পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88b〜 প্রবাসী SN&88 দুঃখভোগ করিয়াছে, সভাপতি নির্বাচন সেই সব প্রদেশ হইতেই করা উচিত, তাহা হইলেও বাংলা দেশকে ও বাঙালীকে দীর্ঘকাল বাদ দেওয়া যায় না ; কারণ, বাংলা দেশের ও বাঙালীর স্থান এ-বিষয়ে কাহারও নীচে নয়। স্বতরাং গত পনর বৎসরে অন্তত: এক জন বাঙালীকে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত করা উচিত ছিল। আর এক দিক দিয়া বঙ্গের দাবী বিবেচিত হইতে পারে। ব্রহ্মদেশকে সবে আড়াই মাস হইল ভারতবর্ষ হইতে পৃথক করা হইয়াছে। ব্ৰহ্মদেশ সমেত সমগ্র ভারতবর্ষের লোকসংখ্যা আগে ছিল পয়ত্রিশ কোটি । তাহার মধ্যে বঙ্গের লোকসংখ্যা পাচ কোটি । মুতরাং প্রতি সাত বৎসরে এক জন বাঙালীকে সভাপতি করা উচিত। সে হিসাবে গত পনর বৎসরে দু-বার বাঙালীকে সভাপতি করা উচিত ছিল। যদি শুধু ব্রিটিশ-শাসিত ব্ৰহ্মদেশবজ্জিত ভারতবর্ষের লোকসংখ্যা ধরা যায়, তাহী হইলে তাহা পচিশ কোটির বেশী হয় না। পাচ কোটি তাহার এক পঞ্চমাংশ । সুতরাং প্রতি পাচ বৎসরে এক জন বাঙালীকে সভাপতি করা উচিত। সে হিসাবে গত পনর বৎসরে বাঙালীকে তিনবার সভাপতি নিৰ্ব্বাচন করা উচিত ছিল । কিন্তু বাঙালীকে যে-হিসাবে যত বার কংগ্রেসের সভাপতি নিৰ্ব্বাচন করা উচিত হউক না কেন, বাস্তবিক গত পূনর বৎসর এক জন বাঙালীকেও একবারও নিৰ্ব্বাচন করা হয় নাই । অতএব, আমরা চাই, এবার এক জন বাঙালীকে সভাপতি করা হউক । কোন প্রদেশকে বাদ দিয়া ভারতবর্ষ বা ভারতবর্ষের বাকী অংশ অগ্রসর হইতে পারে না । কোন প্রদেশও , অন্তসমুদয়প্রদেশনিরপেক্ষ ভাবে অগ্রসর হইতে পারে না। সেই কারণে আমরা বলি, বাংল। দেশকে সঙ্গে লইয়া ভারতবর্ষের অন্যান্য প্রদেশ অগ্রসর হউন, বাংলা দেশও অন্যাঙ্ক প্রদেশের সহিত সাৰ্ব্বজনিক কাজে যোগ দিয়া অগ্রসর হউন। তাহার সুযোগ আমরা চাহিতেছি । কংগ্রেসের নীতি ও পন্থা স্থির আর সবাই করিবে, বাঙালী করিবার সুযোগ পাইবে না, ইহা হইতে পারে না। মধ্যে মধ্যে সভাপতি ন হইলে এই সুযোগ যথোচিত রূপে পাওয়া যায় না। অতএব মধ্যে মধ্যে বাঙালীকে সভাপতি করিতে হইবে। আর একটি কারণে বাঙালীর এখন সভাপতি হওয়: আবখ্যক । অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্দ্ধে, উনবিংশ শতাব্দীতে এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথম কুড়ি একুশ বৎসরে বঙ্গের দুঃখদুৰ্দ্দশার কথা আমরা তুলিতে চাই না। গত পনর যোগ বৎসরে বঙ্গের যে অবস্থা ঘটিয়াছে, বঙ্গের উপর যে ঝড় বহিয়া গিয়াছে ও এখনও বহিতেছে, তাহা বঙ্গের বাহিরেই লোকেরা ত ভাল করিয়া জানেনই না, অগণিত বাঙালী৪ জানেন না। সেই দুঃখের কথা একবার ভারতবর্ষের জনগণের দরবারে সভাপভির মুখ হইতে বর্ণিত হওয়া চাই । তাহা বাঙালী ভিন্ন কেহ সব জানিয়া বুঝিয়া যথোচিতরূপে দরদের সহিত বলিতে পারিবে না। কিন্তু যোগ্য বাঙালী কেহ আছে কি ? না থাকিলে আমরা এত কথা লিখিতাম না। আমাদের বিবেচনায় ঐযুক্ত সুভাষচন্দ্র বস্তুকে কংগ্রেসে আগামী অধিবেশনের সভাপতি নিৰ্ব্বাচন করা উচিত। ৫ : কাজের জন্য র্তাহার যথেষ্ট বিদ্যা ও বুদ্ধি আছে । তিনি কলেজে ভাল ছাত্র ছিলেন, পাস ভাল করিয়াছিলেন । তাহার পর সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষ-প্রতিযোগিতার ফলে সিভিল সাভিসে চাকরী পাইয়াছিলেন। সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করিবার ও করাইবার ক্ষমতা তাহার বেশ আছে। বস্তুত:, ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় ভারত-গবন্মেন্টের স্বরাষ্ট্রসচিব তাহাকে আটক করিয়া রাখিবার কারণ সম্বন্ধে যে বক্তৃতা করেন, তাহা হইতে স্পষ্টই বুঝা যায়, যে গবন্মেণ্ট তাঁহাকে খুব বুদ্ধিমান এবং দল বাধিতে ও সুশৃঙ্খলভাবে দলকে চালাইতে সুদক্ষ মনে করেন। কলিকাত মিউনিসিপালিটির প্রধান কৰ্ম্মকৰ্ত্তারূপে তিনি এই সব গুণের পরিচয় দিয়াছিলেন। তিনি স্বেচ্ছায় সিভিল সার্তিধ্যে চাকরী ছাড়িয়া দিয়া স্বাৰ্থত্যাগের দৃষ্টান্ত দেখাইয়াছেন। যাহাতে অর্থাগম হয় তিনি এখন এরূপ কোন চাকরী করেন না ও ভবিষ্যতে করিবেন না, এবং পরিবারপালনের ভারগ্রন্থ তিনি নহেন। সুতরাং তিনি তাহার সমুদয় সময় ও শক্তি দেশের কাজে নিয়োগ করিতে সমর্থ। দুঃখবরণ ও দু:খসংগে