পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ অলখ-ঝেণরণ rSబిషి হৈমন্তী স্বধার কপালের উপর একটি চুম্বন করিল। তাহাদের দুই জনের চোখের জল একত্রে মিশিয়া ঝরিয়া পড়িল । স্বধা আঁচল দিয়া চোথ মুছিয়া বলিল, “রাত শেষ হয়ে এল, তুমি ঘুমোও ভাই, আর আমি কাদব না। আমাদের নিছক হাসির দিন শেষ হয়েছে, এবার জীবনে আঘাতের পালা, পরীক্ষার পাল । তাতে ভেঙে পড়লে চলবে কেন ?” হৈমন্তী বলিল, “কাল মিলিদির বিয়ে, ভুলে গিয়েছিলাম । চোখের জল ফে'লে তার অকল্যাণ করব না। অামার পাগলামিতে তোমাকে মৃদ্ধ কাদালাম।” ( २० ) ' মিলির বিবাহের পর স্বধ; ও হৈমন্ত্রীর সঙ্গে উপলমিথিলদের দেখাশুনা কিছুদিন হয়ত হইবে না, এই জম্ভ তাহারা সকলেই মনে মনে একটু চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছিল। মহেন্দ্র ত মনেব কথা প্রকাশ করিয়াই ফেলিয়াছিল, তপননিথিলও ওই কথাই মনে মনে জপ করিতেছিল । দক্ষিণেশ্বরের বাগানে তোলা বহু পুরাতন একখানা ছবি হইতে একটি মূখ এনলার্জ করাইয়ু তপন আপনার দেরাঞ্জের ভিতর রাখিয়াছিল । দিনে দুই বেলা সেই ছবির উজ্জল চোখ দুটির দিকে তাকাইয়া সে বলিত, "তোমাকে আমার পূজার অর্ঘ্য আজও নিবেদন করতে পারলাম না । জানি ন কত দিনে আমার সে ইচ্ছ। পূর্ণ হবে ।” মিলির বিবাহের দিন ভোরবেলা উঠিয়া তপন ছবিখানি বাহির করিয়াছিল । একটু বেলা হইলেই আজ ও-বাড়ী যাইতে হইবে । তাহার আগে নিরিবিলিতে সে ছবিখানি একবার দেখিয়া লইতেছিল । চাহিয়া চাহিয় তাহার চোখের তৃষ্ণ মিটিতেছিল না। তপন বলিল, “তুমি এতই স্বন্দর ৰে তোমার চেয়ে স্বন্দর পৃথিবীতে কিছু আছে কিনা এটা ভাববার অবসর কি ইচ্ছাও আমার হয় না।” হঠাৎ দরজার পিছনে কাহার পদধ্বনি শুনিয়া উপন চম্স্কাইয়া উঠিল। ফিরিয়া দেখিল, সহান্ত মুখে নিখিল দtড়াইয়া। তপন ছবিখানি উণ্টাইম্বা আবার দেরাঞ্জের fভতর রাখিল । নিখিল বলিল, “কার ছবি দেখছিলে দেখি না ?” তপন একটু মৃদু হাসিয়া বলিল, “নাই বা দেখলে! ন৷ দেখলে কিছু ক্ষতি হবে না।” নিখিল বলিল, “তথাস্তু। তবে ভোরবেলা যা মনে ক’রে তোমার বাড়ী এসেছিলাম তা সত্যিই প্রমাণ হ’ল । ‘হেড ওভার ইয়াস ইন লভ, কি বল ?” তপন শুধু হাসিল। নিখিল বলিল, “যৌবনের ধৰ্ম্ম, তার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া শক্ত । আমিও ষে পেয়েছি তা বলতে পারি না, তবে ঠিক তোমাদের মত নয় ।” তপন বেশী কৌতুহল না দেখাইয়া বলিল, “নানা রকম হওয়াই ত জগতের নিয়ম। সব যদি এক রকম হ’ত তাহ’লে পৃথিবীতে কোনও নূতনত্ব থাকত না।” নিখিল বলিল, “আমার ওই দুটি মেয়েকেই ভারী চমৎকার লাগে । কোন দিকে যে মন দেব তা বুঝতে পারি না । তবে আমি জানি, মনটা স্থির করতে পারলে আমার মধ্যে একনিষ্ঠতার অভাব হবে না। যদি একান্তই কাউকেই না পাই, তা হ’লেও আমি বিবাগী হয়ে বেরিয়ে যাব না। নিজের অদৃষ্ট্রলিপিতে সম্ভই থাকতে আমি জানি। ভা ছাড়া ষাকে একান্ত নিজের ক'রে চাওয়া বায়ু তাকে তেমন ক’রে না পেলেও আজীবন বন্ধুত্ব রক্ষা ক’রে যাওয়ার একটা সৌন্দর্ধ্য আছে। আমার সম্পত্তি সে হ’ল না ব'লে তাকে একেবারে ভুলতে চেষ্টা কেন করব ? ' তপন বলিল, “ভুলতে না চাও ভুলো না ; তবে মানুষ যেখানে দুরন্ত আগ্রহে কাউকে চায়, সেখানে না পেলে অধিকাংশ মানুষই বন্ধুত্বের সীমার মধ্যে নিজের মনকে স্বাভাবিক ভাবে প্রথম প্রথম শান্ত ক’রে রাখতে পারে না । তাই একেবারে পলায়নের পথ তার ধরে । যার নিজেকে নিজের হাতের মুঠির ভিতর রাখবার ক্ষমতা আছে তার বন্ধুকে সম্পূর্ণ পর করে দেবার প্রয়োজন হয় না।” নিখিল বিছানার উপর বসিয়া পড়িয়া বলিল, “আচ্ছ, তবে ভাই হবে। এস, তোমার সঙ্গে একটা সৰ্ত্ত করা ধাক্ । বেশী ভূমিকা করব না, আমি জানি তুমি আর মহেন্দ্র দু-জনেই হৈমন্তীকে ভালবাস । হৈমষ্টীর মত মেয়েকে সকলেই ষে চাইবে তাতে আশ্চর্ধ্য হবার কিছু নেই। কিন্তু হধরি মধ্যে যে ঝরণার জলের মত একটা ফ্রেশনেস' আর নির্মলতা