পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রীৰণ ما في কাব্য-বিচারের নিকৰ-পাথর eవs সন্ধ্যায় পিছনের আত্ম-কানন কিঞ্জীরবে মুখরিত হয়ে উঠেছে আর পল্লবে পল্লবে বাজছে বৃষ্টি-পড়ার স্বমধুর ধ্বনি। ধেয়ে চলে আসে বাঞ্চলের ধারা নবীন ধাঙ্ক স্কুলে ভুলে সারা, কুলায়ে কঁাপিছে কাতর কপোত দাদুরী ডকিছে সঘনে, গুরু গুরু মেধ গুমরি গুমরি গরজে গগলে গগনে । এ কেবল কথা দিয়ে কথার মাল গাথা নয় । এখানে শব্দের মোহিনী শক্তির বিদ্যুৎ-স্পর্শে বর্ষার প্রকৃতি জীবন্ত হয়ে উঠেছে আমাদের চোখের সামনে । ধ্বনির পর ধ্বনি আমাদের মৰ্ম্মে যেমন প্রবেশ করতে লাগল, ছবির পর ছবিও তেমনি মনের মধ্যে আঁকা হয়ে গেল। কবিতার চরণগুলি পড়বার সঙ্গে সঙ্গে আমরা স্পষ্ট যেন দেখতে পাষ্ট, মেঘাচ্ছন্ন আকাশের নীচে পড়ে আছে দিগন্তব্যাপী শ্যামল প্রাষ্টর ; শূন্ত থেকে পুথিবীতে নামছে বৃষ্টির ধারা আর সেই বৃষ্টিধারী প্রান্তরের উপর দিয়ে ছুটে আসছে দুরের গাছপালাগুলিকে অস্পষ্টতায় ঢেকে দিয়ে ; সঙ্গে সঙ্গে মাঠে মাঠে সবুজ ধানের মৃত্য হয়েছে স্বর, মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে তাদের নাচের আর বিরাম নেই । চোখ যখন এই দৃশ্ব দেখছে, কান তথন শুনছে শ্রাবণ-মেঘের গুরু-গুরু ধ্বনি এবং তার সঙ্গে দাদুরীর ডাক । 'পলাতকা'য় কালে মেয়ে মন্দরাণীর কুমারী-হৃদয়ের সৌন্দধ্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে কবি লিখেছেন—- আমি ধে ওর হৃদয়খনি চাখের পরে স্পষ্ট দেখি আঁকা ;-- ও যেন যুঁই ফুলের বাগান সন্ধ্যা-ছায়ায় ঢাকা ; একটুখানি চাদের রখা কৃষ্ণপক্ষে স্তৰ নিশীথ রাতে কালে জলের গহম কিনায়াতে । লাজুক ভৗঞ্চ ঋণাখনি ঝিরি ঝার কালোপাথর বয়ে বেয়ে লুকিয়ে ঝরে ধীরে ধীরে । রাতঞ্জাগ এক পাখী, মৃদুকরুণ কাকুতি তা'র তারার মাঝে মিলায় থাকি থাকি । ও যেন কানু ভোরের স্বপন কান্নাভয়, ঘনঘুমের নীলাঞ্চলের স্বাধন দিয়ে ধরা। একটি কালে মেয়ের লাজুক ভীরু অকলঙ্ক মনের ছবি অঁাকতে গিয়ে এই যে উপমার পর উপমার ঐশ্বধ্য—এই ঐশ্বর্ষ্যের মধ্যে নন্দরাণী চিরন্তন হয়ে রইল পাঠকের মনে । রবীন্দ্রনাথের দরদী মনের বিপুল স্নেহের অধিকারিণী هو مسسبع م * নম্মরাগী অসংখ্য পাঠক-পাঠিকার চিত্তেও এমন একটি স্থান অধিকার করে বস্ল ষা কোন কালেই হারাবার নয়। একেই বলে কথার স্বাদু, একেই বলে শব্দের ইন্দ্ৰজাল রচনা । উপরের কথাগুলিকে জঙ্ক রকম ক’রে বললে দাড়ায় এই—আমাদের চোখের সামনে বিশ্বের বিপুল জীবন দিবানিশি তরঙ্গিত হচ্ছে বিচিত্র মূৰ্ত্তি নিয়ে। এই বিচিত্র রূপ সকলের মনকে সমানভাবে নাড়া দেয় না, কারণ দেখবার ক্ষমতা ত সকলের সমান নয় । কেউ দেখে কেবল বাহিরের চোখ দুটি দিয়ে ; তাদের দেখা হ'ল ভাসী-ভাসা । আবার কেউ বা দেখে সমস্ত অন্তর দিয়ে, সমস্ত সত্তা দিয়ে । ধারা সমস্ত অস্তর দিয়ে দেখতে পারে তাদেরই দৃষ্টি হ'ল কবির দৃষ্টি । তাদেরই অভিজ্ঞতা কথার যাদুকে আশ্রয় ক’রে কবিতায় কুস্থমিত হয়ে ওঠে । মনের সঙ্গে মনের তফাৎ ত আর কোথাও নয়, সে তফাৎ শুধু দেখবার ক্ষমতার মধ্যে। কবিদের মন এমন উপাদানে তৈরি যে সেই মন যাকেই দেখুক না কেন, তাকে অবলোকন করে অসীম কৌতুহল নিয়ে । আকাশের তারা খেকে আরম্ভ ক’রে সকলের অনাদৃত ‘ছেলেটা" পর্য্যস্ত কেউ সেই মনের কাছে তুচ্ছ নয় । এই প্রসঙ্গে পাঠককে স্মরণ করতে বলি "পুনশ্চ’ গ্রন্থের "ছেলেটা’র ছবি । ভাঙা বেড়ার ধারে আগাছার মত পঞ্জের ঘরে মাতুষ সে । কুল পাড়তে গিয়ে হাত ভাঙে, রথ দেখতে গিয়ে হারিয়ে যায়, মার থায় দমাদম, ছাড়া পেলেই আবার দেয় দৌড় ; বল্পীদের ফলের বাগানে চুরি করে খায় জাম, পাকড়াশিদের কাচ-পরানো চোং নিয়ে আসে না ব’লে, ইস্কুলে যায় পকেটে নিয়ে কাঠবিড়ালী, হেলে সাপ রাখে মাষ্টারের ভেঙ্গে, কোলা ব্যাঙ আর গুবরে পোকা পোষে সযত্নে, সিধু গম্বুলানির গরুর দড়ি দেয় কেটে। চুরি করে ইাড়ি খেতে গিয়ে পোষা কুকুরটার যখন দেহান্তর ঘটল তথন অকস্মাৎ আমাদের দৃষ্টির সামনে প্রতিভাত হ'ল এই মাতৃহীন অশাস্তু ছেলেটার অন্তরের মাধুৰ্য্য। কুকুরের শোকে দু-দিন সে লুকিয়ে লুকিয়ে কেঁদে ফিরল, মুখে তার অন্নজল কুচল না। বীদের বাগানে পাকা করমচা চুরি করতেওঁ সে বিন্দুমাত্র উৎসাহ অনুভব করল না । পাড়াগায়ের একটি মাতৃহীন অশাস্তু বালকের সমস্ত দুরন্তপনার মধ্যে যে-সৃষ্টি