পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8●ミ জিজ্ঞেসও করলে না কবে দেবে। ••• সে টাকাটা পাল্লালাল আর চায় নি। বোধ হয় ভূলে গিয়ে থাকবে, অথবা কখনও ফিরে চাইবে না ব'লেই বোধ হয় ও ধার দেয় । আমার যদি কষ্ট হয় ত এই পান্নালালের জন্তেই হবে। সময়েঅসময়ে ওর কাছ থেকে কিছু পেতাম ব'লে নয়, ওর ওই চমৎকার মনটির জন্যে। অনেক দিন পরে কাঞ্চন সেরে উঠলে ওকে পাঞ্জালালের কথা বলেছিলাম। বাজারের পয়সা থেকে অনেক-কষ্টে-জমানে চারটি টাকা এক দিন কাঞ্চন আমার হাতে দিয়ে বলেছিল, ‘ও হয়ত ভুলে গেছে, কিন্তু তোমার তো মনে আছে, টাকাকটা দিয়ে দিওঁ।" --সে টাকাটা তবুও পান্নালালকে দেব-দেব ক’রে দিতে পারি নি । •••এক দিক দিয়ে আমাদের নিষ্ঠুর কঠিন-হৃদয় বল৷ চলে। এত দিন যাদের সঙ্গে একত্র বাস করলাম, তাদের সঙ্গে সব সম্বন্ধ শেষ ক'রে চলে যেতে হবে । একবারও তাদের মনে রইল না। তার পর নূতন সঙ্গী এল নূতন প্রতিবেশী হ’ল—তারা গেল হারিয়ে। অবচেতন মনের একটি পুরানো পরিচ্ছেদে তার চাপ পড়ে রইল। যদি কখনও কোন স্বত্রে মনে পড়ে ত মনে হবে এ যেন মনের অতিশয় বিলাসিভা, কল্পনার অঞ্চারণ সৌধীনতা। ائم আজ রবিবার। দুপুরের আগেই যেতে হবে। সকাল থেকে ক্রমাগতঃ জিনিষ বয়ে ও-বাড়ীতে রেখে এসেছি । জিনিষপত্র এমন কিছু বিশেষ নেই ;– আর থাকবেই বা কেমন করে, চৌদ্ধ টাকা ভাড়া দেবার সামর্থ ধার নেই, তার জিনিষপত্র বেশীই বা হবে কি ক’রে ? যে-ঘরে আমরা থাকি সে-ঘরে এক জন ভাড়াটে আসবে বলে ঠিক হয়ে গেছে। আজ দুপুরেই তারা আসবে। তাদের জিনিষপত্র সব মুটেরা বয়ে এনে কলতলার পাশে ছোট খুপরির মত জায়গাটায় জমা করছে। দুটো টিনের স্বটকেস, এক বাগুিল বিছানা, একটা কুড়িতে কতকগুলে৷ শিশি-বোতল ও তিনখানা ছেড়া মাসিকপত্র। আরও একটা ছোট ঝুড়িতে টিনের কোঁটাে কতকগুলো, আচারের ছোট ছোট জার, পুরনো কতকগুলো কালির দোয়াত ইত্যাদি । আমাদের জিনিষপত্র গোছানর ফাকে ফাঁকে দেখছিলাম। আজ একান্তু উদাসীন নিম্পূহের প্রষণসী తెYEgg মত ধে-জায়গা আমরা পরিত্যাগ ক'রে ধাব, কাল সে । জায়গাই ওরা আন্তরিকতা ও সহানুভূতি দিয়ে ভরিয়ে তুলবে। ধ্বংসের শেষই স্বষ্টির স্বচনী—একের যেখানে শেষ, অপ:ে সেখানে আরম্ভ । হয়ত আমরা খেদিকটায় বিছানা পাতভাম, ওরা সেদিকটায় একটা টেবিল রাখবে, এরা হয়ত ঐ কোণে আলমারিট রাখবে,—বাক্স-পেটরা সেই উত্তর দিকের দেয়ালের কাছে রাখবে। সবার রুচি সমান নয় । •••যাবার সময় হয়ে এল। সেই কোন সকালে রাষ্ট্র হয়েছে, কাঞ্চলের তাগাদায় শীগগির শীগগির খেয়ে নিলাম ! আমরা চলে যাচ্ছি,—বাড়ীওয়াল-গিল্পী ওপর থেকে নেমে এল—পূব দিকের ভাড়াটে মিত্তির-জ্যাঠাইম এলেন, তাদের মেয়ের এল—বিন্দু, লক্ষ্মী কল্যাণী । দোতলার রমণীবাবুর স্ত্রী এলেন, তার মেয়ে পুটুও এল । পুটু নাকি বৌদিকে বড় ভালবাসে, তাই দুপুরে না ঘুমিয়ে বৌদ্ধি চলে যাবার আগে দেখতে এসেছে । আরঙ সব অনেক ছোট ছোট ছেলেমেয়ে ভীড় ক'রে দাড়াল । বাড়ীওয়ালী-fগল্পী বললেন, “ত হ'লে চললে ?’ কাঞ্চন জবাব দিলে, 'ইj ম: ' বোয়েরা আধঘোমট, দিয়ে দাড়িয়ে ছিল, চাপা গলাঃ বললে, "রোববারে রোববারে বেড়াতে এস এখানে । পুটু এগিয়ে এসে ফ্রকটা টেনে ধ'রে বললে, "এই এমনি আর একটা আমায়ু ক'রে দিও বৌদি । ‘দোব, নিশ্চয়ই দোব।—কাঞ্চন পুটুকে কোলে তুলে চুমু খেল। কাঞ্চন ছোট ছেলেমেয়েদের জামা বেশ ভাল করতে পারে। এ-বাড়ীর অনেক ছেলেমেয়ের জামা সে তৈরি করে দিয়েছে। ঘরে দাড়িয়ে দেখতে লাগলাম ওদের বিদায়ের পাল । সত্যি, এদের মাঝে কাঞ্চন একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেছিল, ওদের ছেড়ে যেতে নিশ্চয়ই ওর বেদন বোধ হচ্ছে । মিত্তির জ্যাঠাইমা কাঞ্চনের হাতটা ধরে বললেন, ‘মাঝে মাঝে এস বেীমা, বুঝলে –চোখদুটাে তার ছল ছল করে ਲੌਂਗ | বাড়ীওয়াল-গিী বললেন, ‘কস্তার কেমন ঐ জেদ, ছুটে টাকা আর কিছুতেই কমাতে পারলেন না। লক্ষ্মীর এখনও বিয়ে হয় নি, তার সঙ্গে কাঞ্চনের মূং