পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবিধ প্রসঙ্গ—আগামী কংগ্রেসের সভাপতি কে হইৰেন @@* মথ্যাতিভাজন এবং জনগণের সহিত সংযোগচ্যুত ও তাঁহাদের মর্থন হইতে বঞ্চিত করিতে চাহিতেছেন।" লর্ড জেটুল্যাগু মানুষটির বিরুদ্ধে আমাদের কিছু লিবার অভিপ্রায় না থাকিলেও, অামাদের মনের এই প্রশ্নটা চাপা দিতে পারিতেছি না, যে, তিনি হঠাৎ (?) এই ময়ে কেন হিন্দুদের গুণগানে প্রবৃত্ত হইলেন। অবশু, তিনি এদেশে থাকিতেও হিন্দু দর্শন ও সংস্কৃতির সহিত পরিচিত ইতে চেষ্টা করিয়াছিলেন এবং হিন্দুর সংস্কৃতিবিষয়ক বহিও লখিয়াছিলেন। ইহাও সত্য, যে, তিনি ভারতশাসন আইনে বঙ্গের হিন্দুদের প্রতি যে ঘোরতর অবিচার করা হইয়াছে, তাহার প্রতিকারের চেষ্টাও করিয়াছিলেন । র্তাহাকে ভারতবর্ষের লোকদের মধ্যে বিশেষ করিয়া হিন্দুদের শত্রু বা বিদ্বেষ্ট বল যায় না। সুতরাং হিন্দুদের সম্বন্ধে তাহার যে উক্তিগুলির আলোচনা হইতেছে, তাহার সম্বন্ধে ইঙ্গিতে আমল এরূপ কোন প্রশ্ন করিতেছি না, যে, শত্ৰু কেমন করিয়া স্তাবক হইলেন। তিনি হিন্দুর গুণগান এখন কেন করিলেন, তাহাই জিজ্ঞাস্ত । আমাদেব বোধ হয়, যে ছয়টি প্রদেশে কংগ্রেসী দল ব্যবস্থাপক সভায় সংখ্যাভূমিষ্ঠ হইয়াছে সেগুলি হিন্দুপ্রধান প্রদেশ এবং কংগ্রেসী সদস্যদের মধ্যে প্রায় সবাই হিন্দু ; সেই জন্য হিন্দুদিগকে মিষ্ট কথায় তুষ্ট করিয়া তিনি কাৰ্য্য উদ্ধার করিতে চাহিয়াছেন । কিন্তু “কথায় চিড় ভিজে না । কংগ্রেস সামান্য যাহা দাবী করিতেছে তিনি তাহা দিয় ফেলুন না ? তিনি বলিতেছেন, তিনি আশা করেন হিন্দুর দেশের সেবায় আত্মনিয়োগ করিবে । যেন তাহার কখনও তাহ করে নাই, এবং এখনও করিতেছে না ! দেশের সেবা হিন্দুরা ত চিরকাল করিয়া আসিতেছে । হিন্দু-বৌদ্ধ যুগে করিয়াছে, মোগল-পাঠানশাসিত প্রদেশসমূহে মোগলপাঠান যুগে করিয়াছে, ব্রিটিশ রাজত্বকালে হিন্দুদের মধ্যে সৰ্ব্বাঙ্গীন দেশসেবা রামমোহন রায় হইতে আরম্ভ করিয়া এ পর্য্যস্ত বিখ্যাত অবিখ্যাত অগণিত হিন্দু করিয়াছেন। তাহাদের সম্মিলিত দেশসেবা অবগু এখনও প্রয়োজনাচুরূপ ও যথেষ্ট হয় নাই। কিন্তু তাহাদের চেয়ে অধিক দেশসেবা কোন অহিন্দু করেন নাই । বোধ হয় লর্ড জেটল্যাণ্ড বলিতে চান, ব্রিটিশ গবন্মেন্টের ونلا سس سد : ও গবর্ণরদের প্রভাবাধীন হইয়া নুতন ভারতশাসন আইনটাকে চালু করিলে তবে হিন্দুদের দেশসেবা দেশসেবা বলিয়া ইংরেজরা মানিবে । কিন্তু আমরা যাহাকে দেশসেবা মনে করি ও বলি, ইংরেজরা তাহাকে দেশসেবা নাই বা বলিল ? তাহাদের মতে দেশসেবক বিবেচিত হইতে অন্তত: কংগ্রেসী হিন্দুরা ব্যগ্র নহে । [ বিবিধ প্রসঙ্গের এগার পৃষ্ঠা লিখিত হইয়। ছাপার হরফে উঠিবার পর ১০ই জুন দৈনিক কাগজে পড়িলাম, ভারতসচিব পালেমেণ্টে বলিয়াছেন, গান্ধীজী ব্যক্তিগত ভাবে যেরূপ প্রতিশ্রুতি চাহিয়াছেন তাহা দেওয়া যাইতে পারে না। এ বিষয়ে আমরা পরে কিছু লিখিব । ] আগামী কংগ্রেসের সভাপতি কে হইবেন ? কংগ্রেসের আগামী অধিবেশন গুজরাটের যে গ্রামটিতে হইবে, সেখানে কংগ্রেসপুরী নিৰ্ম্মাণের চেষ্ট আরম্ভ হইয়া গিয়াছে । গান্ধীজীর আহবানে শ্রীযুক্ত নন্দলাল বহু স্থানটি দেখিয়া আসিয়াছেন । বোধ হয় পুরীটি যাহাতে শোভন হয় সে বিষয়ে তাহার পরামর্শ গ্রহণ র্তাহাকে আহবানের উদ্দেশু। এই দিকে আয়োজন যেমন চলিয়াছে, অন্য একটি বড় অেেয়াজনের সূত্রপাতওঁ তদ্রুপ করা আবশ্যক। তাহা কংগ্রেসের আগামী অধিবেশনের সভাপতি মনোনয়ন। ব্রিটিশ-শাসিত ভারতবর্ষে বড় প্রদেশ সাতটি আছে । আগেকার ছোট এবং পরে স্বতন্ত্র প্রদেশ বলিয়৷ গণিত ছোট প্রদেশগুলি ধরিলে মোট এগারটি প্রদেশ হয়। যদি এইরূপ মনে করা যায়, যে, প্রত্যেক বড় প্রদেশ হইতে পৰ্য্যায়ক্রমে কংগ্রেসের সভাপতি নিৰ্ব্বাচিত হওয়া উচিত ও আবশ্বক, তাহা হইলে গত পলর বৎসরে বাংলা দেশ হইতে দু-জন বাঙালীকে সভাপতি নিৰ্ব্বাচন করা উচিত ছিল। যদি মনে করা যায়, যে, ছোট বড় সকল প্রদেশ হইতেই পৰ্য্যায়ক্রমে সভাপতি মনোনীত করা উচিত, তাহা হইলেও গত পনর বৎসরের মধ্যে এক জন বাঙালীকে সভাপতি করা উচিত ছিল । আর যদি মনে করা যায়, যে, ওরূপ পালা বা ভাগ-বাটোয়ার ঠিক্‌ নয়, যে-যে প্রদেশ স্বাধীনতা-সংগ্রামে সাহস ও স্বার্থত্যাগের সহিত বিশেষরূপে যোগ দিয়াছে এবং