পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাষাঢ় ৰিবিধ প্রসঙ্গ—ভারতের কার্পাস এবং ম্যাঞ্চেষ্টারের স্থত ও কাপড় ৪৪৯ মাহুষ গড়িয়া উঠে। তাহার জীবনে দুখভোগ খুব ঘটিয়াছে, এবং তাঁহা ঘটিয়াছে তিনি দেশের সেবক বলিয়া। ইউরোপে থাকিতে তিনি প্রভূত্বকামী ও স্বাধীনতাকামী বিভিন্ন মনোবৃত্তিশালী নানা দলের কৰ্ম্মপন্থার সহিত পরিচিত হইয়াছেন। তাহী স্বাধীনতা-সংগ্রামে দেশের কাজে লাগিবে। ভারতবর্ষের আমদানী ও রপ্তানী বাণিজ্যের স্বযোগে বিদেশে কোন কোন দেশের সহিত কিরূপ চুক্তি করিলে ভারতবর্ষের কতকগুলি যুবক ভিন্ন ভিন্ন রকম শিল্প ও যন্ত্রনিৰ্ম্মাণবিদ্য শিখিতে পারে, তাহা তিনি ইউরোপে থাকিতেই অনেক বার লিথিয়াছেন । রাষ্ট্রীয় সংগ্রামের সহিত জাতীয় সংস্কৃতির .যোগ আছে। যে সকল ভারতীয় ছাত্র ছাত্রী বিদ্যালাভের জন্য ইউরোপে আছেন, স্বভাষবাবু সুযোগ পাইলেই এই সকল বিষয়ে তাহাদিগকে পরামর্শ দিয়াছেন। তিনি বুদ্ধ নহেন, প্রৌঢ়ও নহেন। সেই কারণেও তিনি কংগ্রেসী নূতন দলের সমর্থন লাভ করিতে পারিবেন ; বিলাতে ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে প্রবেশার্থী আগে ভারতীয় সিভিল সার্ভিসে চাকরী পাইতে হইলে কেবল বিলাতে পরীক্ষা দিবার বন্দোবস্তু ছিল। কয়েক বৎসর হইতে বিলাতে ও এদেশে উভয়ত্রই পরীক্ষা লওয়া হইতেছে । তা ছাড়, গত বৎসর হইতে মনোনয়ন দ্বারাও বিলাতে কতকগুলি লোক লওয়াব ব্যবস্থা হইয়াছে। লগুনের পরীক্ষার জন্য ১৯৩৫ সালে আবেদন করিয়াছিল ইউরোপীয় ৮৩ জন ও ভারতবর্ষীয় ২৫১ জন; ১৯৩৬ সালে পরীক্ষার্থী ছিল ১৪৫ জন ইউরোপীয় ও ২৪৮ ভারতীয় ; কিন্তু এবার, ১৯৩৭ সালে প্রবেশাখী হইয়াছে ৩২২ জন ইউরোপীয় ও ১৪৯ জন ভারতীয়। ভারতীয় পরীক্ষার্থীদের সংখ্যার ক্রমিক হাসের কারণ, এখন সিভিল সার্ভিসের সব পদগুলি ত পরীক্ষায় উচ্চ স্থান লাভ যাহার করিবে তাহাদিগকে দেওয়া হইবে না, কতকগুলি চাকরী মনোনীত ইংরেজ ছোকরাদিগকে দেওয়া হইবে, কেননা ইংরেজ ছোকরার প্রতিযোগিতায় ভারতীয়দের চেয়ে মোটের উপর অধিকতর পারদর্শিতা দেখাইতে পারিতেছিল না । এবার যে ৩২২ জন ইউরোপীয় যুবক পদপ্রার্থী ইয়াছে, তাহদের মধ্যে ৮৯ জন নিয়োগ চাহিয়াছে কেবল পরীক্ষার জোরে, ১• • জন পরীক্ষা দিবে মনোনয়নও চায়, বাকী ১৩৩ জন কেবল মনোনয়নের অন্তগ্রহে চাকরী চায়। ইহা হইতে দেখা যাইতেছে, যে, ইংরেজ পদপ্রার্থীদের মধ্যে যাহাঁদের পৌরুষ আছে তাহাদের সংখ্যা কম, যাহারা অনুগ্রহ চায় তাহাদের সংখ্যা অনেক বেশী । ভারতের কাপাস এবং ম্যাঞ্চেস্টারের স্থত ও কাপড় “ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কাপাস উৎপাদন সমিতি"র বার্ষিক অধিবেশনে লর্ড ডারবি সম্প্রতি এক বক্তৃতায় বলিয়াছেন – “আমরা ভারতের কাপাস ক্রমশঃ অধিক পরিমাণে আমদান কfরতেছি । ইহার দ্বারা ভারতের কুযকদিগকে সাঙ্গাধ করা হইতেছে । ম্যাঞ্চেষ্টারের সুতা ও কাপড় যথাসাধ ক্রয় করা ভারতবাসীদের কত্তব্য। উভয় দেশের মধ্যে প্রীতির সম্বন্ধ স্থাপিত হওয়া উচিত। কিন্তু কেবল ইংলণ্ডের সদিচ্ছাতে তাহা হইবে না, উভয় দেশের লোকেরই পরস্পরের প্রতি সম্ভাব থাকা চাই ।” ইংরেজরা যে ভারতবর্ষের তুলা কেনে, সেটা নিজের গরজে কেনে ; তাহ হইতে কাপড় প্রস্তুত করিয়া বিক্রয় করিয়া লাভ করিবার জন্য কেনে। ভারতীয় কৃষকদিগকে সাহায্য করিবার অভিপ্রায় ইহার মধ্যে নাই, ভারতবর্ষের প্রতি সদ্ভাবও ইহার মধ্যে নাই। ইংরেজরা ভারতবর্ষ হইতে যে তুলা ক্রয় করে, সেই রকম ভুল তার চেয়ে কম দামে অন্যত্র পাইলে সেখান হইতেই ইংরেজরা কিনিত। ভারতবর্ষের তুলা ক্রয়ের মধ্যে যদি ভারতবর্ষের প্রতি ইংলণ্ডের সদ্ভাব থাকে, তাহা হইলে ইংলণ্ডের হাজার হাজার লোককে যে আমরা বেতন দিয়া ও বহু লক্ষ লোককে যে তাহাদের তৈরি জিনিষ কিনিয়া বঁাচাইয়া রাখি ও ধনী করি, তাহার মধ্যেও আমাদের ইংরেজ-প্রীতি আছে! বস্তুত, এই উভয় ব্যাপারের মধ্যে প্রীতির নামগন্ধও নাই। ইংলণ্ড অগত্যা ভারতবর্ষের তুলা কেনে, আমরাও বাধ্য হই মোট বেতনের ইংরেজ চাকর্যে রাথিতে ও আমাদের চেয়ে অনেক অধিক সঙ্গতিপন্ন ইংরেজদের তৈরি জিনিষ কিনিতে। ভারতবর্ষের লোকেরা যখন নিজেদের পরিধেয় সব কার্পাস-বস্ত্র নিজেরা ভারতবর্ষের তুলা হইতে প্রস্তুত করিতে