পাতা:প্রবাসী (সপ্তত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাড়া 电感热 বিশ-পচিশ বছর পরে যেদিন এই দাসত্বের অবসান ঘটিবে সেদিন এই বাড়ীটিকে তিনি নূতন করিয়া গড়িবেন । ইহার অস্থিতে এবং মঙ্গায় যে স্থবিরত্বের ছাপ লাগিয়া অাছে তাহা ঘুচাইতে হইবে । সামনের দিকে একটা গাড়ী-বারান্দা বাহির করিতে হইবে, উপরে ঘর তুলিতে হইবে আরও দুই-তিনখানি। ঘরগুলির সামনে পড়িবে গাড়ী-বারান্দার ছাদ । সেই ছাদের উপর লতায় পাতায় এবং ফুলে স্বিপ্ত একটি বাগান তাহাকে গড়িয়া তুলিতে হইবে । ছাদের মাঝখানে পড়িবে গোটা-কয়েক শাদা বেতের চেয়ার। বন্ধুর আসিয়া সেখানে জুটলা করিবে। ছেলেরা ফুল লইয়া করিবে কাড়াকড়ি । হরিচরণু বাবু প্রশাস্ত ঔদার্ষো তাহামের দুরন্তপনা ক্ষমা করিয়া যাইবেন । কিন্তু ত্রিশ বংসব পরে সত্যই যেদিন চাহার কৰ্ম্মজীবনের উপর যবনিকা পড়িল, সেদিন সে-কল্পনাকে তিনি মনের মধ্যে খুজিয়া পাইলেন না। এত কাল রঙ্গাস কোম্পানী যেন তাহার এবং হাঃ। এই বাড়ীর মধ্যে প্রকাও একট। আড়াল হইয়া ছিল। সে আড়াল ঘুচিয়া যাইতে হরিচরণ বাবু চারি দিকে ভাল করিয়ু চাহিবার সময় খুজিয়া পাইলেন বটে, কিন্তু চোথের দৃষ্টি তখন এক রকম হইয়া গিয়াছে ! সংসারের ছোটখাট কতকগুলি দায়িত্ব এতকাল হরিচরণ বাবুকে বহন করিতে হয় নাই ; যেমন ধোপা, নাপিত, দৈনিক বাজার-খরচ—ইভ্যাদি । এখন সেগুলি একে একে তাহার ঘাড়ে আসিয়া পড়িতে লাগিল। আগে টাক দিয়াই তিনি নিস্কৃতি পাইতেন, এখন কোন ছেলেটার ক-থান কাপড় বুজকালয়ে গেল সে হিসাব পর্ষ্যস্ত র্তাহারই হাতে আসিয়া পড়িল । ছোট মেয়েট হয়ত সবে জর হইতে উঠিয়াছে, তাহার জন্য স্থজির রুটি এবং সিউী মাছের ঝোলের ব্যবস্থা পৰ্য্যন্ত তাহাকে করিয়া দিতে হইবে । সত্যবালা বলিলেন, বাচলাম বাপু এত দিনে, নিজের সংসারের ভার এইবার নিজের হাতে নাও। হরিচরণ বাবু কেবল মুখ তুলিয়া গৃহিণীর দিকে চাহিলেন। সত্যবালার সমস্তের দুই পাশের চুলে শুভ্রতার আভাস। চোখের কোণে কালি পড়িয়াছে। মুখে ক্লান্তির ছায়া। অনেক দিন, অনেক দিন হরিচরণ বাবু ভাল করিয়া এই মুখখানির দিকে চাহিয়া দেখেন নাই। কিন্তু সেদিন চাহিতে গিয়া উাহার মনে হইল, কুড়ি বৎসর - আগের সেই নব-পরিণীত মেয়েটি যেন কৰে মরিয়া গিাছে । সংসারের চাকা ঘুরাইতে যুৱাইতে র্তাহার নিকট হইতে সে বুঝি সরিয়া গিয়াছে বহুদূরে । কাছে টানিয়া তাহার নাগাল পাওয়া যাইবে না । চারি দিকে তাহার ছেলেমেয়েদের ভিড়, ঝি-চাকরের ভিড়, প্রতিদিনের প্রয়োজনের ভিড় । অবকাশকে অন্তরঞ্জিত করিয়া তুলিবার ক্ষমতা আর তাহার নাই । এখন অবসরবেঙ্গয় সম্ভাবtল তাহার নিকট বঙ্কিমের নভেলের কোন কঠিন-অংশের ব্যাখ্যা শুনিতে আসিবে ন এবং শুনিতে আসিলেও ব্যাখ্যা করিবার মত উৎসাহ এবং আবেগ তিনি খুজিয়া পাইবেন না। অবসর পাইলে সত্যবালা তত্ত্ব পাশের বাড়ীতে গিয়া মুন্সেফ-গৃহিণীর পুত্রবধুর এত দিনেও সন্তান হইল নী কেন, সে-সম্বন্ধে আলোচনা করিয়া সময় কাটাইতে পরিবে। কিন্তু তিনি ? ছেলেদের মুথের দিকে চাহিয়া এ-কথা তাহার এক দিনও মনে হইল না ষে তাহাদেব জীবনে তাঙ্গার কোন প্রয়োজন ছিল । বড়ছেলেট গোটা দুই টিউশনি করে এবং সন্ধ্যার সময় বি-কম পড়িতে যায়। সমস্ত দিনের মধো ঘণ্ট-ছুই তাহার দেখা মেলে । রাত্রিতে যখন পড়িয়া এবং পড়াইয়া বাড়ী ফেরে তখন হরিবাবু শুইয়া পড়িয়াছেন । ঘরের মধ্যে আসিয়া কোন দিন কুশল-প্রশ্ন জিজ্ঞাসার সময়ও তাহার হয় না। আর ছেলেমেয়েগুলির মধ্যে কেউবা স্কুলে যায়, কেউবা কলেজে। সকালে প্রাইভেট টিউটার আসেন। তার পর যে যাহার স্কুল-কলেজে চলিয়া যায়। বিকালে হয় ফুটবল, নয় সিনেমা । মেয়ে ছুটি এবাড়ী ওবাড়ী ঘুরিয়া বেড়ায়। মাস শেষ হইবার মুখে কয়েক দিন উtহার সহিত সময় করিয়া দেখাসাক্ষাৎ করে, নিদিষ্ট দিনে মাহিনী চাই। বই কিনিবার সময় মাঝে মাঝে তাহাদের পিতৃভক্তির পরিচয় একটু মেলে, এই পৰ্য্যন্ত । ছেলেবেল হইতে তাহারা বাবাকে দূর হইতে দেখিয়া আসিয়াছে, তাহারা জানে, বাবা ভীষণ কাজের মানুষ ; কাজের তাগাদ ভিন্ন আকাজের বোঝা লইয়া অপ্রয়োজনে তাহfর কাছে ঘেষিবার সাহস তাহীদের হয় না। সেজঙ্ক তাঁহাদের মা