পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

883. প্রবাসী ১৩৪৪ কন্যার তাহার সম্পত্তির উপর কোনও অধিকার নাই । নেপালী সওদাগর ইচ্ছা করিলে কিছু দিতে পারে নতুবা তাহাদের প্রাপ্য কিছুই নয়। সস্তান জন্মাইবার পর পিতৃত্ব অস্বীকার করিয়া স্ত্রীকে দূর করিয়া দেওয়া নেপালী সওদাগরদিগের মধ্যে সাধারণ ব্যাপার। তিব্বতে বহুভৰ্ত্তক বিবাহের প্রচলন থাকায় ভোটীয় পুরুষের সহিত ভ্রাতৃ-সম্বন্ধ পাতাইয় তাহার স্ত্রীকে গ্রহণ করাও তিব্বতের নেপালী বাসিন্দাদিগের সাধারণ প্রথ। নেপালের রাজনিয়ম অনুসারে কোন নেপালী তাহার স্ত্রীকে তিব্বতে লইয়। যাইতে পারে না, এই কারণেই এত দুনীতির স্বষ্টি । অন্য অনেক বিষয়েও এখানে আগন্তুক নেপালী দেশের আচার-ব্যবহার হইতে ভ্ৰষ্ট হয়। উদাহরণস্বরূপ খাওয়া-ছোয়ার ব্যাপারের কথা বলা যাইতে পারে। নেপালে ছুংমার্গের জ্ঞান যথেষ্ট আছে, এখানে সে বালাই দেখা যায় না, অবশু, মদ্যপানবিষয়ে দুষ্টটি দেশের লোকের মধ্যে প্রভেদ দেখা যায় না । পাচক ত ভোটিয়া হয়ই, উপরন্তু মুসলমানের রুটি খাওয়ায় ইহাদের কোন আপত্তি নাই । অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে নেপালী ব্যবসায়ী চমরীর মাংস থাইতেও কুষ্ঠাবোধ করে না—তাহারা বলে চমরী “গাই” নহে, যদিও নেপালে ইহা সম্ভব নহে। এই সকল ব্যাপারই নেপালে ভয়ানক অপরাধ বলিয় গণ্য । সাধারণতঃ এই সব ব্যবসায়ীর পক্ষে তিন-চার বৎসব পূৰ্ব্বে দেশে ফিরিবার সুযোগ হয় না, এবং ফিরিবণমাত্রই নিদিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়া প্রায়শ্চিত্ত করিতে সকলেই বাধ্য । নেপালী নেবারগণ ব্যবসায়ে বিশেষ পঢ়। যদিও পাশ্চাত্য শিক্ষার অভাবে ইহারা সুযোগ-অনুরূপ ব্যবসায়ের প্রসার করিতে পারে নাই কিন্তু এই দেশের যানবাহন আদানপ্রদানের অবস্থার কথা ভাবিলে ইহা নিশ্চয়ই স্বীকাৰ্য্য যে ইহাদের ব্যবসায়নৈপুণ্য প্রশংসনীয়। কলিকাতায় নেপালী সওদাগরদিগের অধিকাংশ কুঠির শাখা আছে, অনেকের শীগচী, গ্যাঞ্চী, ফরিজোঙ, কুতী ইত্যাদি স্থানেও শাখা আছে। এই ব্যবসায়ের আদান-প্রদানের মধ্যে আমদানী প্রবাল, মুক্ত, বারাণসী ও চীনের রেশমী বস্ত্র, বিলাতী ও জাপানী স্থতার কাপড়, কাচের দ্রব্য, খেলনা প্রভৃতি ; রপ্তানীর হিসাবে "ফবৃ” কস্তুরী, উল, পশম এইরূপ অন্তান্ত শ্রব্য আমদানীর জিনিষগুলির উৎপত্তিস্থলের সহিত কারবারের উপায় না জানায় ইহার কলিকাতায় সে সব কিনিয়া এখানে বেচে । ইহাদের সৌভাগ্য যে সেরূপ উদ্যোগী কোন প্রতিদ্বন্দ্বী এখানে নাই, কেননা এখানকার মুসলমান ব্যাপারদিগেরও কারবারের ধারা এই প্রকার । চীনের প্রভুত্ব-লোপের সঙ্গে-সঙ্গেই চীনা ব্যাপারীর অস্তিত্ব লোপ পাইয়াছে, ভারতীয় ব্যবসায়ীদিগের পক্ষে ত এদেশে প্রবেশ করাই অসম্ভব । নেপালী ব্যবসায়ীর মধ্যে এমন কিছু সাধনা আছে যাহাতে সে অল্প পরিশ্রমেই তাহার কারবারের উন্নতি করিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ ধৰ্ম্মমান সাহুর কুঠির কথা বলা যায়। এই কুঠি দেড়শত বৎসর পূৰ্ব্বে লাসায় স্থাপিত হয়, এখন ইহার শাখা গ্যাঞ্চী, ফরি, কাঠমাণ্ডু, লদার্থ ও কলিকাতায় আছে। প্রতি বৎসর বহু লক্ষ টাকার আমদানী রপ্তানী ইহাদের বাধা ব্যাপার, মূলধনের প্রমাণও প্রচুর। ইচ্ছা করিলেই চীন, জাপান, মঙ্গোলিয়া, চীন তুর্কিস্থান, সিংহল ইত্যাদি স্থানে ইনি কারবার চালাহতে পারেন, কিন্তু সেদিকে চেষ্টা বা উৎসাহের অভাব । ব্যবসায়ক্ষেত্রে নেপালীরা অতি সং এবং ব্যবহার ভাল। উপরন্তু ধৰ্ম্ম এক প্রকার হওয়ায় ইহার লামাদিগকে সম্মান করে এবং মঠে ও মন্দিরে পূজাপাঠে ৪ দক্ষিণ প্রদান প্রভৃতি ব্যাপারে ইহার ভোটিয়দিগেরই মত। এই সকল কারণে এবং ইহারা ‘যস্মিন দেশে যদাচার’ বিষয়ে বিশেষ সিদ্ধ হওয়ায় এদেশে ইহাদের স্থান ভারতে মাড়োয়ারীর বা সিংহলে গুজরাটি মুসলমানের তুল্য : বেশভূষা ও পাদ্য-প্রকরণেও পূৰ্ব্বে ইহার ভোটিয়দিগের অতুকরণ কfরত । সম্প্রতি ইহাদের মধ্যে একদল “নবীন" হ্যাটকোট বুট ইত্যাদি পরিতে আরম্ভ করিয়াছে। 導 豪 豪 ১৯০৪ সালের ব্রিটিশ মিশনের পর হইতে তিব্বতের প্রধান বাণিজ্য-মার্গ কালিম্পং ( দাঞ্জিলিঙের নিকট ) হইতে লাসার পথে হইয়াছে । ইহা গ্যাঞ্চী পৰ্য্যন্ত ইংরেজের রক্ষণাধীন এবং গ্যাঞ্চীতে ব্রিটিশ ডাকঘর ও টেলিগ্রাফ অফিস আছে । গ্যাঞ্চীর পর ভোট-সরকারের নিজস্ব ডাক টেলিফোন ও তার বিভাগ আছে। কিছু চা ও চীনা রেশমী কাপড় ভিন্ন প্রায় সমস্ত আমদানী রপ্তানী এই পথেই হয়। এই পথের এক দিকে (পশ্চিমে ) কিছু দূরে নেপাল, অন্ত দিকে তহাদের