকেও পরিণয়পাশে আবদ্ধ করেন। শোন যায় ইহার পূৰ্ব্বে ভোটদেশে লিখনপদ্ধতি অজ্ঞাত ছিল, শ্ৰোং-চন সন্তোটাকে অক্ষর-লিখন শিক্ষার জন্য নেপাল প্রেরণ করেন এবং তিনিই সেখানে উহা শিক্ষা করিয়ু প্রথম তিব্বতী অক্ষর নিম্মাণ করেন । নেপাল-রাজকুমাবার সঙ্গেই বৌদ্ধধৰ্ম্ম এদেশে প্রবেশ করে এবং ক্রমে রাজনৈতিক জয়কে ধৰ্ম্মক্ষেত্রে পরাজয়ে পরিণত করে। আজিও নেপালদুহিতা তারাদেবী এদেশে অবতারের ন্যায় পূজা পাইতেছেন । তিব্বতের সভ্যতার দীক্ষায় প্রধান সহায়ক যে নেপাল সে বিষয়ে সন্দেহ নাই । নেপাল-উপত্যকার ভাষা তিব্বতী ভাষার অনুরূপ এবং উহাকে তিব্বত-বৰ্ম্ম ভাষার অন্তর্গত বলিয়া নিৰ্দ্ধারণ করিয়াছেন। তিব্বতী "সিউ মা রী” ( কেহ মাঠ } নেবারীতে “স্ব-মারো” । ইহাতে অনুমান হয় যে তিব্বত ও নেপালের সম্বন্ধ প্রাগৈতিহাসিক । সম্রাট স্রোং-চন লাসায় রাজধানী স্থাপন করেন এবং তাহার শত বর্ষ পরে ভোটরাজ স্ৰোং-দে-চন নালন্দা হহঁতে এইরূপে ভারত পুরাতন অধিবাসী নেবারদিগের ভাষাতত্ত্ববিদেরা আচার্ষ্য শাস্তরক্ষিতকে অনিয়ন করেন । হইতে ধৰ্ম্মপ্রচারের জন্য যে দ্বার উন্মুক্ত হয় তাহা দ্বাদশ শতাব্দীতে মুসলমান-বিজয়ে নালন্দ, বিক্রমশীলা প্রভৃতির ধ্বংসকাল পর্য্যন্ত অবারিত ছিল। সে-সময় বৰ্ত্তমান কালের দার্জিলিং-লাস পথ জানা ছিল না। ধৰ্ম্মপ্রচার বা বাণিজ্য ব্যাপার সবই নেপালের পথে হইত এবং এইরূপে বহু শতাব্দী যাবৎ নেপাল ভারত ও তিব্বতের মধ্যে ধৰ্ম্মপ্রচার ও বাণিজ্য এই দুই কাধ্যেই নেপাল মধ্যবর্তী রূপে বিরাজ করিয়াছে । সংস্কৃত হইতে ভোট ভাষায় বৌদ্ধ গ্রন্থের অমুবাদে নেপালী পণ্ডিতদিগের হাত ভারতীয় বা কাশ্মীরী পণ্ডিতদিগের মত সিদ্ধ না হইলেও শাস্তিভঙ্গ, অনস্তন্ত্র, জেতকর্ণ, দেব পুণ্যমতি, স্বমতি-কীৰ্ত্তি প্রভৃতি নেপালী বৌদ্ধ পণ্ডিতদিগের