পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রণবণ অন্তর থেকে বাহিরের সমস্ত বাধাকে দূর করে দিলে। যদিও পাৰ্ব্বতী জানে না যে কি তার দুঃখ, তবু দুঃখ যে তার গভীর, অসহনীয়, এ-বিষয়ে পাৰ্ব্বতীর সংশয়মাত্র ছিল না ; এবং শচীন্দ্রকে শাস্ত সুস্থ নিরাময় ক’রে তোলবার জন্যে সে নিঃসঙ্কোচে নিজেকে উৎসর্গ করলে । শচীন্দ্রের জীবনে এই প্রথম, পাৰ্ব্বতী তার সমাদরকে প্রত্যাথ্যান করে নি ; এবং আপনার আত্মোৎসগের এই প্রসাদ লাভ করে শচন্দ্রের স্বয় আনন্দরসে মধুময় হয়ে উঠেছিল । তার মনে কৃতজ্ঞতাপূর্ণ আনন্দের সঙ্গে গুনগুন স্বরে গুঞ্জন ক'রে ফিরছিল, --তামার বীণ, ধমনি বাজে সাধার মাঝে অমলি ফটে তারা ।” ভাবলে, আজ দুঃখের আঘাতে নিজেকে বিস্মত হয়ে পাৰ্ব্বতীর কাছে দিতে পেরেছিলাম বলেইওর মধ্যে এই সাড়া সহজে পেলাম , এই সাড়া যেন জাগিয়ে রাখতে পারি । `व' ं ८६- टॆद्मिitउं न] *छ् । আয়ত্ততার প্রলোভন ক্ষীণ আভাসে ধীরে ধীরে ডার মনে জেগে উঠছে । নিজেকে ভোলার এই বিশ্লেষণের স্থত্রে fনজের সম্বন্ধে আবার সে সজাগ হয়ে উঠতে লাগল । আহারাস্থে পাৰ্ব্বতী বললে, “আপনি শ্রান্ত । চলুন, শুয়ে শুয়ে কথা বলবেন । আমি লম্মদার ঘরে গিয়ে শোব’খন " ক্লান্তদেহ বিহালচিত্ত শচীন্দ্রকে অধিক অকুরোধ করতে হ’ল না। পাৰ্ব্বতী তাকে সযত্বে শুইয়ে দিয়ে, তার পাশে ব'সে গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল । কোমল শুভ্র শয্যার স্বশীতল স্নিগ্ধ ক্রোড়ে জারামে দেহ বিকীর্ণ ক’রে দিয়ে, উচ্ছ্বসিত প্রাণের কলধ্বনির আবেগে সে মুক্ত করে দিলে অজস্র কখার স্রোতে তার হৃদয়ের গোপন উৎস । পাৰ্ব্বতী নি:শব্দে তার কাহিনী শুনে যেতে লাগল । এই দুই মাস যাবৎ কমন্সাকে ফিরে-পাওয়ার ব্যর্থ প্রম্বাসের ইতিহাস থেকে স্বরু ক'রে আজকের পরিতৃপ্ত কৃতজ্ঞ হৃদয়ের নিবিড় আনন্দের অনুভূতি পৰ্য্যন্ত কোন কথাই আজ শচীন্দ্র অপ্রকাশু ব'লে মনে করলে না । বঙ্গতে বলতে মনের এবং রসনার জড়তা তার দূর হয়ে গেল। বললে, “পাৰ্ব্বতী, আজ আমার নিজেকে পরিপূর্ণ করে পাবার দিন এল। আমি ত্ৰিবেণী ●ミな অনেক ভেবে দেখেছি, তোমাকে জীবনে না লাভ করলে জীবন আমার জ্যোতিবিহীন হয়ে পড়বে ; কমলাকে পাওয়ার পরিপূর্ণ রূপ আমার কাছে প্রকাশ পাবে না। তাতে কমলাও ব্যর্থ হবে, আমিও । তোমার মধ্যে প্রাণের বিদ্যুংপ্রবাহ অপৰ্যাপ্ত স্বজনী শক্তিতে বেগবান । তুমি আমাদের আত্মার এই জড়স্তপকে জগতের প্রাণস্রোভের মধ্যে টেনে বের করে আন—মৃত্তন ক'রে গড়ে তোল কর্শ্বে, প্রাণে, কল্যাণে । কমলার অস্তরের মধুরসকে উৎসারিত করে তোল ; মুক্ত ক'রে দাও আমার জীবনযজ্ঞের প্রাঙ্গণে ।” বলতে বলতে সে পাৰ্ব্বতীকে নিবিড় ক’রে আকর্ষণ ক’রে নিলে নিজের কাছে । মুহূৰ্ত্তকাল মধ্যে পাৰ্ব্বতী সস্নেহ, শাস্ত অথচ স্থনিশ্চিত ভঙ্গীতে শচীন্দ্রের আঙ্কিজনের কবল থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিয়ে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললে, “বডড শ্রাস্ত হয়েছেন, এবার ঘুমিয়ে পড়ুন, কেমন ? আমি হাত বুলিয়ে দি ” কথার স্বরে স্নিগ্ধতা ব্যতীত অন্ত কিছুই ছিল না, তবু একটা মৃদুভংসনার ঢেউ যেন শচীন্দ্রের বুকে গিয়ে লাগল। সে নয়ন মুদ্রিত ক’রে পাৰ্ব্বতীর কঠিন অচঞ্চল গাম্ভীর্ষ ও নিবিড় প্রেমপূর্ণ মধুময় সভাকে নিজের পাশে অনুভব করতে লাগল। ধীরে ধীরে নিদ্রায় আচ্ছন্ন হ'য়ে পড়ল সে এবং এক পরিপূর্ণ স্নিগ্ধ শান্তি ও তৃপ্তিতে প্রাণ তার পূর্ণ হ’য়ে গেল । শেষ রাত্রে লঞ্চ ছেড়ে গেছে । শ্রাস্ত, বীততাপ, পরিতৃপ্ত শচীন্দ্রনাথ তখন গভীর নিপ্রায় অচেতন । মনের সংগ্রাম তার শাস্তু, চিত্ত তার নিরাময়, সমস্ত দেহ-মন-জাত্মা এক মিবিড় আনম্বরসে পরিপ্লুত । সকালে বিছানার উপর যখন সে উঠে বসন্স, বেল তখন অনেক। পূৰ্ব্ব রজনীর স্বখাবেশ তখনও ভার দেহমনের উপর জড়িয়ে রয়েছে। একটি জালসামধুর ম্বিভহাস্য লেগে আছে তার ওষ্ঠে স্বপ্নের মত সেই স্মৃতির ফুহকে ৷ পাৰ্ব্বতী এখনও এসে উপস্থিত হয় নি। রাত্ৰিজাগরণের ক্লাস্তিতে সে নিশ্চয়ই এখনও নিক্রিত । শচীন্দ্ৰ শস্থা পরিত্যাগ ক'রে উঠে বারান্দায় গেল। দীপ্ত প্রভাতের উজ্জল কিরণে নদীর ঢেউ, দিগন্তপ্রসারিত শশুক্ষেত্র, মেঘলেশবিহীন আকাশের অর্জন হালির জোয়ারে প্লাবিত। বনতুলসীর গদ্ধে মন্থর মিষশপ