পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ግb፦ সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান হয়েছে মনে হয়। কিন্তু রাম, খাম, হরি এদের কারও মাঝেই মানুষের সব বৈশিষ্ট্য এবং বৈচিত্র্য নিঃশেষিত নয়, হতেও পারে না, অথচ অন্ত একটি মাতুষ ধন্থকে দেখেও আমাদের মানুষ বলে চিনে নিতে কষ্ট হয় না। এই জন্য প্লেটে বলেন যে রাম, শুাম, হরি ইত্যাদি সকলেই মানুষ'-ভাবের এক-একটি প্রতিরূপ মাত্র। ভগবান আসল ‘মাতুষ-ভাব রূপটিকে স্বষ্টি করেছেন ; এই জগতে, অর্থাৎ ইন্দ্ৰিয়জগতে আমরা কেবল তারই নানা রকমের অসম্পূর্ণ প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই মাত্র। ভবিরুপের রাজ্যটি ইন্দ্রিয়জগতের বহু উৰ্দ্ধে। আমাদের অমর আত্মা জন্মের পূৰ্ব্বে সেই ভাবজগতে ইন্দ্রিস্তুজগতের সকল বস্তুর ভবিরূপটিকে প্রত্যক্ষ করেছে ব’লেই এখানে এসে ইঞ্জিয়জগতে এই ছায়ামূৰ্ত্তিকে জানতে পারে। ভাবজগতই সত্তা জগৎ, শাশ্বত এবং নিত্য। বিশুদ্ধ বুদ্ধির উজ্জল আলোকে আমরা সেই ভাবমূৰ্ত্তিকে দেখতে পাই। স্বতরাং প্লেটোর মতে ইন্দ্ৰিয়জগৎ একটা ছায়া-সত্তার জগং, এখানে কোন বস্তুকেই তার সত্য রূপে দেখা যায় না, যেতে পারে নf । অতএব এই চায়ার জগতের কোন কিছুর জন্যই ব্যাকুল হওয়া মাতুষের লক্ষ্য হ’তে পারে না । মাতুষের লক্ষ্য সত্যজ্ঞান অর্জন করা ; সত্যজ্ঞান হলেই মাহুষের হৃদয়ে অবিচল শাস্তি প্রতিষ্ঠিত হবে, মাতুষ হাসিকান্নার দুঃথদ্বন্দ্বের উৰ্দ্ধে আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে । "থেম্বহুদ্বিগ্নমনা: স্বশ্বেষু বিগতস্পৃহঃ' এই ষ্টোইক (Stoic) আদর্শই প্লেটোর কাম্য। নিরুদ্বেগ অচঞ্চল মনের অবস্থাই হ'ল মানুষের লক্ষ্য। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্লেটে কাব্যকলার প্রয়োজন নির্ণয়ের চেষ্টা করেছেন। এই জগতের সমস্ত বস্তুই যেমন শাশ্বত ভাবজগতের একটি অত্যন্ত অসম্পূর্ণ ছায়ামার, তেমনি কাব্য এবং চিত্রশিল্পও হচ্ছে এই ইন্দ্রিস্তুজগতেরই একটা অসম্পূর্ণ অনুকরণমাত্র। অমুকুতি মাত্রই অসম্পূর্ণ জ্ঞানের ফল। ধে একট। ফলের ছবি অঁাকবে তার পক্ষে ফল সম্বন্ধে বিশেষ কোন জ্ঞানের প্রয়োজন নেই, বাইরের রূপটাই তার অনুকরণের বস্ত। স্থান-কাল-পাত্রভেদে প্রত্যেক বস্তুরই প্রতীয়মান রূপের ভিন্নতা ঘটে, সুতরাং শিল্পী প্রতীয়মান প্রৰণসী 令N°88 রূপের অনুকরণ করে প্রাকৃত জনকে মৃদ্ধ করলেও, এ কথা স্বীকাধ যে শিল্পীর পক্ষে বস্তুর সত্যজ্ঞান অনিবাঁধ্য নয়, এমন কি প্রয়োজনও নয়। তার পর শিল্প মাত্রই—২থ চিত্র ও কাব্য-ইন্দ্রিয়গ্রাহ জগতের অন্ত্রকরণ হওয়ায় তা অনুকরণের অনুকরণ এবং এই জন্য সত্য থেকে অনেক দূরে। তাই প্লেটে বলেন যে কবি এবং চিত্রকরের অন্ত্রকরণ করেন কতকগুলি মিথ্যা প্রতীতির, সুতরাং কখনও তারা সত্যজ্ঞান দিতে পারেন না। অন্তকরণ একটা প্রমোদ মাত্র, কোন গভীর সাধনা নয় । চিত্রশিল্পী কোন বস্তুকে তার পাfরপ্রেক্ষিক অনুযায়ী অঁাকতে বাধ্য ; তাতে বস্তুর বাস্তবিক আয়তন সম্বন্ধে কোন জ্ঞানের প্রয়োজন নেই, কেবল প্রতীয়মান আকৃতি ( যা অঙ্কশাস্ত্রের সাক্ষ্য অতুযায়ী মিথ্যা ) নিয়েই তার কারবার । অতুকরণ ব্যাপারটাই প্রথমত: ভ্রান্ত, তার ওপর প্রতীতি অর্থাৎ ভ্রাস্তির অতুকরণ হওয়ায় প্লেটে। চিত্রশিল্পকে দ্বিগুণিত fমথ্যা ব’লে মনে করেন । কবি সম্বন্ধেও তার ধারণা যে এর চেয়ে ভাল তা নয় । প্রথমত:, কাব্যসাহিত্যকে প্লেটো তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন । ভাষায় কবি তার বক্তব্যকে দুটি উপায়ে প্রকাশ করতে পারেন এবং ক’রে থাকেন ; প্রথম হ’ল অতুকরণমূলক অর্থাৎ নাটকীয় পদ্ধতিতে চরিত্রবিশেষের মাঝ দিয়ে, আর দ্বিতীয় হ’ল বিবরণমূলক অর্থাৎ শ্রষ্টার বর্ণন দ্বারা । তাতে কাব্যের তিনটি শ্রেণী লড়াল ; প্রথম, অতুকরণমূলক ট্র্যাজেডি এবং কমেডি, যাতে কবি গোপন থেকে কতকগুলি কল্পিত মানবচরিত্রের বাৰ্ত্তালাপ এবং কৰ্ম্মের স্বারা বক্তব্যকে পরিস্ফুট করে তোলেন ; দ্বিতীয়, কবি কতকগুলি ব্যাপারকে নিজের মুখে বর্ণনা করে যান ; এই শ্রেণীতে প্রাচীন কালের প্রশস্তিগীতি ( Dithyrambus ) এবং আধুনিক কালের গীতিকবিতা এবং কাহিনী পড়তে পারে ; তৃতীয়, মহাকাব্য যাতে কোথাও কোথাও নাটকীয় ভঙ্গীতে বাৰ্ত্তালাপও আছে, আবার কোথাও কোথাও কবির নিজস্ব বর্ণনাও আছে। আধুনিক গল্প-উপন্যাসও এই শ্রেণীতেই পড়ে। এই তিন শ্রেণীর মধ্যে কোন শ্রেণীর কাব্য উৎকৃষ্ট ত নিয়ে প্লেটো জালোচনা করেছেন । সে কথা পরে বলব ।